পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলনের মুখেই নির্বাচনে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এখন আমাদের সবার আগে যেটা করতে হবে তা হলো, ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, সংগঠন গড়ে তুলতে হবে এবং আন্দোলনের মুখেই নির্বাচনে যেতে হবে এবং সেখানেই আমাদের জয়লাভ করতে হবে। গতকাল (সোমবার) রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে দলের বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে এই আলোচনায় সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ধ্বংসস্তুপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠে। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা, দেশপ্রেম, স্বাধীন থাকবার যে আগ্রহ-আকাক্সক্ষা তাকে কোনো দিন দাবিয়ে রাখা যাবে না। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে যত যুদ্ধ জয় সম্ভব হয়েছে, যত আন্দোলন-সংগ্রাম সফল হয়েছে এর সব কিছুর পেছনে ছিলো একটা ডিসিপলিন ফোর্স। যদি শৃঙ্খলাবদ্ধ না হন, তাহলে কোনো আন্দোলনে বিজয় অর্জন করা যাবে না। আপনাদের সংগঠন তৈরি করতে হবে, ঘরে ঘরে মানুষের কাছে গিয়ে বলতে হবে কোথায় অন্যায়টা হচ্ছে, কেনো আমরা এই কথা বলছি, কেনো এই সরকার জনগণের অজনপ্রিয় সরকার- এসব মানুষকে বলতে হবে। আজকে ৬০/৭০ টাকা চালের দাম, প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে, মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ুন গ্রামে গ্রামে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, মানুষকে সরকারের অন্যায়গুলো বলুন।
একাদশ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা ক্ষমতায় থাকবেন, ডুগডুগি বাজাবেন, আর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন। করে আবার নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাবেন- এই স্বপ্ন দেখছেন আপনারা। আপনারা তো ২০৪১ সাল পর্যন্ত স্বপ্ন দেখে ফেলেছেন। তিনি বলেন, এই সংসদ রেখে কোনো মতেই নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এই সরকারকে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। নির্বাচনকালীন সময়ে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বলেন, সহায়ক সরকার বলেন, তত্ত¡াবধায়ক সরকার বলেন-মূল কথা হচ্ছে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে যারা নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে।
ওবায়দুল কাদেরকে বাস্তববাদী উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাসানুল হক ইনু সাহেব (জাসদ সভাপতি) প্রায়ই বলেন যে, বিএনপির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। হানিফ সাহেব (আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ) বলেন, বিএনপিকে রাজনীতি করতে দেয়া যাবে না। আমাদেরকে রাজনীতি এতো সহজে এদেশ থেকে দূর করা যাবে না। অবশ্য ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন যে, বিএনপিকে অস্বীকার করা যাবে না। এর পেছনে এখনো বহু লোক আছে। কিছুটা বাস্তববাদী এই কারণে তিনি সেই কথা বলেন। আমি কোনো ব্যক্তি নিয়ে কথা বলতে চাই না, কারণ এটা আমার অভ্যাস নয়।
৭২-৭৫ সালের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিহাসের কথা বলেন আপনারা (প্রধানমন্ত্রী)। ৭২-৭৫ সালের ইতিহাস মানুষ ভুলে যাবে না। ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত এদেশে কী করেছেন এটা সবাই জানে। ওই বইগুলো পড়ে দেখুন, বইগুলো সরিয়ে ফেলেছেন আপনারা। তখনও আজকের মতো অবস্থা ছিলো, রাস্তার ধারে গুলিবিদ্ধ ডেডবডি পড়ে থাকতো। তখন আজকের মতোই গুম হয়ে যেতো কেউ খবর দিতে পারতো না। কমিউনিস্ট পার্টির শান্তিসেন, তার স্ত্রী, তার ভাইয়ের বউকে ওই রক্ষী বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়েছিলো, সারা রাত পানি মধ্যে, ঠান্ডার মধ্যে চুবিয়ে রেখেছিলো এবং ২১দিন নির্মম নির্যাতন করেছিলো। সিরাজ সিকদার ভিন্নমত পোষণ করতেন বলে তাকে গ্রেপ্তার করে পেছন দিক থেকে গুলি করে বললেন যে, ক্রসফায়ার। এরকম হাজার হাজার ভিন্নমতের মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে সেই ইতিহাস আমরা ভুলে যাইনি, জনগণ ভুলে যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা ভুলে যাইনি সেদিন আপনাদের দুঃশাসনে, দুর্নীতি-লুটপাটে এক লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা গেছে। ৭২-৭৫ সালে মানুষ হাত তুলে দোয়া করতো কখন এই জালেমের হাত থেকে মুক্তি পাবে। আজ আবারো মানুষ সেই দোয়া করতে শুরু করছে। খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন করতেই সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজার দেয়ার চক্রান্ত করছেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বয়াতি ওবায়দুল কাদের সাহেব। প্রতিদিন উনি কোনো না কোনো গান গাচ্ছেন। উদ্ভট, অদ্ভুত গান গেয়ে যাচ্ছেন। মানুষ শুনছে কি শুনছে না সেই দিকে তার খেয়াল নেই। তিনি বলেছেন, বিএনপি গভীর খাদের কিনারে। আপনারা কী বিশাল ফুল বাগানের কিনারে দাঁড়িয়ে আছেন নাকী। মানে ধাক্কা খেয়ে পড়লে পরে ওই কিনার থেকে হাস্না হেনা, চামেলী, গোলাম, বেলী, চন্দ্র মল্লিকার মধ্যে পড়ে যাবেন। আপনারা এমন একটি কিনারে দাঁড়িয়ে আছেন, শুধু ছোট্ট একটা ধাক্কা খেলেই সিটি করপোরেশনের ডাস্টভিনের মধ্যে পড়ে যাবেন- এটা মনে রাখবেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। ক্ষমতার জোর, পুলিশের জোর, র্যাবের জোর। এই জোরাজুরি দিয়ে নিজেকে খুবই ক্ষমতাবান মনে করছেন। কিন্তু পায়ের তল থেকে পলি মাটি, লাল মাটি সব মাটি সরে গেছে। এখন চোরাবালির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। ডাল ভেঙে যখন পা-হাতটা ছুটে যাবে তখন একেবারে অতলে চলে যাবেন।
মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু‘র সভাপতিত্বে আলোচনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ মহানগর উত্তরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।