Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নেত্রকোনায় শিল্পী বারী সিদ্দিকীর দাফন সম্পন্ন

| প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা থেকে : প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী বারী সিদ্দিকী (৬৩) আর নেই। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সোয়া ২টার দিকে আধ্যাত্মিক ও লোক গানের এই প্রথিতযশা শিল্পী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। গত এক সপ্তাহ যাবৎ তিনি স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে তার ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী বলেন, তার বাবা গত দুই বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। গত বছর থেকে সপ্তাহে তিন দিন কিডনির ডায়ালাইসিস করে আসছিলেন। ডায়াবেটিসও ছিল তার। ১৭ নভেম্বর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে দ্রæত তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৮ নভেম্বর থেকে বারী সিদ্দিকীকে লাইফ সাপোর্টে নেন চিকিৎসকরা। বারী সিদ্দিকীর দু’টি কিডনিই অকার্যকর হয়ে পড়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হয় বলে জানান চিকিৎসকরা।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়নের জঙ্গল ফচিকা গ্রামে ১৯৫৪ সালে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহন করেন। বহু বছর ধরে সঙ্গীতের সঙ্গে জড়িত এই গুণী শিল্পী। তবে দেশবাসীর কাছে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পান নেত্রকোনার আরেক কৃতি সন্তান নন্দিত কথা সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বিশিষ্ট নাট্যকার ড. হুমায়ুন আহমেদের সংস্পর্শে এসে। ১৯৯৯ সালে কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিতে ছয়টি গান করেন তিনি, যার প্রতিটিই বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। তার উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘সুয়াচান পাখি, আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘পূবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওগো ভাবী জান নাউ বাওয়া মর্দ লোকের কাম’ এবং ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো শুন বলিরে পাগল মন’।
এ সবের বাইরেও তিনি কয়েকটি সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন। তার গাওয়া গান নিয়ে বের হয়েছে অডিও অ্যালবাম। নিয়মিত গান করেছেন টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ও গানের আসরে। এসব আসর ছিল ব্যাপক দর্শক-শ্রোতা নন্দিত।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়েসহ বহু আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে যান। তার মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে অগনিত ভক্ত শ্রোতা দর্শকদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। তার প্রিয় কর্মস্থল বিটিভি ভবনে সাড়ে ১০টায় দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। তার মরদেহ নেত্রকোনা সরকারী কলেজ মাঠে নিয়ে আসলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার দর্শক শ্রোতা ভক্তবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বাদ আসর সেখানেই তার তৃতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের কারলী গ্রামে নিজে হাতে গড়া বাউল বাড়ীতে নিয়ে গেলে সেখানে চতুর্থদফা জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ