Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব নিয়েই মিয়ানমারে থাকবে

উখিয়ায় ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণকালে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ

| প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী-২ নং ক্যাম্প পরিদর্শন করে সেখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। এসময় প্রেসিডেন্ট বলেছেন, নিরাপত্তা ও নাগরিত্ব নিশ্চিত করেই তাদের মিয়ানমারে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে। আরাকানে (রাখাইনে) রোহিঙ্গারা নাগরিত্ব নিয়েই মর্যাদার সাথে থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গতকাল রোববার বিকেল ৪ টায় প্রেসিডেন্ট বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি দেখেন এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। এসময় আবার মিয়ানমারে ফিরে গেলে পরিবারের মৃত বা আহত সদস্যদের মত নির্যাতনের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কার কথা প্রেসিডেন্টর কাছে তুলে ধরেন রোহিঙ্গারা।
প্রেসিডেন্ট মোঃ আব্দুল হামিদ রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কেবল বাংলাদেশ না, সমগ্র বিশ্ব রোহিঙ্গাদের পাশে আছে। আপনারা যাতে সম্মানের সঙ্গে ফেরত যেতে পারেন এবং নিরাপত্তার সঙ্গে নিজ দেশে বসবাস করতে পারেন, তা নিশ্চিত করে আপনাদের ফেরত পাঠানো হবে।”
ত্রাণ বিতরণ শেষে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশের জন্য এই রোহিঙ্গারা একটা বোঝা। কিন্তু মানবিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে। সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।“এখন চুক্তি হয়েছে, তারা যাতে নিজ দেশে সম্মানের সাথে ফিরতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হবে। কারণ এখানে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে।”
বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ৪ লাখের মত রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়ে আছে। আর গত ২৫ অগাস্ট আরাকানে (রাখাইনে) সেনা-পুলিশ নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর আরও ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। তাদের ফেরার পথ তৈরি করতে গত বৃহস্পতিবার নেপিডোতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে একটি সম্মতিপত্রে (অ্যারেঞ্জমেন্ট) সই করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করে দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা এবং এজন্য যত দ্রুত সম্ভব একটি সুনিদিষ্ট চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে সম্মতিপত্রে। এই চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে কতটা আশাবাদী- এ প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট হামিদ বলেন, “আলোচনাতো শুরু হল। আলোচনা হলে ইমপ্রুভমেন্ট হবে।”আরবের হুদায়বিয়া চুক্তির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ওই চুক্তি শুরুতে অপমানজনক মনে হলেও পরে সেটা ‘উপকারী’ হয়েছিল। তিনি বলেন, “তারা আত্মমর্যাদা নিয়ে নিজ দেশে ফিরতে পারবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশের সাথে আছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন কেন্দ্র ও সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত চিকিৎসা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন হোসেন চৌধুরী মায়া এ সময় প্রেসিডেন্ট র সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি ও ত্রাণ কার্যক্রমের সার্বিক বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন।
এসময় অঅরো ছিলেন, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদসহ সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ