Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টেকনাফে আমনের বাম্পার ফলন

| প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান,টেকনাফ থেকে : টেকনাফে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে। এবছর প্রাকৃতিক পরিবেশসহ সবই কৃষকের অনূকুলে থাকায় আগের বছরের চাইতে ফলনও ভাল হয়েছে। ফলন ভাল হওয়াতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ধান উৎপাদন হয়েছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় কৃষক-কৃষাণীরা পাকা ধান কেটে আটি বেঁধে নিয়ে আসছেন। কেউ কেউ মাড়াইয়ের কাজ করছেন। আবার অনেকে কুলা ও ফ্যান দিয়ে ধান পরিস্কারের কাজ করছেন। আবহমান বাংলার কৃষকদের ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর টেকনাফ উপজেলায় ১০ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে। তম্মধ্যে হোয়াইক্যংয়ে ৫ হাজার ৩৮০ হেক্টর, হ্নীলায় ১ হাজার ৬০০ হেক্টর, টেকনাফ সদরে ১ হাজার ৩৫০ হেক্টর, সাবরাংয়ে ১ হাজার হেক্টর, বাহারছড়ায় ১হাজার ৪০০ হেক্টর, পৌরসভায় ৫ হেক্টর ও সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউনিয়নে ৯০ হেক্টরসহ ১০ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমি চাষাবাদের কথা থাকলেও বেড়িবাঁধের ভাঙ্গনে ৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা সম্ভব হয়নি।
টেকনাফ উপজেলায় এবারে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার ৮৯৬ মেট্টিক টন। উৎপাদন ভাল হওয়ায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অর্জিত হয়েছে ৩০ হাজার ২৫৬ মেট্টিক টন চাউল। সাধারণত আষাঢ়-শ্রাবণে কৃষকরা জমিতে চারা রোপন করে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে পাকা ধান কাটে। অন্য মৌসুমের তুলনায় এবছর কার্তিক মাসের শুরুতেই ধান কাটার রীতিমত ধুম পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগের তুলনায় ধানের ফলন ভালই হয়েছে। এবারে তারা ধান ক্ষেতে অতিরিক্ত পার্সিং করায় কম খরচে ধানের ভাল ফলন ঘরে তুলতে পারছেন। পাশাপাশি এ পদ্ধতি অনুসরণ করায় পোকা মাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না হওয়ায় বাড়তি খরচ হয়নি। এতে কৃষকের যেমনি টাকা সাশ্রয় হয়েছে তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় কৃষকরা বেশী ধান হাসিমুখে ঘরে তুলতে পেরেছেন। এবছর হাইব্রিড প্রজাতির এরাইজ গোল্ড জাতের ধান প্রতি ৪০ শতক জমিতে ১০০ আড়ি (১৪ কেজিতে ১ আড়ি)।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শফিউল আলম কুতুবী জানান কৃষকরা জমিতে পার্সিং পদ্ধতি করাতে ফলন বেশী হয়েছে। কৃষি উদ্ভাবনীয় আধুনিক পদ্ধতিতে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। অন্যদিকে বিষ প্রয়োগ না করায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হয়েছে। তাছাড়া কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী মৌসুম থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষের মাধ্যমে ফলন আরো বেশী বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন ‘চলতি সনে সারের সংকট না থাকায় কৃষকরা সুষম সারের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে জমিতে সার প্রয়োগ, আবহাওয়া অনুকূল, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় আলোক ফাঁদ, পার্সিং ও লাইনিং পদ্ধতি কৃষকরা অনুসরণ করাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী ফলন হয়েছে। আগামীতে কৃষকদের মাঝে আরো বেশী আলোক ফাঁদ, পার্সিং, লাইনিংসহ বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি অনুসরণ নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ