বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুবি সংবাদদাতা : বন্যাদুর্গতদের সাহায্যার্থে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে তাদের বেতন থেকে এক দিনের সমপরিমান অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ভিসিপন্থি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের কথা বলে কোন বাহক বা এ্যাকাউন্ট উল্লেখ না করে বিশাল অংকের টাকা লিখে ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর করেছেন ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফ। এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করে শিক্ষক সমিতি। কোন গ্রাহকের নাম বা এ্যাকাউন্ট উল্লেখ না করে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ খালি চেকে স্বাক্ষর করতে পারেন এ নিয়ে দেখা দিয়ে বিশাল প্রশ্ন।
জানা যায়, বন্যাদূর্গতদের সাহায্যার্থে শিক্ষক সমিতি গত ২০ আগস্ট শিক্ষকদের একদিনের বেতনের টাকা কেটে নেয়ার বিষয়ে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করে। এ আবেদনের বিপরীতে প্রায় এক মাস পরে গত ১৮ সেপ্টেম্বরে শিক্ষকদের বেতনের একদিনের টাকা কাটার বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত জানাবেন উল্লেখ করে ৭৮জন শিক্ষকের স্বাক্ষর সংযুক্ত করে পাল্টা আবেদন করেন ভিসিপন্থী শিক্ষক দুলাল চন্দ্র নন্দী এবং প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। ঐ দিনই আবার তারা একদিনের সমপরিমাণ টাকা কেটে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে প্রদানের জন্য আরেকটি আবেদন করেন। তবে আবেদন দুটির সাথে ৭৮জন শিক্ষকের সংযুক্ত স্বাক্ষর ১৭ জুলাইয়ে নেয়া। আবেদন ১৮ সেপ্টেম্বরের হলে কিভাবে ঐ শিক্ষকদের স্বাক্ষর জুলাই মাসের হয় এমন অসংগতির অভিযোগ শিক্ষক সমিতির। না জানিয়ে এ আবেদন দুটিতে তাদের স্বাক্ষর সংযুক্ত করা হয়েছে বলে কয়েকজন শিক্ষক জানান। সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষকে ঐ আবেদনের অনুলিপি প্রদান করা হয়নি। একে তো শিক্ষকদের এ স্বাক্ষরগুলো দুই মাস আগের তার উপরে অনেকের স্বাক্ষর টিক চিহ্ন দিয়ে পক্ষে, শিক্ষা ছুটিতে এক মত, ফোনে মতামত ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে। এ তালিকার মধ্যে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমানের নাম ও স্বাক্ষর থাকলেও তিনি ঐ স্বাক্ষর করেননি জানিয়ে বলেন, ‘আমি বিষয়টির সাথে এক মত ছিলাম না। আমি আপত্তি করায় আমার টাকা কাটা হয়নি।’ হিসাব ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নাম ও স্বাক্ষর থাকলেও তিনি সাংবাদিকদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ঐ আবেদনের সকল শিক্ষকদের পক্ষে স্বাক্ষর করা প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘যাদের টাকা কাটা হয়ে তারা কেউ তো আপত্তি করছে না।’ পুরাতন স্বাক্ষর দিয়ে কেন তাহলে আবেদন করলেন যেখানে আপনার নিজের স্বাক্ষরও পুরাতন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির কোন সিদ্ধান্তে আমরা একমত নই এমন একটি সিদ্ধান্ত জুলাইয়ে হয়েছিল বলে ঐ স্বাক্ষরই সংযুক্ত করে দেই।’
এদিকে শিক্ষক সমিতির অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ভিসির সহযোগীতায় সঙ্গবদ্ধ জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়স্থ জনতা ব্যাংকের শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল এ্যকাউন্ট (চলিত হিসাব নং-১০১১০০০৮৬৯) থেকে গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের কথা বলে কোন এ্যকাউন্ট বা বাহকের নাম উল্লেখ না করে ৮০ হাজার ৭১ টাকার একটি চেকে (চেক নং: ২৬০৮৫০৭) স্বাক্ষর করেন। ঐ চেকটিতে ভিসির পাশাপাশি অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক কামাল উদ্দিনের স্বাক্ষরও রয়েছে। চেকটির টাকা এখনও উত্তোলন করা হয়নি বলে জানান জনতা ব্যাংক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ব্যবস্থাপক মনির হোসেন। বাহকের নাম খালি রেখে চেকে স্বাক্ষর করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন ব্যাংকের এ কর্মকর্তা কেননা তাতে অপব্যবহারের ভয় থাকে।
একটি চেকে টাকার অংশ বসিয়ে কোন বাহকের নাম না লিখে কিভাবে স্বাক্ষর করলেন এমন প্রশ্নে অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘চেকটি কাকে দেয়া হবে এ ব্যাপরে কোন সিদ্ধান্ত শিক্ষকরা নিতে পারেননি।’
শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের ফলে গত ১৬ অক্টোবর থেকে নিজ কার্যলয়ে আসতে পারছেন না ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আলী আশরাফ। তিনি বাসবভনের অবস্থান করায় মঙ্গলবার বিকালে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিশ্রামে আছেন বলে বাসভবনের এক কর্মচারী জানান। এরপরও একাধিকবার যোগাযোগ হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।