Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্যহাতির কারণে পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা

রাঙ্গুনিয়া পাহারারত অবস্থায় একজনের মৃত্যু

| প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চেীধুরী : চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বেপরোয়া বন্যহাতির কারণে হাজার হাজার কৃষকের পাকা ধান ঘরে তোলা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দিনরাত পাহাড়া বসিয়ে বন্যহাতি থেকে ধানক্ষেত রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে কৃষকরা। গত বুধবার রাতে কোঁদালা পাহাড়ে খামার বাড়িতে বন্যহাতির আক্রমণে সোনা মিয়া (৪৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বাড়ি কোঁদালা কাঁঠালতলী গ্রামে। রাঙ্গুনিয়ার কোঁদালা, শিলক, পদুয়া, সরফভাটা ও চন্দ্রঘোনা রাইখালী, ডংনালা, পূর্ব কোদালা এলাকায় প্রায় অর্ধশত বিলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। প্রায় ক্ষেতে আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। পাকা ধানের ঘ্রানে ছুটে আসছে বন্যহাতি। রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে কয়েকটি ইউনিয়নে কৃষকেরা বিলের ক্ষেতের ফসল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। হাতির তাÐব থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন কৃষক। রাত জেগে পাহাড়া, বৈদ্যুতিক বাতি জ্বেলে আলো ছড়ানো, বৈদ্যুতিক তারে ক্ষেত ঘেরা এবং ফটকা ফাটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন কৃষকেরা। বন্যহাতির উৎপাত বন্ধে বন বিভাগের তেমন কোনো উল্লখ্যযোগ্য ভ‚মিকা নেই বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। উপজেলার শিলক ইউনিয়নের তৈলিয়াভাঙ্গা বিল, পদুয়া ইউনিয়নের খুরুশিয়া বিল, কোঁদালা ইউনিয়নের ধোপাঘাট, চা-বাগান এলাকা, রাইখালী কোঁদালা বিলে রাতের বেলায় বন্যহাতি নেমে আসে। চন্দ্রঘোনা রাইখালী, হাতিমারা, খন্দাকাটা, ডংনালা বিলে হাতির তাÐব থেকে ক্ষেতের পাকা ধান রক্ষা করতে রাতের বেলায় কৃষকরা পালাবদল করে পাহারা বসিয়েছেন। কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে ধান ক্ষেতে বন্যহাতির উৎপাত বেড়ে গেছে। বেপরোয়া বন্যহাতি ক্ষেতের পাকা ধান খেয়ে এবং পায়ে পিষিয়ে সাবাড় করে ফেলছে। চাষাবাদে ফসল ঘরে তোলার নিশ্চয়তা থাকে না। বিলে ধান খাওয়া শেষ হলে হাতির পাল লোকালয়েও হানা দিতে শুরু করে। এ বছর বিলের কৃষকেরা পাহাড়া দিয়ে তাড়াহুড়া করে ক্ষেতের পাকা ধান গোলায় তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কৃষক। শিলক গ্রামের কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বন্যহাতি পালটি দিনের বেলায় বিলের আশপাশে পাহাড়ে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পর থেকে একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে ধান ক্ষেতে নামে। কোঁদালা ইউপি চেয়ারম্যান অবদুুল কায়উম তালুকদার জানান, স্থানীয়ভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থায় বন্যহাতির উৎপাত বন্ধ হচ্ছে না। ফসলের মাঠ ছাড়াও হাতি লোকালয়েও হানা দিচ্ছে। হাতির উৎপাতে অসংখ্য কৃষকের প্রাণহানিসহ কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। বন্যহাতির উৎপাত বন্ধে বন বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহলাদ রায় বলেন, বনাঞ্চলে স্বাভাবিক পরিবেশ বিপন্ন। বন্যহাতি ছুটে আসছে লোকালয়ে। প্রতিরোধের বিভাগীয় তেমন কৌশল ব্যবস্থা নেই। কৃষক হত্যার বিষয়ে জানতে কোঁদালা বন বিট কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। লোকালয়ে বন্যহাতির হত্যাকাÐ হলে নিহত কৃষকের পরিবারে ক্ষতিপূরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ