পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্কুল-কলেজ, ব্যাংক, কর্পোরেশনে চিঠি দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজকে ছুটি দেয়া হয়েছে, বলা হয়েছে সমাবেশে না আসলে শিক্ষকদের চাকরি থাকবে না। ব্যাংকের লোকদের চিঠি দিয়েছে না আসলে ৫ দিনের বেতন কাটা যাবে, আসতেই হবে। সব কর্পোরেশন্স, শিক্ষক, সবাইকে এই কথা বলে আনা হচ্ছে। সব স্কুলের বাচ্চাদের বাসে ভর্তি করে সমাবেশে আনা হচ্ছে। গতকাল (শনিবার) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভাসানী স্মৃতি সংসদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন তোষামোদী করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনতে চায় অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) তোষামোদী করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন আনতে চান। আজকে বিএনপিকে খুব খুশি করার চেষ্টা করছেন। আবার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানুষ দিয়ে আওয়ামী লীগের কথা বলছেন। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, কাউকে তোষামোদী করার তো দরকার নেই। এটার প্রয়োজন নেই। এসব কথা বললে লাভ হবে না।
কাজ দেখান। কাজের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে আপনারা নিরপেক্ষ প্রমাণ করুন। ভোটের আগে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু নির্বাচনের ৯০ দিন নিরপেক্ষ হবেন, আর এখন থেকে সবকিছু আওয়ামী লীগ করবে। অন্যদিকে আমরা একটি মিটিংও করতে পারবো না, রাস্তায় দাঁড়াতে পারবো না, সত্য কথা বলতে পারবো ন। তা তো হবে না। এখন থেকেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজ করতে দিতে হবে। স্বাধীনতা দিতে হবে। আওয়ামী লীগ মহাসুখে হেলিকপ্টারে চড়ে নির্বাচনী প্রচারনা চালাবে, আর বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের নেতারা সপ্তাহে সপ্তাহে কোর্টের বারান্দায় হাজিরা দিবে, এভাবে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে হলে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। সমস্ত রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এই সংসদকে ভেঙে দিতে হবে। সত্যিকার অর্থে একটি ফলপ্রসূ ও কার্যকর নির্বাচন দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন ক্ষমতায় আছেন কিছু দিনের জন্য। খুব আনন্দিত হচ্ছেন, বগল বাজাচ্ছেন যে আমরা তো ক্ষমতায় এসে যাব, কোনো চিন্তা নেই, বিএনপি না আসলে না আসবে। বিএনপি না আসলে হবে না। এদেশের মানুষকে আর ওই ধরনের নির্বাচন গেলাতে পারবেন না। দেশের মানুষ অবশ্যই আগামী নির্বাচনে সমস্ত দলকে দেখতে চায়। এদেশের মানুষ সত্যিকার নির্বাচনী পরিবেশের মাধ্যমে একটা নির্বাচন দেখতে চায়। নিজেরা নিজের ভোট দিয়ে সরকার পরিবর্তন ও সরকার গঠন করতে চায়। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মানুষের কাছে যান, তাদের হৃদয়ের ভাষা, চোখের ভাষা বুঝুন, দেয়ালের লিখন পড়–ন। তারা কি বলছে, তারা পরিবর্তন চায়। তারা সত্যিকার অর্থে একটি জনগণের সরকার চায়। আর সেই সরকার সম্ভব একমাত্র নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে যদি নির্বাচন হয়।
নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে সরকারের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা বলেন নির্বাচন সংবিধান মতো হবে। কোন সংবিধান? এই সংবিধান কে তৈরি করেছে। এই সংবিধান আপনারা সংশোধন-পরিবর্তন করেছেন। যেই সংসদে ১৫৪জন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছে। শতকরা ৫ ভাগ মানুষ ভোট দিতে যায়নি। সেই সংসদে সংবিধানের পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন, সেই সংবিধানের কথা বলছেন? গণভোট বাদ দিয়ে দিয়েছেন। গণভোট থাকলে বোঝা যেত এই সংবিধানের পরিবর্তন মানুষ চায় কি চায়না। সেটাও বাদ দিয়েছেন। আপনাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য, আপনাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য যা যা করার দরকার তাই করেছেন। গণতন্ত্রের প্রতি এতটুকু মূল্যবোধ ও শ্রদ্ধাবোধ যদি থাকতো তাহলে এইসব কাজ করতেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তি দিয়ে বলে আপনারা না খেলতে আসলে (নির্বাচনে) কি করবো ওয়াকওভার তো হবেই। খেলতে আসিনি কেন সেটা তো জানতে হবে। ১১জন খোলোয়াড়ের সাথে তিনজন রেফারিকে দলভুক্ত করেছেন। মাঠকে নিজেদের দিকে উঁচু করে নিছেন যাতে বল গড়ায়ে প্রতিপক্ষের দিকেই যায়। এই নির্বাচনে শুধু বিএনপি নয়, সকল দলই বয়কট করেছে। এরশাদও প্রথমে না করেছে, পরে তাকে বন্দুক ধরে নিয়ে গেছেন। এভাবে দেশ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করা যাবে না।
গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আজকে বদলে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, জোর করে বলা হচ্ছে এটাই গণতন্ত্র। শোষণ করবে, নিপীড়ন করবে, অন্যের অধিকার হরণ করবে। এখন ক্ষমতায় যাওয়ার বৃত্ত তৈরি করা এবং সেই বৃত্ত দিয়ে আরও বেশি শোষণ করার রাজনীতি চলছে। রাজনীতিকে নতুন করে ভাবতে হবে। আজকে ব্যাংকিং ব্যবস্থা, অর্থনীতি, সমস্ত প্রতিষ্ঠান শেষ। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রের স্তম্ভ ধ্বংস করা হয়েছে। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর রাজনীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তিনি সব সময় দেশের কৃষক-শ্রমিকসহ সকল মানুষের মুক্তির জন্য রাজনীতি করেছেন, আন্দোলন করেছেন। কিন্তু এখন পৃথিবী ও রাজনীতি বদলে গেছে। রাজনীতির লক্ষ্য বদলে গেছে। একটা সময় ছিল যখন মানবতার বিরুদ্ধে কিছু ঘটলে সমগ্র বিশ্বের বিবেক এক হয়ে যেত। চীন এবং রাশিয়া আজকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ভারতও নিয়েছে। এটা কল্পনা করা যায় না। লাখ লাখ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে মারা যাচ্ছে। তারা সমাজতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু আজকে তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।