Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গফরগাঁওয়ে লেপ বিক্রি বেড়েছে

| প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) থেকে মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ : গফরগাঁও উপজেলার ১৫টি বিভিন্ন ইউনিয়নে ইতিমধ্যেই শীত নামতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে আগমনী সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। সন্ধা থেকে ভোর হতেই কুয়াশা পরিলক্ষিত হয়। গত প্রায় একমাস যাবৎ এ অঞ্চলে আবহাওয়ার যে পরির্বতন তাই মূলতঃ আসন্ন শীতকে স্বাগত জানিয়েছে। দিন দিনে প্রতিনিয়তই কুয়াশার পরিমাণ অনেকটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে তাপমাত্রাও ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে। শীত মৌসুমকে সামনে রেখে এ অঞ্চলে ইতিমধ্যেই নানা ধরনের প্রাক প্রস্ততি চলছে আগাম ধুমধামে। অনেকে শীতের কথা মনে রেখে ইতিমধ্যেই লেপ-তোষক বানানো চিন্তা করছে। কেউবা আবার আগাম অর্ডার দিয়েছে লেপ-তোষক তৈরীর কারিগররাও ক্রমশঃ ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। গফরগাঁও –ভালুকা সড়কের মের্সাস সেন্টু ষ্টোরের মালিক মোঃ সেন্টু জানান , শীত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে লেপ-তোষক বিক্রি বেড়ে গেছে। গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গোটা ৭/৮মাস কর্মহীন থাকায় পর আসন্ন শীত মৌসুম প্রাক্কালেতারাও প্রস্তত হচ্ছে। ১০/১৫দিন পর অবশ্য তাদের ব্যস্ততা আরও বেড়ে যাবে। নিম্নশ্রেণীর লোকজনদের শীত কাটানোর একমাত্র সম্বল হচ্ছে পুরান কাপড় দিয়ে তৈরী হয় গ্রামবাংলার নকশীঁ কাঁথা। এখন থেকে তারা তাদের কাঁথা বানানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। গ্রাম-গঞ্জে, বিভিন্ন বাড়ীঘরে পরিলক্ষিত হয় যে , অসহায় মহিলারা পুরান কাপড় সংগ্রহ করে দিন-রাত পরিশ্রম করে কাঁথা তৈরী করছে। একজন ভিক্ষুক মহিলা ইনকিলাবকে জানান যে “ ভাইরে আমাদের কপালে কি লেপ-তোষক জুটবে”।আমরা সারা দিন বিভিন্ন
বাড়ী ঘুরে ঘুরে চাল সংগ্রহ করি। এতে করে আমাদের সংসার চলে। তাই আমাদের কপালে লেপ-তোষক জুটবে না। গফরগাঁও বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ এমদাদুল হক (ইন্তু) জানান, লেপ তৈরীর অর্ডার দিয়েছি। তবে এখনো পুরোপুরি শীতের তীব্রতা শুরু হয়নি। গত বারের চেয়ে লেপ-তোষকের সামগ্রীর দাম কিছুটা বেড়েছে।
শীতের সঙ্গে সর্ম্পক আছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী “ভাপা পিঠা” গ্রাম-গঞ্জে বাড়ী বাড়ী ভাপা পিঠার আয়োজন ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে শীতের কুয়াশা মোড় সকালে ভাপা পিঠার আছে দারুন কদর। শীতের অন্যান্য পিঠারও কদর আছে গ্রামবাংলার সর্বত্র। গত ১৫/২০ ধরে পুরো দমে চলতি মৌসুমের আমন ধান কাটার ধুম পড়ে গেছে। পরে জামাইদের গ্রাম অঞ্চলে নতুন ধানের শীতের পিঠা খাওয়ানোর জন্য পিঠার দাওয়াত দেওয়ার রেওয়াজ এখনও চালু আছে সর্বত্র । শীত মৌসুমকে সামনে রেখে গ্রাম-বাংলার খেজুর গাছে কলসী পাতানো শোভা পাচ্ছে। শীত মৌসুমের সঙ্গে এ অঞ্চলের ইসলাম র্ধম ভীরু লোকজন ইসলামী সম্মেলন ,র্ধম সভা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার জন্য এলাকায় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করে দিয়েছে বলে পরিলক্ষিত হয়। এ অঞ্চলে ইসলামী সভা শীতকালীন বেশী হয়ে থাকে।এ ছাড়া শীতের সাথে গফরগাঁও শহর, গ্রাম-গঞ্জে শিল্প সংস্কৃতির ,যোগাযোগ সুগভীর। মূলতঃ সাংস্কৃতিক তৎপরতা শীতকালে বেশী হয়। আবহাওয়া শুকনো থাকার কারণে এবং শীতের আমেজের সময় সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বেশী। তাই অন্যান্য বছরের মত এবার গফরগাঁও গ্রাম-গঞ্জে সাংস্কৃতিক কর্মীরা তৎপরতা হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে গ্রামঞ্চলে ক্লাবে নাটকের প্রস্ততি চলছে। যতই দিন ঘনিয়ে যাচ্ছে ততই শীতের জন্য নাটকের প্রস্ততি শেষ পর্যায়ে চলে আসছে।শীত কালে খেলাধুলার উৎকৃষ্ট মৌসুম।তাই এ অঞ্চলের ক্রীড়ামোদীরা আসন্ন মৌসুমে তাদের কার্যক্রম প্রণয়নে ব্যস্ত।পোশাক ব্যবসায়ীরা ও বসে নেই। শীত মৌসুম সামনে রেখে পুরনো ও নতুন কাপড় বিক্রির জন্য মজুদ করে নিচ্ছে। যাতে করে শীতের শুরুতে চড়া দামে বিক্রি করতে পারে। সব মিলিয়ে শীত শুরু এদিন গুলোতে গ্রাম-গঞ্জে চলছে নতুন এক মৌসুম বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি। দেখার মত প্রস্ততি নিচ্ছে আসন্ন শীত মোকাবেলা করার জন্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ