Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় নবনির্মিত ১৫ সেতু-কালভার্ট জনগণের কাজে আসছে না

সংযোগ সড়কের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ার সারিয়াকান্দির পল্লী জনপদে নবনির্মিত ১৫ টি সেতুর পাশাপশি সংযোগ সড়ক (এ্যাপ্রোচ রোড) তৈরী না করায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুগুলো মানুষের যাতায়াতে কোন কাজেই আসছে না। অভিযোগ রয়েছে , কোন কাজ না করে সংযোগ সড়কের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় কোটি টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে গ্রামীণ রাস্তায় সেত ু/ কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেত ু/ কালভার্টগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
সংশ্লিস্ট সুত্রে জানা যায়, সেতু ও কালভার্ট নির্মানের বরাদ্দ ৬ কোটি টাকার মধ্যেই অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা সেতুর নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে বিকল্প রাস্তা এবং সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ছিল। প্রকল্প কাজের এাষ্টিমেট অনুযায়ী কাঠের খুঁটি এবং বিটুমিন ড্রাম সিট দিয়ে পাইলিং করে মাটি ভরাট করে সেতুর উভয় পাশে দুশ’ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এর ফলে সংযোগ সড়কের অভাবে ওই সেতুগুলো জনসাধারণের যাতায়াতে কোন কাজে আসছে না।
খোজ নিয়ে দেখে গেছে প্রকল্পভুক্ত ১৫টি সেতুর মধ্যে পূর্ব শোনপচা আশ্রয়ণ প্রকল্প হতে হাজিপাড়া স্কুল পর্যন্ত রাস্তায় আশ্রয়ণের পূর্ব পাশে যমুনার একটি খালের উপর ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়।
কিন্তু নিয়ম মাফিক সেতুর পাশাপাশি পাইলিং করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় বিগত বন্যার সময় ¯্রােতের তোড়ে সেতুটি বিধ্বস্ত হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই খালের উপর নির্মিত সেতুটি টেকসই করতে হলে অন্তত একশ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে সেতু নির্মাণ করা উচিত ছিল। বোহাইল বাজারের পূর্ব পাশে নির্মিত সেতুরও কোন সংযোগ সড়ক করা হয়নি। বোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, আমি নিজে জনস্বার্থে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে পাইলিং ও মাটি কেটে সেতুটি যাতায়াতের উপযোগী করি। এটা না করলে বন্যার সময় সেতুটি শোনপচার সেতুর মতোই বিধ্বস্ত হতো। উত্তর শংকরপুর একটি পুরাতন বিধ্বস্ত সেতু ভেঙ্গে ফেলে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই সেতু নির্মাণে পুরাতন সেতুর রড এবং উপকরণ ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।্ হাওড়াখালির সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় লোকজন চলাচল করতে পারত না। কামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল ইসলাম জানান, আমি বাধ্য হয়ে কাবিখা প্রকল্প দিয়ে সেখানে মাটি কেটে যাতায়াতের উপযোগী করে দিয়েছি।
উল্লেখ্য ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরেও একই সংস্থার অধীন এই উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে ৯ টি সেতু নির্মাণের পাশাপাশি সংযোগ সড়ক না করায় সেতুগুলো দীর্ঘ দিন অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। পরবর্তীতে কাবিখা ও ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মসূচি দিয়ে নামকাওয়াস্তে মাটি কেটে রাস্তা করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে এবারও একই কৌশলে সংযোগ সড়কের বরাদ্দ টাকা মেরে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সারওয়ার আলমের সংগে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অপারগ বলে জানান ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ