রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
গোপালগঞ্জ থেকে মো. অহেদুল হক : তিন জেলায় আমন মৌসুমে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বন্যা ও খরাসহিষ্ণু ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষক।
আকস্মিক বন্যাসহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত বিনা-১১ প্রতি হেক্টরে ৫.৪১ টন ফলেছে। এ ছাড়া স্বল্প সময়ে খরাসহিষ্ণু উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের জাত বিনা-১৭ (গ্রিন সুপার রাইস) ধান ৫.৮৯ টন উৎপাদিত হয়েছে।
প্রচলিত আমন জাতে গাছফড়িং বা কারেন্ট পোকা আক্রমণ করে। কিন্তু এ দু’জাতের ধানে গাছফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ করেনি। প্রচলিত জাতে প্রতি হেক্টরে মাত্র দেড় টন ধান উৎপাদিত হয়। পক্ষান্তরে এ দু’জাতে প্রচলিত জাতের তুলনায় অন্তত সাড়ে তিনগুণ বেশি ধান ফলেছে। স্বল্প সময়ে উচ্চ ফলনশীল এ দু’জাতের ধানে সার ও সেচ কম লাগে। তাই কৃষক এ জাতের ধান আবদ করে লাভবান।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকেরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক পরিতোষ মন্ডলের জমিতে উৎপাদিত এ দু’ জাতের ধান কেটে পরিমাপ করে ভালো ফলন পাওয়া গেছে বলে গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র জানিয়েছে।
গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র আরো জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও বাগেরহাট জেলার ১৬ একর জমিতে বিনা-১১ ধানের ৩০টি প্রদর্শনী প্লট করা হয়। এ ছাড়া ওই তিন জেলার ২৫ একরে ৩৮টি প্রদর্শনী প্লটে কৃষক বিনা-১৭ ধানের আবাদ করেন। প্রত্যেক জেলায় এ ধানের ট্রায়ালে সাফল্য এসেছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকেরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক পরিতোষ মন্ডল আরো বলেন, বিনা ধান-১১ জমিতে রোপণের পর আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। প্রায় ২০-২২ দিন এ ধান পানির নিচে ছিল। ধানগাছের গোড়ায় পচন ধরে। এতে আমি হতাশ হয়ে যাই। পরে জমি থেকে পানি নামতে শুরু করায় ধান গাছ নতুন করে কুশি ছাড়ে। এ জমিতে মাত্র ১২০ দিনে এ জাতের ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছি। এ ছাড়া এ ধানে গাছফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়নি। প্রতি বছর এ ধান চাষ করে একই জমিতে তিনটি ফসল ফলানে যাবে।
বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার আটজুড়ি গ্রামের কৃষক প্রহল্লাদ হীরা বলেন, আমি খরাসহিষ্ণু স্পল্প সময়ের বিনা ধান-১৭ আবাদ করেছি। এ ধান মাঠে রোপণ থেকে পাকতে সময় লেগেছে মাত্র ১১০ দিন। এ ধান খরায় পুড়েছে। তারপরও বৃষ্টি পাওয়ার সাথে সাথে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভালো ফলন দিয়েছে। এ ধানে সার ও সেচ খুবই কম লাগে। এ কারণে এ ধান আবাদ করে লাভবান হয়েছি। আমাদের দেখাদেখি অনেকেই এ ধানের আবাদে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিএডিসির মাধ্যমে এ জাতের ধানের বীজ কৃষকের হাতে পৌঁছে দিলে কৃষক বিনা ধান চাষ করে উপকৃত হবেন বলে তিনি জানান।
গোপালগঞ্জ বিনা উপ-কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শেফাউর রহমান বলেন, আমরা বিনামূল্যে কৃষককে এ দু’ জাতের ধান দিয়েছি। তারা মাঠে প্রদর্শনী প্লট করে ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। এ ধানে গাছফড়িং পোকার আক্রমণ হয়। বন্যা ও খরার মতো প্রতিক‚লতায় পড়েও এ ধান ভালো ফলন হয়েছে। এ ধানের আরো বেশি ফলন দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। প্রচলিত জাতের তুলনায় এ ধানের ফলন তিনগুণেরও বেশি হয়েছে। তাই প্রদর্শনী প্লট দেখে তিন জেলার কৃষক এ জাতের ধান আবাদে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, আমন মৌসুমে বিনা উদ্ভাবিত বন্যা ও খরাসহিষ্ণু স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন উচ্চফলনশীল জাত ট্রায়ালে তিন জেলায় ভালো করেছে। এ ধান আবাদ করে কৃষক লাভবান হয়েছেন। আমন মৌসুমে দেশে ধানের উৎপাদর বৃদ্ধিতে এ ধান ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।