Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শঙ্খের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার মানুষ

| প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জাহেদুল হক, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে : হেমন্তের শান্ত-¯িœগ্ধ শঙ্খনদী অসময়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নদীর পানি কমতে থাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের ভাঙনে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের পূর্ব গহিরা ফকিরহাট এলাকার অন্তত ১২টি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে এ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বসতভিটা ও ফসলি জমি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ওইসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়,গত দুই সপ্তাহে শঙ্খের তীব্র ভাঙনে ফকিরহাট এলাকার নুরুন্নবী,ফকির মোহাম্মদ,আবদুল গফুর,আবদুল মজিদ,আবদুল হাকিম,জাহেদুল ইসলাম, মো.ইলিয়াছ, হাফেজ মো.শাহাদত, মিনুয়ারা বেগম ও শেখ মোহাম্মদের ঘরবাড়িসহ নঈম উদ্দিন ও হেলাল উদ্দিনের দুটি দোকানঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তাছাড়া ওই এলাকার প্রায় দুইশ মিটার অংশ তীর রক্ষা বাঁধ নদীতে ভেসে গেছে। শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে মাথা গোজার ঠাই খুঁজে পাচ্ছেন না নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। হাতে টাকা ও খাবার না থাকায় দু‘চোখে শুধুই অন্ধকার দেখছেন তারা। বারবার যোগাযোগের পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাড়া না পাওয়ায় নদী পাড়ের মানুষজনকে ঘরবাড়ি হারাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকার মানুষের।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, ভাঙনকবলিত ওই এলাকার ৭১০ মিটার অংশে ১৮ কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে কার্যাদেশ পেয়ে মশিউর রহমান নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। সেখানে স্থায়ী বাঁধসহ জিও ব্যাগ ও সিসি বøক নির্মাণ করা হবে। শঙ্খের ভাঙনের শিকার ফকির মোহাম্মদ জানান,হঠাৎ শঙ্খের তীব্র ভাঙনে ভিটেমাটি সব নদীগর্ভে চলে গেছে। কোন রকমে ঘরের চাল রক্ষা করতে পারছি। তাও আবার রাস্তার একদিকে রেখেছি। এখন কোথায় যাবো তার কোন উপায় নেই। কেউ এমনিতে বাড়ি করার জায়গা দেয় না। ভাঙ্গনের শিকার আবদুল হাকিম জানান,বাড়িঘর কোন রকম সরিয়ে নিয়েছি। বউ-বাচ্চা নিয়ে আজ দুই সপ্তাহ যাবত খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছি। খাবারও নেই,হাতে টাকাও নেই। চেয়ারম্যান-মেম্বার এখন পর্যন্ত কোন সাহায্যও দেয় নাই। এ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। সামনে কি হবে আল্লাহই ভালো জানেন। তাদের মতো একই অবস্থা ওই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের।
রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম ইনকিলাবকে জানান, ঠিকাদারীর অবহেলার কারণে এসব মানুষ ভাঙনের কবলে পড়ে ঘরবাড়ি হারিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার কথা থাকলেও ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা তা করেনি। যদি তারা সেখানে বালিভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতো তাহলে অন্তত ভাঙন ঠেকানো যেতো। তা না করে ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা শত শত জিও ব্যাগ চুরি করেছে। এ সময় তারা জনতার হাতে ধরাও পড়েছে বহুবার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ