Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভিআইপিদের সফরে জ্বালানি বাবদ ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়

নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেই -জনপ্রশাসন মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গত অর্থবছরে বিভাগ, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ভিআইপিদের সফরে জ্বালানি বাবদ ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা সরকারের ব্যয় হয়েছে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কে এম শাহজাহান কামালের উত্থাপিত লিখিত ও মো. মোসলেউদ্দীনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রশ্নর জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক এ তথ্য জানান।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের ভি-ভিভিআপি এবং ভিআইপিগণের জেলা সফরসহ বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত যার বাহনে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে মোট ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা জ্বালানী বাবদ ব্যয় হয়েছে ।মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী সরকারের উপ সচিব থেকে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারের কর্মকর্তাদের গাড়ির গ্যাস ও জ্বালানী বাবদ গত অর্থবছরে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। পেট্রোল ও লুব্রিক্যান্ট খাতে ব্যয় হয়েছে ৩২ কোটি টাকা। জলযানে ব্যবহারের জন্য পেট্রোল ও লুব্রিক্যান্ট খাতে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রতিমন্ত্রী আরো জানান, প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মাসিক ১৮০ লিটার পেট্রোল অথবা সিএনজি চালিত গাড়ির স্টার্ট আপ হিসেবে ২৭ লিটার পেট্রোল এবং ২৭০ ঘনমিটার গ্যাস জ্বালানী হিসেবে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ করা হয়। এছাড়া এসব কর্মকর্তাদের নিজ গাড়ী ব্যবহার বাবদ ড্রাইভার ও রক্ষাণাবেক্ষণ বাবদ মাসিক ২৫ হাজার এবং সার্বক্ষণিক গাড়ি সুবিধাপাপ্ত কর্মকর্তারা দপ্তর প্রধানের বিশেষ সুপারিশক্রমে মাসিক ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পান বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।মোরশেদ আলমের লিখিত ও মো. মোসলেউদ্দীনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদিক বলেছেন, দেশের সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরসমূহে বর্তমানে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১ টি পদ শুণ্য রয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার কারণে নিয়োগ বিলম্বিত হয়। যেকারণে সময়মত নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরসমূহে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১টি পদ শুণ্য রয়েছে। শূন্য পদ পূরনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি অফিসমূহে শূণ্য পদে লোক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং এর অধীন সংস্থাসহূহের চাহিদার প্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে ৮ম, ৯ম, ও ১০ থেকে ১২ গ্রেডের (১ম ও ২য় শ্রেণী) শুন্য পদে জনবল নিয়োগ করা হয়ে থাকে। ১৩-২০ গ্রেডের ( ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনি) পদে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ অধিদপ্তর/ সংস্থার নিয়োগবিধি অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ হতে ধারাবাহিকভাবে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের চাহিদার প্রেক্ষিতে নতুন পদ সৃজনে সম্মতি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে সৃজিত পদে জনবল নিয়োগের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। মো. মোসলেউদ্দীনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে ইসমত আরা সাদিক বলেন, আপনি সঠিক বলেছেন। মামলার কারণে নিয়োগ মন্থর ও বিলম্বিত হয়। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী আমরা নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করি। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার কারণে নিয়োগ বিলম্বিত হয়। সে জন্য সময়মত আমরা নিয়োগ দিতে পারছি না। মেজর (অব:) রফিকুল ইসলামের (বীরউত্তম) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ নেই। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থার অধীনে। বিএসএস পরীক্ষার মাধ্যমে কর্ম কমিশন ক্যাডার ও নন ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে নিয়োগের সুপারিশ করে থাকে। সে কারণে শূণ্য পদের সব হিসাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নেই। কোন উপজেলায় কী পদ শূণ্য আছে জানি না। কোন বিভাগে কত পদ শূণ্য সেই মন্ত্রণালয় জানে। আমাদের কাছে সম্পূর্ণ হিসেব নেই। আপনি চাইলে সংগ্রহ করে সংসদে জানাতে পারব।
দুধ উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে ডেইরি বোর্ড প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা \
দুধ উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ। লক্ষ্যে দেশে একটি ডেইরি বোর্ড প্রতিষ্ঠাসহ নীতি সহায়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। এছাড়া দেশের সব মানুষের প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণে মাছ-মাংস উৎপাদনও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এসব তথ্য জানান। এসময় মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের গত আট বছরে মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির চিত্রও তুলে ধরেন।
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশে একটি ডেইরি বোর্ড প্রতিষ্ঠাসহ নীতি সহায়তা বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এ লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, সর্বোচ্চ চারটি পর্যন্ত গরু কেনার জন্য জনপ্রতি দুই লাখ টাকা করে মোট ১৭৫ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতাধীন ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২১ মাসে, অর্থাৎ বিগত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই ঋণ দেয়া হয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি পর্যায়ের ৮৪টি হ্যাচারির সুবিধাসহ ১৩৬টি মৎসবীজ উৎপাদন খামার এবং বেসরকারি পর্যায়ের ৯৫২টি মৎস হ্যাচারি রয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় পোল্ট্রিখামারের সংখ্যা ৪৫টি এবং বেসরকারি রেজিষ্টার্ড পোল্ট্রিখামারের সংখ্যা ৮০ হাজার ৬২৭টি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডেইরি খামারের সংখ্যা আটটি এবং বেসরকারি রেজিষ্টার্ড ডেইরি খামারের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৪৯টি। মন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরের মাংসের প্রাপ্যতা ছিলো জনপ্রতি বছরে ৩২ দশমিক ৪৫টি, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে জনপ্রতি বছরে ৯২ দশমিক ৭৫ গ্রাম। মাংসের চাহিদা পূরণে মুরগির পাশাপাশি হাঁস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পের কাজ চলছে। দেশের সকল মানুষের প্রাণীজ আমিষের ঘাটতি পূরণ ও মৎস উৎপাদন বৃদ্ধির উল্লেখ করে বলেন, প্রাণিজ আমিষের সরবরাহ বেড়েছে। এ সময় তিনি চিংড়ির ও ইলিশ উৎপাদনের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
জনসচেতনতা ছাড়া নারী নির্যাতন বন্ধ সম্ভব নয় \
জনসচেতনতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো.ফজলে রাব্বী মিয়া। জাতীয় সংসদ ভবনে আইপিডি কনফারেন্স কক্ষে শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস ও কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম এর আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি সংসদ সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, শামসুল আলম দুদু, ইয়াসিন আলী, মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, মোঃ মাহবুব আলী, কাজী রোজী, নুরজাহান বেগম, উম্মে রাজিয়া কাজল, লুৎফা তাহের, দ্য হাঙ্গার প্রেজেক্ট এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার, প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সৌম্যব্রত গুহ, ভিবিন্ন দেশি বিদেশি এনজিও প্রতিনিধি প্রমুখ।
ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, শিশু ও নারী নির্যতন, যৌন নীপিড়ন ও যৌন হয়রানি শুধু আইন করে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা ও দায়বদ্ধতা। সমাজের সকল স্তরে মানুষের মাঝে শিশু ও নারী নির্যাতন আইনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলই নারীদের জন্য সুবর্ণময় সময়। এ সরকারের সময়ে যদি আমরা নারীদের সুরক্ষা দিতে না পারি তাহলে নারীদের সুরক্ষা দেয়া আর কখোনো সম্ভবপর নয়। এসময় তিনি নারী ও শিশুদের কল্যাণে গৃহীত সরকারের নানমুখী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জনপ্রশাসন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ