Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

৩শ’ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মাড়াই মৌসুম শুরু হচ্ছে আজ

মোবারকগঞ্জ সুগার মিল

| প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এস আর পারভেজ, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) থেকে : ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ সুগার মিল ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে। এটি সুগার মিলের ৫১তম আখ মাড়াই মৌসুম। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ এই ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানটি পুঞ্জিভূত ঋণসহ প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ১ ডিসেম্বর শুক্রবার মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হবে। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ আখ মাড়াই মৌসুমে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয় মিলটির। এবার ৯৫ দিনে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৭ হাজার ৭শ’ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এদিকে মিলটির গুদামে অবিক্রিত রয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকার চিনি। ফলে টাকার অভাবে শ্রমিকদের ২ মাসের বকেয়া রয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। এছাড়াও অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের গ্রাজুইটির প্রায় ১৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। মোবারকগঞ্জ সুগার সূত্রে জানা যায়, সুগার মিলটি প্রতিষ্ঠার পর ৫০টি আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন মৌসুম পার করেছে। ২০১৭-১৮ আখ মাড়াই মৌসুম হবে ৫১তম মাড়াই মৌসুম। গত ৫০টি আখ মাড়াই মৌসুমে সুগারমিলটি লাভের মুখ দেখে মাত্র ১৬টি মৌসুমে। যার পরিমান ছিল মাত্র ৩৮ কোটি টাকা। আর ৩৪টি আখ মাড়াই মৌসুমে পুঞ্জিভূত ঋণসহ প্রায় ৩০১ কোটি টাকা দেনা রয়েছে মিলটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোবারকগঞ্জ সুগার মিল এলাকায় আখ চাষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। গত ২০১০-১১ অর্থ বছরে ১২ হাজার একর জমিতে আখ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। কিন্তু অর্জন হয়েছিল মাত্র ৭ হাজার ৪৫৪ একর। ২০১১-১২ মৌসুমে লক্ষমাত্রা ছিল ১২ হাজার একর অর্জি হয় ৭ হাজার ৮শ’ একর। ২০১২-১৩ মৌসুমে ১১ হাজার একর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে অর্জি হয় ৮ হাজার ৫০০ একর। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ১১ হাজার একরের মধ্যে মাত্র ৩ হাজার ৩শ’ ২৬ একর, ২০১৪-২০১৫ মৌসুমে ১০ হাজার একরের মধ্যে মাত্র ৪ হাজার ৮শ’ ৮৩ একর এবং ২০১৫-২০১৬ মৌসুমে ১০ হাজার ৫০০ একরের মধ্যে ৪ হাজার ৯শ’ ৪১ একর আখ রোপন হয়। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ মৌসুমে আখ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার একর। কিন্তু মিল এলাকার কৃষকরা ৬ হাজার ৮০ একর জমিতে আখ রোপন করে। গত ৭টি মাড়াই মৌসুমের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় কোন মৌসুমেই আখ চাষের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়নি।
মিল এলাকা দিন দিন কেন আখ রোপন থেকে সরে আসছে এমন প্রশ্নে কৃষকরা আখের মূল্য কম ও টাকা পরিশোধে গড়িমসি। ঠিকমতো পূর্জি না পাওয়া এবং মাথা ভারি প্রশাসনকে দায়ি করেন।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা প্রতিদিনই আখ চাষের জন্য কৃষকদের সাথে বৈঠক করছেন। তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ইক্ষু বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আখ চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ