Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে আবহাওয়া স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও তাপমাত্রা দ্রুত নিচে নেমেছে

| প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : অগ্রহায়ণের শুরুতে দূর্বল নিম্নচাপের প্রভাবে হালকা বৃষ্টিপাতের রেশ কাটিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে দক্ষিণের আবহাওয়া। তাপমাত্রার পারদও ক্রমশ নিচে নামছে। অসময়ের বৃষ্টির আতঙ্ক কাটিয়ে অগ্রহায়ণের সাত সকালে ফসল কাটা ধুম লেগেছে দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে। কালজয়ী ঐ গানের কথাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে অগ্রহায়ণের সকালে আমনের ক্ষেতে কাস্তে হাতে কৃষকের ছুটে চলার দৃশ্য। তবে ভাটির দক্ষিণাঞ্চলে আমন পাকছে ধীরে। ফলে ফসল কাটাও হচ্ছে দেশের অন্য এলাকার তুলনায় অনেকটাই বিলম্বেই। এখনো দক্ষিণাঞ্চলের মাঠে প্রায় ৯৫ ভাগ আমন ধান সুবজ থেকে সোনালী রঙ ধারন করছে। অনেক ধান এখনো ফুল ও থোর পর্যায়ে।
স্পর্ষকাতর এসময়ে আবহাওয়ার কোন বিচ্যুতি ঘটলেই ধানে চিটা হবার আশঙ্কা প্রবল। সাথে মাজরাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণেরও সম্ভবনা রয়েছে। শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে যাচ্ছে মেঘনা সহ বিভিন্ন নদ-নদী অববাহিকা ছাড়াও দিগন্ত বিস্তৃত ফসলী জমি। তবে দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ গত সপ্তাহে অতি দ্রæতই কিছুটা বেশী নিচে নেমেছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে নভেম্বরে বরিশালে স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকার কথা ১৮.৮ ও সর্বোচ্চ ২৯.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু গত ১৮ নভেম্বর বরিশালে তাপমাত্রা ২২.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকলেও ২৩ নভেম্বর আকষ্মিকভাবেই তাপমাত্রা ১৪.৩ ডিগ্রীতে হ্রাস পায়। গতকাল সকালে তা ছিল ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে ১২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
গত দু’দিনের আবহাওয়া দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই শীতের বার্তা ছড়িয়েছে। প্রায় সব বয়েসী মানুষকেই সকালে ও রাতে শীতের কাপর পড়েই ঘরের বাইরে যেতে দেখা গেছে। শেষ রাতের হালকা কুয়াশা এখনো দক্ষিণের নৌ যোগাযোগকে খুব একটা ব্যাহত না করলেও সতর্ক শত শত নৌযান কাপ্তান। তবে শুষ্ক মওসুম শুরুর আগেই এবার মেঘনা অববাহিকার নদ-নদীগুলোর পানি দ্রæত হ্রাস পাওয়ায় রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নৌ যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে বার বারই। বরিশালÑচাঁদপুরÑঢাকা নৌপথের মিঞার চর এলাকায় নাব্যতা সঙ্কটে প্রতি রাতেই বিপুল সংখ্যক যাত্রীবাহী নৌযান হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে ভড়া জোয়ারের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নোঙরে থাকছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপ-মাহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বি¯তৃত রয়েছে। অস্থায়ী মেঘলা আকাশ সহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদ-নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা হৃাস ও দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকার কথা বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
গতমাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৬ ভাগ এবং বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের দ্বিগুনেরও বেশী, ১০৪.২% বেশী বৃষ্টিপাতের পরে চলতি মাসে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে গত সপ্তাহে, অগ্রহায়ণের শুরুতে প্রায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। অসময়ের ঐ বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সোয়া ৭ লাখ হেক্টর জমির আমন ফসলকে চরম ঝুঁকিতে ফেলে। পাশাপাশি আমনের সাথী ফসল খেশারী ডালের জন্যও ঐ বর্ষণ যথেষ্ঠ বিপর্যয় ডেকে আনে। চলতি মওসুম দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে খেশারী ডালের আবাদ হয়েছে। যার বেশীরভাগই আমনের সাথী ফসল হিসেবে আবাদ করেছেন কৃষকগণ। কিন্তু গত সপ্তাহের অকাল বর্ষণে আমনের জমিতে পানি জমে যাওয়ায় সাথী ফসল খেশারী ডাল-এর ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ