পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আমদানি-রপ্তানিকারদের ভোগান্তি কমাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন থেকে শুল্ক বিভাগের (কাষ্টমস) এখতিয়ারভ‚ক্ত কোনও এলাকা বা স্থাপনায় যেকোনও ধরনের চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালাতে পুলিশ ও বিজিবিকে বিদ্যমান আইনের কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে। এই শর্ত লঙ্ঘন করে সরকারি এই দুটি সংস্থা শুল্ক বিভাগের (কাষ্টমস) কোনও এখতিয়ারভূক্ত এলাকায় চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালাতে পারবে না। এ ব্যাপারে কাস্টমস আইনের বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন ৬ (১) ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জনস্বার্থে ওই শর্ত আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। একই সঙ্গে শর্ত ও সীমা আরোপ সাপেক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের উপ পরিদর্শকের নিচে নয় এমন কর্মকর্তাদের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে কাস্টমস অ্যাক্ট এর সেকশন ১৫৮, ১৫৯,১৬০, ১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৮ এবং ১৭১ এর ক্ষমতা অর্পন করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন ৬ (২) এর বিধান অনুসারে কাস্টমস বন্দর/বিমানবন্দর/স্থল কাস্টমস স্টেশন/ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো/ইনল্যান্ড ওয়াটার কন্টেইনার টার্মিনাল/কাস্টমস এলাকার অভ্যন্তরে পুলিশ এবং বিজিবির চোরাচালান অভিযান প্রযোজ্য হবে না। প্রজ্ঞাপনে দ্বিতীয় শর্তে বলা হয়েছে, প্রদত্ত ক্ষমতার অধীনে পণ্য আটকের ক্ষেত্রে আইনের সেকশন ১৬৯ এর বিধান মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
কাস্টমস অ্যাক্ট এর ১৬৯ এ বলা হয়েছে, বাজেয়াপ্ত যোগ্য হবার কারণে আটককৃত সকল পণ্য অযথা বিলম্ব করে তা ক্ষমতাপ্রাপ্ত শুল্ক কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে হবে। তবে এমন কর্মকর্তা না পাওয়া গেলে আটককৃত বস্তু আটক স্থানের কাছের শুল্ক ভবনে জমা দিতে হবে। সুবিধাজনক দূরত্বের মধ্যে শুল্কভবন না থাকলে শুল্ক কমিশনার ওই পণ্য জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত স্থানে জমা দিতে হবে। শুল্ক কমিশনার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন শুল্ক কর্মকর্তা যদি মনে করেন উক্ত দ্রব্য দ্রুত পচনশীল অথবা তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যেতে পারে তাহলে তিনি ২০১ ধারা অনুসারে বিক্রয়ের ব্যবস্থা নিতে পারেন। এবং মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিক্রির টাকা জমা রাখবেন। তবে এক্ষেত্রে পণ্যের নমুনা সংরক্ষণ করে রাখবেন। বিচার শেষ হওয়ার পর যদি দেখা যায় ওই পণ্য বাজেয়াপ্ত হওয়ার যোগ্য ছিল না তবে কর, শুল্ক-কর অথবা ২০১ ধারার বিধান অনুসারে আবশ্যকীয় পওনা সমন্বয় করে বাকি টাকা মালিককে ফেরত দিতে হবে।
উপরের ধারাসমূহের আওতায় কোন কার্যক্রম পরিচালনার ১৫ দিনের মধ্যে এখতিয়ারভুক্ত কাস্টমস কমিশনারের কাছে ঘটনার পুরো বিবরন সম্বলিত প্রতিবেদন দিতে হবে। এটি পুলিশ ও বিজিবির জন্য প্রযোজ্য। তবে বিজিবির ক্ষেত্রে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্থল সীমানার মধ্যবর্তী ৫ মাইলের মধ্যে এই ক্ষমতা প্রযেজ্য। এর বাইরে এই ক্ষমতা প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট টাক্সফোর্সের সমন্বয়ের পরিচালনা করতে হবে। জানা গেছে,২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট অধিবেশনে গৃহীত অর্থ আইন, ২০১৬ এ কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন ৬ বিভাজন করে দুটি সাব সেকশন তৈরি করা হয়েছিল। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংশোধনের আগে কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন ৬ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ১৯৭৩ (এস.আর.ও. নং-৯৪/ডি-কাস/৭৩, তারিখ-২৩/৩/১৯৭৩ সহ পঠিতব্য এস.আর.ও. নং-১৫৩০/৯৩/শুল্ক তারিখ ১৪/১১/১৯৯৩) এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে চোরাচালান সংক্রান্ত গ্রেফতার ও আটকের ক্ষেত্রে যথাক্রমে বিজিবি (পূর্বের বাংলাদেশ রাইফেলস) ও বাংলাদেশ পুলিশকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে কাস্টমসের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় পুলিশ এবং বিজিবি চোরাচালান বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এতে অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হন আমদানি-রপ্তানিকারক। আবার অনেক সময় জব্দকৃত পণ্য ও দ্রব্য সঠিকভাবে জমা দেয় না। এজন্য এনবিআর সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।