Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেড় শতাধিক ইবতেদায়ি শিক্ষকের মানবেতর জীবন

| প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে মহসিন আলী মনজু : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ৩৩টি ইবতেদায়ি মাদরাসার একাডেমিক স্বীকৃতিসহ পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্র্ধ্বগতির যুগে সীমাহীন আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে থেকেও তারা বছরের পর বছর পাঠদান চালিয়ে আসছেন। কিন্তু বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেড় শতাধিক শিক্ষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালের আগে উপজেলার ৩৬টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা একাডেমিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। তার মধ্যে উপজেলার ছয় ইউনিয়নের ছয়টি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত করে ১৯৯৪ সালে রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে একই পরিপত্রে বেতন-ভাতার জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয়। এর মধ্যে তিনটি মাদরাসার শিক্ষকরা মাসিক ৫০০ টাকা বেতন পেয়ে বর্তমানে দুই হাজার ৩০০ টাকা হারে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। মাদরাসা তিনটি হচ্ছে- উপজেলার শিমুলবাড়ী মিয়াবাড়ী ইবতেদায়ি মাদরাসা, ফুলবাড়ী একরামিয়া ইসলামিয়া ইবতেদায়ি মাদরাসা এবং মধ্য বড়ভিটা মফিজ উদ্দিন ইবতেদায়ি মাদরাসা। আর বাকি ৩৩টি মাদরাসার শিক্ষকরা বিনা বেতনে চাকরি করে আসছেন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সরকারিভাবে উপবৃত্তি ও স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় বিস্কুট দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যগুলোতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান, পাঠদান, পরীক্ষা সবকিছু চললেও নেই শুধু শিক্ষকদের বেতন-ভাতা। তাই অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে পাঠদানসহ সার্বিক কাজকর্ম চালাতে হচ্ছে শিক্ষকদের। এ অবস্থায় বেতন-ভাতা প্রদানে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার ভুক্তভোগী ইবতেদায়ি শিক্ষকরা।
শিমুলবাড়ী যোতিন্দ্র নারায়ণ ইবতেদায়ি মাদরাসার সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, শুরু থেকেই আমরা নিরলসভাবে পাঠদান করে এলেও কর্তৃপক্ষ আমাদের দিকে সুদৃষ্টি দেয়নি। এ সব প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে গিয়ে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আমরা বার্ধক্যে পৌঁছলেও সুখের মুখ দেখলাম না। সচ্ছলতা তো দূরের কথা, ছেলেমেয়ে নিয়ে বেঁচে থাকাই আমাদের দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা ইবতেদায়ি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মুহা. ছদরুজ্জামান জানান, রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ধাপে ধাপে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করে সর্বশেষ জাতীয়করণ করা হয়। কিন্তু একই মানের ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো বঞ্চিত থেকে যায়। এ অবস্থায় পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখতে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুরূপ বেতন-ভাতাসহ জাতীয়করণের জোর দাবি জানাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার অধিকারী জানান, উপজেলার ইবতেদায়ি মাদরাসার সঠিক সংখ্যা আমার জানা নেই। তবে এ বছর ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ