রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
নাটোর জেলা সংবাদদাতা : নাটোর শহরের বহু প্রতিক্ষিত ডিভাইডার-ড্রেনসহ প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়েছে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজের মধ্যে রয়েছে হরিশপুর বাইপাস থেকে বনবেলঘরিয়া বাইপাস পর্যন্ত ডিভাইডার, ড্রেন এবং ফুটপাথ নির্মাণ। এর মধ্যে শহরের স্টেশন বাজার এলাকার প্রধান সড়কটির দুই পাশের সড়ক ও জনপথের অধিকৃত জায়গা পুনদর্খল করে চার ফিট প্রশস্ত ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এই কাজে উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধ দখলদারদের সওজের জায়গা ছাড় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিরুদ্ধে।
গত ৬ অক্টোবরে শহরের বনবেলঘরিয়া বাইপাসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে এই সড়কের কাজের উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে সড়কের জায়গা গুলো পুণর্দখলের কাজ শুরু হয়। প্রথম দিকে জোরেশোরে নিয়মমাফিক পুণর্দখল করলেও পরবর্তীতে স্বজনপ্রীতি বা আঁতাত করার অভিযোগ ওঠে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথের উপর।
আলাইপুর এলাকার স্থানীয় অধিবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আমিনুল হক, মুকুল, বিপ্লব ও ডাবলুর অভিযোগ সড়ক ও জনপথের ভ‚মি জরিপকারী রাস্তার মাপ অতিরিক্ত দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের জমির অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। অতীত থেকেই তারা সিএনবির খুঁটি অনুযায়ী বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও দোকান নির্মাণ করেছেন। তবুও এই মাপে তার জমির অংশের চার ফুট ভেতরে সড়কের অংশ দেখানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তার উত্তর পাশের অনেক জমির মালিক সড়কের জায়গার উপর বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। তাদের বাড়ির দেয়ালে সড়ক ও জনপথের জরিপে পাওয়া অংশে লাল দাগ দেয়া সত্তে¡ও তারা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার সাথে আঁতাত করে সড়কের জায়গার উপরের নির্মিত বাড়ির অংশ ভাঙছেন না। আবার কেউ কেউ সওজের জরিপে সীমানা বরাবর নির্দেশিত লাল দাগ মুছে ফেলছেন। এতে করে যারা সড়কের নিয়মনীতি মেনে বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন তাদের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে যে, একই কাজে সড়ক বিভাগের বৈষম্য নীতি কেন। আবার তারা বলছেন, যদি অবৈধ দখলকারীরা টাকার বিনিময়ে প্রভাব খাটিয়ে সড়কের জায়গা দখলে রাখে তবে তারাও তো রাস্তার জায়গা দখলে নেয়ার দাবিদার। এভাবে যদি সড়কের কোনো কোনো অংশের অবৈধ দখলকারীদের স্থাপনা নিয়ম নীতি অনুযায়ী না সরানো হয় তবে সড়ক সম্প্রসারণ কাজের লক্ষ্য ব্যাহত হবে।
তবে এই অভিযোগকে অস্বীকার করে একে অপপ্রচার বলে উল্ল্যেখ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথের নির্বাহি প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন সওজের রাস্তার উপরে যে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবৈধ স্থাপনা আছে, তাদেরকে প্রথমে চিঠি দিয়ে দখলকৃত জায়গার স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরও সাত থেকে পনেরো দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হচ্ছে। এরপরও অমান্য করলে প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে। তিনি আরো বলেন, সওজের জমি দখলমুক্ত করার কাজে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ল্যান্ড শাখা, নাটোর পৌরসভা ও সওজের তিনজন সার্ভেয়ার নিযুক্ত আছেন, তাই টাকার বিনিময়ে কোনো অনিয়ম করে কাউকে অনৈতিক সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। তা ছাড়া কোনো কোনো এলাকায় নতুন করে জমি অধিগ্রহণের রিকুইজিশন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের শেষভাগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাটোর সফরকালে শহরবাসীকে দেয়া সাতটি প্রতিশ্রæতির অন্যতম ছিল শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সড়কটির ডিভাইডারসহ প্রশস্তকরণ করা। সেই সূত্রে এডিবির অর্থায়নে নাটোর শহরের হরিশপুর বাইপাস মোড় থেকে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় পর্যন্ত নাটোর শহরের প্রধান সড়কের মিডিয়ানসহ পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় মোট ৫.৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ডিভাইডার ও ড্রেন-ফুটপাথসহ ৪৮ ফুট প্রস্থের সম্প্রসারিত সড়কের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ডিভাইডারের দুইপাশে ১৮ ফুট করে সড়ক প্রশস্তকরণ, চার ফুট করে ড্রেন-ফুটপাথ নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।