Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আওয়ামী লীগের শাসন নরপশুর শাসন----- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বর্তমান আওয়ামী লীগের শাসনকে নরপশুর শাসন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমানে যে পার্লামেন্ট আছে সেটি বাকশালী পার্লামেন্ট। যেখানে সরকারি বা বিরোধী দল বলতে কিছু নেই। বৈপরিত্য নাই। বিরোধী দল সরকারের সমালোচনা করেনা। গোটা পার্লামেন্ট শেখ হাসিনার অধিনস্ত, চাকর-বাকর। সমস্ত আদালত, পার্লামেন্ট, নির্বাহী বিভাগ সবকিছুর উপরে প্রচন্ড ক্ষমতাশালী বাদশাহে-রাণীতে পরিণত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আদালতেরও প্রধান, পার্লামেন্টেরও প্রধান, নির্বাহী বিভাগেরও প্রধান। এখন তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি স¤্রাট। গতকাল (সোমবার) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের কাফরুল ও ক্যান্টমেন্ট থানার কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় রিজভী বলেন, আমরা এখন অন্ধকারের তমশার মধ্যে পরে আছি। এমন একটি দেশ, যারা সত্য কথা বলে ন্যায়ের কথা বলে, আইনের কথা বলে তারা জেলে যায়। তাদের নামে হাজার-হাজার, শত-শত মিথ্যা মামলা দেয়া হয়। যারা ন্যায়ের কথা, গণতন্ত্রের কথা, বাক স্বাধীনতার কাথা বলে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলে, মানুষের মুক্তভাবে চলাচলের কথা বলে তাদের নিবাস হয় কারাগারে। আর যারা সন্ত্রাসী সাজাপ্রাপ্ত যাদের কারাগারে থাকার কথা সেই সন্ত্রাসীরা, সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের সাথে একই মঞ্চে বক্তব্য রাখে। এটাই হচ্ছে বর্তমান আওয়ামী লীগের শাসন।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করায় সারাদেশে সরকারিভাবে উদযাপন অনুষ্ঠানে আসামীদের উপস্থিতির সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গত দুই দিন আগে ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি উদযাপানের জন্য সারা দেশের প্রশাসনকে জোর জুলুম করা হয়েছে। তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে নিজ নিজ এলাকায় উৎসব করতে। এমনই একটি অনুষ্ঠানে দেখা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মঞ্চে সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য রাখছেন। আজকে সাজাপ্রাপ্ত আসামী, গুন্ডা-পান্ডারা ইউএনও, পুলিশ অফিসারের সাথে একই মঞ্চে বক্তব্য রাখে। আর বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতি বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে হাজিরা দিতে হয়। এই দ্বিচারিত, বৈপরিত্য শেখ হাসিনার শাসনামলেই দেখা যায়। ডাকাতরা আজকে শাসনদন্ড হাতে নিয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী। তারপরও তারা মন্ত্রীত্ব করছে কি নির্লজ্জ। অথচ প্রধান বিচারপতি মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে ষোড়শ সংশোধনী ঘোষণা করলেন। প্রত্যেকটি মানুষ, সুশীল সমাজ, অন্যান্য রাজনৈতিক দল প্রধান বিচারপতির এই রায়কে অভিনন্দিত করেছে। অথচ তার কি পরিণতি হলো?
বিএনপি চেয়ারপারসনের হাজিরার বিষয়ে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় প্রতি বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়ে হাজিরা দিতে হয়। কেন? কারণ তিনি গণতন্ত্রের কথা বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচানের কথা বলেন, অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের কথা বলেন। যে নির্বাচনে ভোটাররা কোন ধরণের শঙ্কা, ভীতি ছাড়াই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন। একথা বলার কারণেই আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতি সপ্তাহে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, আদালতের যে বিচারক তারও কোন ক্ষমতা নাই। প্রধান বিচারপতির পরিণতির পরে সমস্ত আদালত, পার্লামেন্ট, নির্বাহী বিভাগ সবকিছুই সবার উপরে প্রচন্ড ক্ষমতাশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার কথা বিচারকদের শুনতে হবে। না হলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মত পরিণত হবে। আজকে এক ব্যক্তির নিষ্ঠুর দুশাসনের মধ্যে আমরা দিনাতিপাত করছি। এখন এই দুঃশাসন থেকে সুশাসনে, অন্ধকার থেকে আলোর দিকে ফিরে আসতে হলে গণতন্ত্রের রাজকন্যাকে মুক্ত করতে হবে এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। এটা করতে হবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার শুধু অপহরণ, গুম কিংবা বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডই নয়, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, নির্বাচনকে হত্যা করেছে। সেই গণতন্ত্র পুরুদ্ধার, বাক স্বাধীনতা ও ভোটাধিকারের জন্য বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি সংগ্রাম করছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহম্মেদ, মহানগর উত্তর মহিলা দলের সভাপতি পেয়ারা মোস্তফা সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ