পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবহাওয়ার বিপরীত আচরণ : তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচুতে থাকতে পারে পৌষ-মাঘেও
পঞ্জিকার ছকে কোমল শীতের হেমন্ত ঋতু পাড়ি দিয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ অতিবাহিত হতে চলেছে। অথচ আবহমান বাংলার চিরাচিত সেই ‘স্বাভাবিক’ শীত উধাও। হালকা কুয়াশা ও শিশির ঝরা সকালের দেখা মিলছে তাও কোথাও কোথাও যৎকিঞ্চিৎ। শীতের মোকাবিলায় লেপ-তোষক, কম্বল, গরম কাপড় নামাতে হচ্ছে না। বরং অধিকাংশ জায়গায় দিনে এমনকি রাতেও ফ্যান-এসির ব্যবহার চলছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে নেতিবাচক ধারায়। এরফলে আবহাওয়া বিপরীতমুখী ও বৈরী আচরণ করছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা মওসুমের এই সময়ে যে অবস্থানে থাকা স্বাভাবিক এর চেয়ে স্থানভেদে ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ঊর্ধ্বে রয়েছে। তাছাড়া বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতার হার রয়েছে অস্বাভাবিক বেশি (ঢাকায় সকালে ৯৪ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৬৪ শতাংশ)। এ কারণে গরমের সঙ্গে মানুষ এই অসময়েও ঘামাচ্ছে। কায়িক শ্রমে হাঁপিয়ে উঠছে। আবহাওয়ার খেয়ালী আচরণে বিভিন্ন ধরনের রোগ-ব্যাধির প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানা গেছে, তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের তুলনায় উঁচুতে থাকতে পারে এবার ভরা শীত মওসুমে আগামী পৌষ-মাঘেও (জানুয়ারি)। একজন বিশেষজ্ঞ জানান, এ বছর শীতকালে শীতের কামড় তথা হাঁড় কাঁপানো শীত দীর্ঘস্থায়ী বা একটানা হওয়ার সম্ভাবনা কম। তা হতে পারে সাময়িক।
সচরাচর দেখা যায়, মওসুমের বর্তমান সময়ে যদি বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ-নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এর সক্রিয় প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এই বৃষ্টির পর শীতের আগমনী ঘটে ধীর পায়ে। যাকে বলা হয় ‘শীত নামানো অসময়ের বৃষ্টি’। গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম সংলগ্ন মধ্য-বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ থেকে ঘনীভূত হয়ে একটি নিম্নচাপ বিরাজ করে। এ সময় দুই-তিন দিন দেশের অধিকাংশ হিমেল হাওয়ার সাথে স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি, হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকে নিম্নচাপটি ক্রমে দুর্বল হয়ে কেটে যাওয়ার পরপরই শীতের আগমনী এবং অনুভূতি দুইই বেড়ে যাওয়াই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু আবহাওয়া-রাজ্যে বিরূপ ও বিপরীতমুখী আচরণের কারণে তার ব্যত্যয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত শনিবার থেকে শীতের অনুভূতি ক্রমশ বৃদ্ধি না পেয়ে উল্টো গরমের মাত্রাই বেড়ে চলেছে। গতকাল (রোববার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকুন্ডে ৩৩.২ ডিগ্রি সে. এবং সর্বনিম্ন রংপুর বিভাগের রাজারহাটে ১৪.৫ ডিগ্রি সে.। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩১.৪ এবং ২৩.৬ ডিগ্রি সে.। যা মওসুমের এ সময়ের চেয়ে তাপমাত্রার পারদ বেশিই।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সুদূর উত্তরের সাইবেরীয় অঞ্চল থেকে হিমশীতল বায়ুমালার আগমন এখন অবধি শুরু হয়নি। তাছাড়া ঊর্ধ্বাকাশের হিমশীতল জেটবায়ু নিচে স্থলভাগের দিকে যে স্বাভাবিক গতিতে নামার কথা তাও হচ্ছে না এখনও। এরফলে শীতের আগমন বিলম্বিত হচ্ছে। সাইবেরীয় হিমেল বায়ুমালা এবং জেটবায়ুর নিম্নমুখী প্রবাহ শুরুর জন্য এখন অপেক্ষার পালা।
আবহাওয়া দপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানা গেছে, চলতি নভেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিক হারে বৃষ্টিপাত হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে। তবে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আগামী ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ) মাসেও দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টি হতে পারে। তখন রাতের তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পেতে পারে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১ থেকে ২টি মৃদু (সর্বনিম্ন ৮ থেকে ১০ডিগ্রি সে.) থেকে মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সে.) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আগামী জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১টি মাঝারি থেকে তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সে.) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ এবং দেশের অন্যত্র ১ বা ২টি মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। তবে সার্বিকভাবে এ মাসের (পৌষ-মাঘ) গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি সে. উপরের দিকেই থাকতে পারে।
সর্বশেষ আবহাওয়া
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মওসুমের একটি স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। এর পরের ৫ দিনের আবহাওয়ার বর্তমার অবস্থার সামান্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।