Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কালের সাক্ষী সীতাকুন্ড গায়েবি মসজিদ

| প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : সীতাকুন্ডে অপূর্ব কারুকাজখচিত সীতাকুন্ডের ছোট দারোগাহাটের পূর্বে কলাবাড়ীয়া পাহাড়ের পাদদেশে আবদুল গফুর শাহ্ গায়েবি মসজিদটি অবস্থিত । প্রায় ২০০ বছর আগে এই গায়েবি মসজিদটি আবির্ভাব হয় বলে জনশ্রুতি রয়েছে। সেজন্য গফুর শাহ্ গায়েবি মসজিদ হিসেবে এর নামকরণ হয়। কালের সাক্ষী হয়ে আজো মাথা উঁচু করে দঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। লোকমুখে শোনা যায়,জায়গাটি ছিল জঙ্গলাচ্ছন্ন । এখানে ২৪ ঘন্টা ছিল বাঘ ভালুকের আনাগোনা।স্থানীয় কিশোর গফুর শাহ্ গরু চড়াতে আসেন গহীন পাহাড়ের পাদদেশে। এসময় তার গাভীর বাচ্চাটি ওই পাহাড় থেকে উধাও হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর পাহাড়ের পাদদেশে তার গাভীর বাচ্চাটিকে খোঁজতে গিয়ে হঠাৎ গাভীর বাচ্চার ডাক শুনতে পান তিনি। গফুর শাহ্ গাভীর বাচ্চা খুঁজতে গিয়ে সন্ধান পান কনো এক সময় বুজুর্গ ব্যক্তির নামাজ পড়ার পরিপাটির জন্য একটি স্থান। জায়গাটি দেখে গফুর শাহ্র মধ্যে মানসিক পরিবর্তন ঘটে। তারপর তিনি প্রথমে জঙ্গল পরিস্কার করে এক চালা ঘর তৈরি করে সেখানে নিয়মিত নামাজ-কালাম পড়তেন। ক্রমশ মসজিদটির কথা লোক মুখে ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদটির ব্যাপক প্রচার হওয়ার পর গফুর শাহ্ হঠাৎ ওখান থেকে একদিন উধাও হয়ে যায়। তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ নানারকম মনোবাসনা পুরণের আশায় এখানে ছুটে আসতে থাকে এবং মানত করে। বর্তমানে ১০টি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত মহিলাদের জন্য এবাদত খানা ও একটি বিশ্রামাগার রয়েছে এখানে। ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি একটি কমিটি আছে। কমিটির সেক্রেটারী স্থানীয় মোঃ ছালামত আলী। তিনি গফুর শাহ্ মসজিদের ইতিহাস জানিয়ে বলেন,আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগের কথা। পাহাড়ের স্থানটিতে গভীর জঙ্গল ছিল। স্থানীয় কিশোর গফুর শাহ্ প্রতিদিন পাহাড়ে গরু চড়াতে যেত। সেখানে বাঘ ভালুকের প্রতিনিয়ত আনাগোনা ছিল। আর জঙ্গল থেকে অলৌকিক ভাবে আজানের ধ্বনি শোনা যেত। একদিন তার গাভীর বাচ্চাটি ওখান থেকে উধাও হয়ে যায়। তিনি অনেক খোঁজ করেও গাভীর বাচ্চাটিকে পাননি। প্রায় ১০দিন পর গহীন পাহাড় থেকে গাভীর বাচ্চার আওয়াজ ভেসে আসে। তখন গফুর শাহ্ জঙ্গলের অনেক ভিতরে গিয়ে দেখতে পান তার গাভীর বাচ্চাটি বসে আছে। গফুর শাহ্ জায়গাটি দেখে চমকে উঠেন। তিনি দেখতে পান মানুষের বড় বড় পা এবং আঙ্গুলের ছাপ। এসময় গায়েবি একটি শব্দ তার কানে ভেসে আসে। কারা যেন বলছে গফুর শাহ্ তুমি এখানে নামাজ পড়বে। তখন থেকে গফুর শাহ্ ওখানের জঙ্গল পরিস্কার করে নামাজ পড়তেন। কিন্তু গ্রামের সবার প্রশ্ন গফুর শাহ্ বাড়িতে জায়গা রেখে পাহাড়ে কেন নামাজ পড়তে যায়? তাছাড়া গ্রামের মানুষ ওই পাহাড় থেকে আজানের ধ্বনি শুনতে পেতেন। আর গ্রামের লোকজনও বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করে তাকে বিরক্ত করতেন। একনি তিনি বলে বসলেন,জঙ্গলে গিয়ে নামাজ পড়ার রহস্যের কথা। সে থেকে গফুর শাহ্কে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে মসজিদের ইমাম মাওলানা হোসেন আহমেদ বলেন, এ মসজিদে আমি ২১বছর ধরে ইমাম হিসেবে নিয়োজিত আছি এবং ক্ষতিব হিসেবে আছেন,মাওলানা বাকী বিল্লাহ। আমি এ মসজিদে যোগ দেয়ার আগে মসজিদের ইমাম হিসেবে ছিলেন, নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা মাওলানা মোঃ নুরুল হক। তিনি বিগত ৪৬বছর ধরে মসজিদে ইমাম হিসেবে ছিলেন। তার পর তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। তিনি বলেন,এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নারী-পরুষ তাদের মনোবাসনা পুরণের জন্য দলে দলে ছুটে আসে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। অনেকে বলে তাদের মনোবাসনা পুরোন হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গফুর শাহ্ গায়েবি মসজিদে শুক্রবারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নরনারীসহ বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ এখানে ভির জমান।



 

Show all comments
  • তানবীর ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:১৭ এএম says : 0
    একদিন নামাজ পরার ইচ্ছে রইলো।
    Total Reply(0) Reply
  • nirob ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১১:৪০ এএম says : 0
    আমি,এমসজিদে,নামাজ ,,,আদাই,করবো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ