জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে শুনানিতে আদালতে হাজির না হওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ বাতিল করে আগামী ৫, ৬ ও ৭ ডিসেম্বর যুক্তিতর্কের জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু হরতালের কারণে তিনি আদালতে যেতে পারেননি। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আদালত সরকারের নির্দেশে এই নজিরবিহীন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ রকম হলে কীভাবে সুবিচার পাওয়া যাবে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতকে জানান, খালেদা জিয়া একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের প্রধান। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। এ সময় আদালত বলেন, আমরা সবাই উপস্থিত হতে পেরেছি। তিনি পারলেন না কেন? দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমরা উনার জন্য অপেক্ষা করেছি। এ সময় আইনজীবী বলেন, আপনি যদি অনুমতি দেন, দুপুর ২টার পর তিনি আদালতে হাজির হবেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন বিপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। এ পর্যায়ে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আগামী ৭ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া জানিয়েছেন, হরতালে নিরাপত্তার কারণে খালেদা জিয়া সময় অনুযায়ী আদালতে হাজির হতে পারেননি। তাই আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ৭ ডিসেম্বর।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকাবস্থায় একই আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। দেশে ফিরেই তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহেই তিনি আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। খালেদার আইনজীবীরা স্থায়ী জামিনের আবেদন করলেও তা মঞ্জুর না করে বিচারক পরবর্তী গতকাল পর্যন্ত জামিন দিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে দিয়ে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতারা বুধবার মানবন্ধনও করেন। মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে সপ্তম দিনের মত বক্তব্য দেয়া কথা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু তিনি নিজে না গিয়ে হরতালে নিরপত্তার কারণ দেখিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে সময়ের আবেদন করেন।