Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তালগাছের মতোই লাগানো উচিত খেজুর গাছ

| প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এমদাদুল হক সুমন, নওগাঁ থেকে : বৈচিত্র্যপূর্ণ ছয় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক এক রকমের বৈশিষ্ট্য। তেমনি এক ঋতু হেমন্ত। এই ঋতুতেই দেখা মিলে শীতের। এই শীতের সময়ই শুধু পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যেবাহী সুস্বাদু পানীয় খেজুর রস। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে সুস্বাদু এই খেজুর গাছের রস খাওয়ার মজাই আলাদা। আর এই শীত মৌসুমের শুরুতেই নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। এখন তাদের দম ফেলার ফুরসত নেই। শীত মৌসুমে প্রতিদিন সকালে গাছিদের খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে দেখা যায়। বর্তমানে এই পেশার ওপর অনেক মানুষ নির্ভরশীল। তবে পূর্বের তুলনায় খেজুর গাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় খেজুর রসের ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। জানা গেছে, এক সময় এলাকায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। এখন খেজুর গাছের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিস্কার করার কাজ করতে হয়। এরপর সাদা অংশ থেকে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়। ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই গাছিদের কোমরে মোটা রশি বেঁধে গাছে ঝুলে খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করতে হয়।
গ্রামের অনেকে শীতের সকালে সুস্বাদু এই খেজুর রস ও খেজুর রসের তৈরি গুড় নেয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। খেজুর রসের তৈরি বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে চালান হচ্ছে জেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। যা দিয়ে তৈরি হয় মুখরোচক খাবার পায়েস ও হরেক রকমের লোভনীয় পিঠা। এটা বাঙালীর হাজার বছরের সংস্কৃতির অংশ। তাই শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার গাছিরা। উপজেলার রাজাপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম, খট্টেশ্বর গ্রামের কালু হোসেন, কাটরাশইন গ্রামের মোতাহার হোসেনসহ আরো অনেক গাছি জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি। বছরের এই ৫ মাস খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকি। রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। তারা আরো জানান বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময় আমাদের এলাকা থেকে খেজুর গাছ হারিয়ে যাবে। এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে সকলের উচিত তালগাছের মতো বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যতœ সহকারে বড় করা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ