Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

খালেদা জিয়া নিজের কথা না ভেবে দেশের মানুষকে জাগিয়ে তুলছেন

নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবারও কাঁদলেন মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১৬ এএম, ২২ নভেম্বর, ২০১৭

দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবারও কাদলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা আজকে একটা দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
আমাদের বোনেরা-মেয়েরা আছে, যারা মাফ পায়নি, রেহাই পায়নি। সারা বাংলাদেশে হাজারো নেতাকর্মীকে গুম করে দিয়েছে। তাদের বাচ্চারা এখনো বাবার পথের দিকে চেয়ে থাকে।’ এর পরেই গলা ধরে আসে মির্জা ফখরুলের। একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার সময় দলের নেতাকর্মীদের ওপর কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় সংগীতের তালে তালে সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস। সম্মেলনে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় মাহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদসহ সহসভানেত্রী জেবা খান, যুগ্ম সম্পাদিকা হেলেন জেরিন খান ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সারওয়ার চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এমন একটা দুঃসময়, গ্রেপ্তার খুন চলছেই। এই সরকার, যারা আমাদের গণতন্ত্রের সব স্তম্ভকে ধ্বংস করে দিয়েছে, মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলোও কেড়ে নিয়েছে।
দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের মা-বোনদের কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষেরও নিরাপত্তা নেই। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন নারীদের লাঞ্ছনা করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন আমার ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলা রাখা হয়েছে। গুম হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কি সে জন্য দমে গেছি? আমরা গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবই করব।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষে মানুষে স¤প্রীতি বিনষ্ট করছে। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করছে। শত নির্যাতন-নিপীড়নের পরও দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। জীবনসায়াহ্নে এসেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে জাগিয়ে তুলে ক্যারিশমা দেখাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জীবনসায়াহ্নে এসেও তার নিজের কথা ও সন্তানের কথা ভাবছেন না। তিনি পরিবারের কথা ভাবছেন না। এই দেশকে মুক্ত করার জন্য এবং মানুষের অধিকারগুলো ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি সংগ্রাম করে চলেছেন। এখানেই আমাদের দেশনেত্রীর কারিশমা।
খালেদা জিয়া মানুষকে জাগিয়ে তুলতে পারেন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করে তিনি (খালেদা) নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আবার তিনি এক-এগারোর ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন কারাগারে বসে। এখন আবার নয় বছর ধরে বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
প্রথম অধিবেশন শেষে ফোরাতুন নাহার প্যারিসকে সভাপতি, শিরিন আকতারকে সাধারণ সম্পাদিকা ও রুবিনা আক্তার, নাজমা বেগম, সানজিদা ইয়াসমিনকে সাংগঠনিক সম্পাদিকা করে জেলা মহিলা দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ