Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ফেনীর আওয়ামী লীগ নেতা হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৭, ৮:৫০ পিএম | আপডেট : ৯:১৬ পিএম, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

ফেনীর আওয়ামী নেতা আজহারুল হক আরজু হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজার যাওয়ার পথে এবং ফেরার সময় তার গাড়িবহরে যে হামলা হয়েছিল এই পুরো ঘটনার নেপথ্য নায়ক আওয়ামী লীগের এমপি নিজাম হাজারী। এ বিষয়ে আর কোন সংশয় থাকার কথা নয়। জনগণ এটা আগেই বুঝেছে, এখন তারা (আওয়ামী লীগ) নিজেরাই বলছে। বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে তিনি।
কক্সবাজার যাওয়া-আসার পথে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার পেছনে ফেনীর এমপি নিজাম হাজারী রয়েছে দাবি করে ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আরজু গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। তার ওই বক্তব্যের সূত্র ধরে রিজভী বলেন, ফেনী জেলার নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে মঙ্গলবার হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন। কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ত্রাণ দিতে যাওয়ার সময় গত ২৮ অক্টোবর ফেনীতে এবং ফেরার পথে ৩১ অক্টোবর ফেনীর মহিপাল অতিক্রম করার সময় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা হয়। এসময় বহরের এবং গণমাধ্যমের প্রায় ৩০টি গাড়ি ভাংচুরের শিকার হয়। আর ফেরার পথে গাড়িবহরের পাশে দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। নিজার হাজারীর বিরুদ্ধে আরজুর এ অভিযোগের পর হামলার পরিকল্পনা আরও উপর থেকে হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপি নেতা রিজভী। তিনি বলেন, নিজাম হাজারী বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে যে হামলা চালিয়েছে, সেটি আরো উপর থেকে অর্থাৎ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেটা এখন একেবারেই প্রমাণিত। থলের বিড়ালকে বেশিক্ষণ আটকিয়ে রাখা যায় না, এটা বেরিয়ে পড়বে। বিএনপি নেতারা দুই দফা ওই হামলার জন্য ক্ষমতাসীনদের দায়ী করে এলেও সংবাদপত্রে ‘বিগ নিউজ’ পাওয়ার জন্য তা বিএনপির ‘সাজানো’ বলে সে সময় মন্তব্য করেছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার এ বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ফেনী আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্যের পর কী লজ্জা পাবেন না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা, যারা ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই এটাকে চাপানোর চেষ্টা করেছেন। এখন কী উত্তর দেবেন, নিজের মুখ কী লুকিয়ে রাখতে পারবেন? আওয়ামী লীগ নিজেরা অপকর্ম করে অন্যের ওপর দোষ চাপানোর বাতিক অনেক পুরনো। ব্যাংকিং খাতে সীমাহীন লুটপাট চলছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকে ব্যাংকিং খাতে সীমাহীন লুটপাট চলছে। আরো বেশি লুটপাটের সুযোগ করে দিতে ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। জাতীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে মূলত: আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক ব্যবসায়ীকে সুযোগ দিতেই ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা হচ্ছে। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও মানুষের বাক-স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণরূপে হরণ করতে সম্প্রচার আইন করতে যাচ্ছে সরকার।
খসড়া সম্প্রচার আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার মানুষের বাক-স্বাধীনতা হরণ করতে একের পর এক কালো আইন তৈরি করছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলতে আজ কিছুই অবশিষ্ট নেই। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে শুধু গণমাধ্যম বন্ধই নয় প্রতিনিয়ত হামলা ও খুনের শিকার হতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। সাগর-রুনি হত্যার বিচার আজো হয়নি। এরই মধ্যে সাংবাদিকরা গুমেরও শিকার হয়েছেন। বিশেষ জায়গা থেকে ফোনের মাধ্যমে হুমকি দিয়ে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সম্প্রতি গণমাধ্যম ও মানুষের বাক-স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণরূপে হরণ করতে সম্প্রচার আইন করতে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, বিরোধী দল, বহুমত, বিশ্বাস, স্বাধীন চিন্তার ওপর কুঠারাঘাত করার জন্যই এই আইন পাশ করার তোড়জোড় শুরু করেছে সরকার। এই আইন পাশ হলে একদলীয় দু:শাসনের কালো অন্ধকার আরো ঘনীভূত হবে। বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে এই আইনটি গিলোটিন হিসেবে ব্যবহার হবে। বাংলাদেশের মানুষ এমন কালো আইন মেনে নেবে না।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে বিমানবন্দরে মানুষের ঢল নেমেছিল। কক্সবাজার যাবার পথে পথে ছিল লাখো মানুষের ঢল। সরকারি বাধা, পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলা, পরিবহনে সরকারি ধর্মঘট ও ব্যারিকেড উপেক্ষা করে লাখ লাখ জনতার স্রোতে ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা মহাসমাবেশে রুপ নেয়। এ জনস্রোত দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বর্তমান ভোটারবিহীন বাকশালী স্বৈরশাসকদের হটাতে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যতই ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগ করুক না কেন তাদের শেষ রক্ষা হবে না। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অচিরেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে ইনশাল্লাহ। এছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দলের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচিতে বাধা দেয়া ও হামলার নিন্দা জানান রিজভী। এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, শামা ওবায়েদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ