Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে গ্রন্থ ই-বুক অ্যাপের উদ্বোধন মন্ত্রিসভায়

আবহাওয়া আইন চূড়ান্ত অনুমোদন -চিনি আইনের খসড়া স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের উপর একটি বিশ্লেষণধর্মী গ্রন্থ, সেটির ই-বুক ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাবঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য। এদিকে মন্ত্রিসভায় আবহাওয়া আইনের খসড়া চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাস্তবে কার্যকারিতা না থাকায় চিনি (রাস্তাঘাট উন্নয়ন উপকর) আইন-২০১৭ এর খসড়া স্থগিত করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের শুরুতেই জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ থেকে নির্বাচিত ২৬টি বাক্যের উপর বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ রাজনীতির মহাকাব্য শিরোনামে গ্রন্থের তিন ধরনের সংস্করণের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি যথাযথভাবে উপস্থাপনের লক্ষ্যে তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি বিভাগ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ : রাজনীতির মহাকাব্য গ্রন্থটির পরিকল্পনাকারী ও প্রধান উপদেষ্টা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন চিত্রশিল্পী হাশেম খান।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে বাছাই করা ২৬টি বাক্যের বিশ্লেষণ করেছেন মুস্তফা নূরউল ইসলাম, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, এস এ মালেক, সেলিনা হোসেনসহ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও লেখক। বিশ্লেষণধর্মী এই গ্রন্থের মুখবন্ধ লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গ্রন্থটির ইলেকট্রনিক ভার্সন অর্থাৎ ই-বুক গুগল প্লেস্টোর ও অ্যাপল স্টোরে বিদ্যমান শীর্ষক অ্যাপের মাধ্যমে পাঠ করা যাবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বইটির মোড়ক উন্মোচন, ই-বুক ও মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধনের পর উচ্ছ¡াস প্রকাশ করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ষড়যন্ত্রকারীরা পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন আমাদের দুটো প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা, ৭ই মার্চের ভাষণ, মহান মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। পলক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সোনার বাংলার আধুনিক রূপ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখন তরুণ প্রজন্মকেও সামনে এগিয়ে যেতে, তাদের আত্মবিশ্বাস সুদৃঢ় করতে এবং তাদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের গৌরবগাঁথা পৌঁছে দেয়া একান্ত কর্তব্য ভেবেছি। ৪৬ বছর আগে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতাকামী সাত কোটি মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
মন্ত্রিসভায় আবহাওয়া আইন চ‚ড়ান্ত অনুমোদন
আবহাওয়া আইনের খসড়া চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অন্যদিকে বাস্তবে কার্যকারিতা না থাকায় চিনি (রাস্তাঘাট উন্নয়ন উপকর) আইন-২০১৭ এর খসড়া স্থগিত করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনটি অনুমোদন না দিয়ে স্থগিত করায় কৃষকের ওপর থেকে করের বোঝা নেমে গেল। না হলে চিনিকল এলাকার রাস্তাঘাটের জন্য তাদের কাছ থেকে ট্যাক্স নেয়া হতো।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ২২ আগস্ট আবহাওয়া আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আবহাওয়া সংক্রান্ত কোনো আইন আমাদের ছিল না। এটা নতুনভাবে প্রণীত বহুল প্রত্যাশিত একটি আইন। পুরনো বিষয়গুলো নিয়ে নতুন আইনটি করা হয়েছে। এগুলো অলরেডি চলমান আছে। এ আইনের মাধ্যমে বিদ্যমান আবহাওয়া অধিদফতরকে একটি আইনি কাঠামো দেয়া হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে ৩১টি ধারা রয়েছে। তিনি বলেন, অধিদফতর যেভাবে গঠন করা হয় এটি সে জাতীয় আইন। এখানে আবহাওয়ার সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া ঘটনা নামে একটি অংশ রয়েছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানী, ভ‚মিকম্প, সুনামি কাকে বলা হবে, সে সংজ্ঞা আইনে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী আবহাওয়া অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় হবে ঢাকায়। এ ছাড়া আইনে অধিদফতরের কার্যাবলি, সেবা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিষয়ে বলা হয়েছে। মহাপরিচালকের নিয়োগ ও কাজের বিষয়ে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভা চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। তবে আইনের ফলে অধিদফতর পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আসবে না। আগের মতোই পরিচালিত হবে। অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা আবহাওয়া অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন, আইন কার্যকর হলে আগের মতোই তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
চিনি আইন স্থগিত করেছে মন্ত্রিসভা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, চিনি (রাস্তাঘাট উপকর) আইনের খসড়াটি এর আগে মন্ত্রিসভায় এসেছিল, নীতিগত অনুমোদনও দেয়া হয়। আজ চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হলে আইনের বাস্তব কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করা হয়। কিন্তু বর্তমানে এর কার্যকারিতা না থাকায় আইনটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়। তিনি জানান, আইটি অনেক পুরনো। ১৯৬০ সালে পাকিস্তান আমলের একটি অর্ডিনেন্স। আইনে বলা হয়েছে, সুগারমিল এলাকায় রাস্তাঘাটের উন্নয়নের জন্য চিনিকল সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে উপকর নেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, চিনিকল এলাকায় যেসব রাস্তাঘাট রয়েছে, তার উন্নয়ন করছে স্থানীয় সরকার, পানিসম্পদ উন্নয়নসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। তাই পাকিস্তান আমলের এই আইনটি বর্তমানে কার্যকর না। তা ছাড়া আইনটি অনুমোদন দেয়া হলে চিনিকল সংশ্লিষ্ট কৃষকদের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপবে। কৃষকদের হয়রানির কথা চিন্তা করে আলোচনা-পর্যালোচনা শেষে আইনটি চ‚ড়ান্ত অনুমোদন না দিয়ে স্থগিত করে সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ