বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
তাবলীগে চলমান সঙ্কট নিরসনে আয়োজিত রাজধানী উওরার পরামর্শ সভায় দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, একটি মহল দেশের আলেম সমাজ ও তাবলীগকে মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে। আমরা দিল্লীর ফিতনা বাংলাদেশে আসুক তা চাই না। মসজিদে মসজিদে, মহল্লায় মহল্লায় যেনো দ্বীনদার লোকদের মধ্যে গ্রæপিং না হয়, এ বিষয়ে সরকারকে দৃষ্টি রাখতে হবে। ১১ নভেম্বর উত্তরা ১৪ নং সেক্টর আয়েশা মসজিদ চত্বরে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথি হিসেবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমাদ শফী’র উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। শারীরিক কারণে তিনি উপস্থিত হতে না পারলেও বাণী প্রেরণ করেছেন। সভায় বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা আবদুল কুদ্দস, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মুফতি হিফজুর রহমান, মাওলানা আব্দুল হক হক্কানী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মুফতী মাসউদুল করীম, মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আজহারীসহ দেশের শীর্ষ আলেমে দ্বীন ও নেতৃবৃন্দ। ময়মনসিংহের মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জি ও কিশোরগঞ্জের মাওলানা আনোয়ার শাহ একাত্মতা ঘোষণা করে লিখিত বক্তব্যসহ প্রতিনিধি প্রেরণ করেন। আল্লামা শফী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘যে বিষয় নিয়ে আজ আমরা সারাদেশের আলেম প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়েছি, মাওলানা সাদের বক্তব্য প্রত্যাহার না করা ব্যতীত এবং দারুল উলুমের আস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত তাকে যেন বাংলাদেশে আসতে না দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামকে সোচ্চার থাকতে হবে। আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী বলেন, তার নিজের কথা ও ভ‚মিকা থেকে প্রমাণিত যে, দিল্লীর সাদ সাহেব আহলে হাদীস, মওদুদীবাদ, বাতিল ফিতনা ও দেওয়ানবাগীর সম্মিলিত ফিতনার সমান। তাকে আমি ইসলাম বিরোধী শক্তির এজেন্ট মনে করি। তিনি মুসলিম বিশ্বে অবাঞ্ছিত। বাংলাদেশেও তাকে উলামায়ে কেরাম অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেছেন। মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, দেওবন্দের সাথে সমঝোতা না করা পর্যন্ত মাওলানা সাদকে যেন বাংলাদেশে আসতে দেওয়া না হয়। দীর্ঘ বক্তব্যে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক মাওলানা সাদের ইসলাম বিরোধী আকিদা ও বক্তব্য সম্মেলনে তুলে ধরেন। মাওলানা মাহফুজুল হক তাবলীগ জামাতের সংকটের ইতিহাস, আলেম সমাজের ঐক্যপ্রয়াস ও কতিপয় তাবলীগী ব্যক্তির অসৎ আচরণ এবং প্রশাসনকে প্রভাবিত করার কথা তুলে ধরেন। পীর আব্দুল হামিদ বলেন, আলেম সমাজ তাবলীগের বিরোধী নয়। তাবলীগ আলেম সমাজেরই সৃষ্টি। বর্তমানে দিল্লী মারকাজে মাওলানা সাদ ফিতনা করতেছেন। ঢাকায় সবাই ঠিক আছে কেবল মারকাজের তিন ব্যক্তি তাবলীগ নিয়ে খেলা করছেন। কাকরাইলে অস্ত্রের মহড়া হচ্ছে। স্বার্থ হাসিলে তারা ঘুষ প্রদান ও মিথ্যাচার করছেন। সংশোধন না হলে দেশের আলেম সমাজ ও তাবলীগী জনগণ তাদের বয়কট ও বিতাড়িত করবে। সভায় বক্তাগণ তাবলীগ জামাতকে মাওলানা ইলিয়াছ, মাওলানা ইউসুফ ও মাওলানা ইনামুল হাসানের নীতির উপর ফিরিয়ে আনার আহŸান জানান। সভাপতির বক্তব্যে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, বাংলাদেশে তাবলীগের প্রথমদিককার তিন হযরতজির নিয়ম চলবে। মুরব্বীদের অনাস্থাভাজন ও বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত মাওলানা সাদের তাবলীগ এদেশে চলবেনা। আল্লামা শফীর নেতৃত্বে দেশের আলেম সমাজ এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ।
সম্মেলনে ঘোষণাপত্রে ৩ টি বিষয় বলা হয়: ১.মাওলানা সাদের সকল বিতর্কিত বিষয়ের বিরুদ্ধে দারুল উলুম দেওবন্দের যে অবস্থান, বাংলাদেশের ওলামা এর সাথে একমত। ২. চলমান পরিস্থিতে মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আগমন করলে এদেশের দ্বীনি অঙ্গনে ফেৎনা সৃষ্টির আশংকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এবং ওলামায়ে কেরাম কর্তৃক গৃহিত পদক্ষেপকে এ মাহফিলের পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হচ্ছে এবং সকল ক্ষেত্রে দ্রæত কার্যকর করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ৩. সারা বিশ্বে প্রকাশমান এ সঙ্কটে মাওলানা সাদ এর ব্যাপারে দারুল উলূম দেওবন্দ, সাহারানপুর এবং আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম সহ সারা বিশ্বের সকল ফতওয়া বিভাগ আস্থা প্রকাশ করার পূর্ব পর্যন্ত তাকে তাবলিগি কোন কাজে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে এক্ষেত্রে তাকে তার ভুলের জন্য প্রকাশ্য স্বীকারোক্তিমূলক ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং তার অনুসারীদের নিয়ে এ গোমরাহীর পথ ছেড়ে আসতে হবে। সম্মেলনে বিশৃংখলা এড়াতে সরকার ও প্রশাসনকে আলেম সমাজের দাবীর আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।