Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের মাহমুদনগর

| প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আতাউর রহমান আজাদ, টাঙ্গাইল থেকে : টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নব গঠিত মাহমুদ নগর ইউনিয়নটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরবাসীর ইউনিয়ন এটি। প্রতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ে এর অধিকাংশ যমুনার গ্রাসে চলে গেছে। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এখানকার বাসিন্দারা। সহায়-সম্বল হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন অসংখ্য পরিবার। শত প্রতিশ্রæতির পরেও কেউ এগিয়ে আসেনি সর্বহারা এসব অসহায় পরিবারগুলির পাশে। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে পার্শ্ববর্তী কাতুলী ইউনিয়নটি ভেঙে এই মাহমুদ নগর ইউনিয়নটি গঠন করা হয়। এই ইউনিয়নে ২২টি গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশই যমুনা নদীর মাঝে অথবা তীর এলাকার চরাঞ্চল। বর্ষা মওসুম শেষ হলেও ভাঙনের কবল থেকে মুক্তি পায়নি এখানকার বাসিন্দারা। ভাঙন কবলিত এলাকার মধ্যে কুকুরিয়া, নয়াপাড়া, সরাতৈল, টিয়াপাড়া, হরিপুর, চিতুলিয়া, নেওরগাছা, বালিয়াপাড়া, কেশব নগর, মাকরকোল এসব এলাকার অনেকাংশই নদী গর্ভে চলে গেছে। ফলে মাহমুদ নগর ইউনিয়নটি ক্রমান্বয়ে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এরই সাথে প্রতিবছর সর্বস্ব হারিয়ে নিঃশ্ব হচ্ছে হাজারো পরিবার। কেশব নগর গ্রামের ষাটোর্দ্ধ গৃহবধূ রোকেয়া বেগম বলেন, নিজের বলতে কোন জায়গা জমি আর অবশিষ্ট নেই। যা ছিলো সব যমুনার পেটে চলে গেছে। এখন পরের জমিতে ঘর তুলে থাকতে হচ্ছে। আব্দুল মজিদ নামে এক কৃষক বলেন, তিন বছর আগে ভাঙন শুরু হলে অন্যের জমিতে গিয়ে আশ্রয় নেই। এবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে ছয়বার যমুনা আমাদের সর্বস্ব গ্রাস করলো। এখন কোথায় যাবো বুঝতে পারছিনা। নাজমুল হাসান নামে একজন বলেন, যখন ভাঙন শুরু হয় তখন ঘর-বাড়ি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকেনা। মুহুর্তের মধ্যে সবকিছু নিয়ে চলে যায় যমুনার উত্তাল স্রোত।
লাভলী আক্তার নামে অপর এক গৃহবধূ বলেন, প্রতি বছর ঘর-বাড়ি হারালেও আমাদের দেখার মতো কেউ নেই। অনেকেই নানা রকম প্রতিশ্রæতি দেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না। মাহমুদ নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ করিম তালুকদার বলেন, এই ইউনিয়নটি সবচেয়ে অবহেলিত ইউনিয়ন। প্রতি বছর অসংখ্য পরিবার সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়। কিন্তু তাদের সাহায্যার্থে তেমন কোন সহায়তাই পাওয়া যায়না। যে টুকু পাওয়া যায় তা খুবই নগন্য। জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন বলেন, মাহমুদ নগর ইউনিয়নটি প্রতি বছরই ভাঙনের কবলে পড়ে। এখানকার দুর্গত মানুষের জান-মাল রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার আহŸান জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ