জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বারী সিদ্দিকীর ইন্তেকাল
অনলাইন ডেস্ক |
প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ৮:৩৪ এএম
‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘শুয়াচান পাখি’র মত জনপ্রিয় বাংলা গানের শিল্পী বারী সিদ্দিকী ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা নাগাদ রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে আর অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংগীত পরিচালক ও মুখ্য বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তার বড় ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী জানান, বারী সিদ্দিকীকে দাফন করানোর জন্য রাতেই মোহাম্মদপুরে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে লাশ শুক্রবার সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ১৪/এ সড়কে তাঁর বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। বারী সিদ্দিকীর প্রথম জানাজা হবে সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে, দ্বিতীয় জানাজা হবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে সকাল সাড়ে ১০টায়। বাদ আসর তৃতীয় ও শেষ জানাজা হবে নেত্রকোনা সরকারি কলেজে। এরপর বারী সিদ্দিকীকে নেত্রকোনার কারলি গ্রামে ‘বাউল বাড়ি’তে দাফন করা হবে।
কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, বংশীবাদক বারী সিদ্দিকী হৃদরোগ ছাড়াও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি ডায়াবেটিস রোগেও ভুগছিলেন। গত ১৭ নভেম্বর রাতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন তিনি অচেতন ছিলেন। তাঁকে দ্রুত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘদিন সংগীতের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সবার কাছে বারী সিদ্দিকী সংগীতশিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান ১৯৯৯ সালে। ওই বছর হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিটি মুক্তি পায়। এই ছবিতে তিনি ছয়টি গান গেয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয় হওয়া গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবীজান নাও বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’। এরপর তিনি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন। তাঁর গাওয়া গান নিয়ে বেরিয়েছে অডিও অ্যালবাম।
১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর ভাটি অঞ্চলের জেলা নেত্রকোনায় আবদুল বারী সিদ্দিকীর জন্ম। শৈশবে পরিবারেই তার গান শেখার হাতেখড়ি।
কিশোর বয়সে নেত্রকোনার শিল্পী ওস্তাদ গোপাল দত্তের কাছে তালিম নিতে শুরু করেন বারী। পরে ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষসহ বহু গুণী শিল্পীর সরাসরি সান্নিধ্য পান।
সত্তরের দশকে নেত্রকোনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হন বারী সিদ্দিকী। পরে ওস্তাদ গোপাল দত্তের পরামর্শে ধ্রুপদী সংগীতের ওপর পড়াশোনা শুরু করেন। এক সময় বাঁশির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং উচ্চাঙ্গ বংশীবাদনে প্রশিক্ষণ নেন।