পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কে হচ্ছেন দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি। ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের পরই আদালত অঙ্গণে চলছে জোড় আলোচনা। প্রথা অনুযায়ী আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতির প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কথা। এ নিয়ে উচ্চ আদালত থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে জল্পনা-কল্পনা। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ বিশ্লেষণে দেয়া যায়, আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার প্রথা যেমন রয়েছে তেমনি তাঁকে ডিঙিয়ে অপেক্ষাকৃত কনিষ্ঠ বিচারপতিকে নিয়োগ দেয়ারও নজির রয়েছে। প্রধান বিচারপতি কার্যভাররত বিচারপতি মো, আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা নিয়োগ দেয়া হবে, না আপিল বিভাগের অন্য কোন বিচারপতিকে নিয়োগ দেয়া হবে তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের মধ্যেও চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা।
সংবিধান অনুযারী অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট আপিল বিভাগের যে কোনো বিচারপতিকেই প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দিতে পারেন। এ কারণে পুরো বিষয়টি এখন প্রেসিডেন্ট ওপর নির্ভর করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, প্রধান বিচারপতিকে হবেন তা নির্ভর করছে প্রেসিডেন্ট সিদ্ধান্তেরওপর। প্রেসিডেন্ট কাকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন তা তিনিই জানেন। আমোদের সংবিধান ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা কেবল প্রেসিডেন্ট। তিনি আরো বলেন, স্বাভাবিকভাবে আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। আমি মন করি এবারও সুপারসিড (সিনিয়রটি লঙ্ঘন) হবে না। সিনিয়র ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হলে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিই পরবর্তী ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২/৩ মধ্যে সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করবেন। আজকালের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল প্রস্তুুত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে প্রেসিডেন্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা যায়, আপিল বিভাগে বর্তমানে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। ক্রম অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো, আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা এক নম্বরে, দ্বিতীয় সিনিয়র বিচারক হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং তৃতীয় অবস্থানে আছেন বিচারপতি মো. ইমান আলী। এছাড়া ক্রম অনুযায়ী আরো আছেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর অবসরে যাবেন। বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবসরে যাবেন। বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দায় ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসরে যাবেন। ২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ছুটির যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা দায়িত পালন করছেন। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। অতীত কর্মকান্ড নিয়েও আলোচনা করছেন তারা। গত শনিবার প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার পর বিষয়টি নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়। সিনিযর বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নামটি সবচেয়ে সিনিয়র হিসেবে আলোচনায় আছে। এই বিচারপতি ১৯৮৮-৮৯ এবং ১৯৮৯-৯০ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর পর ২০০১ সালের ২৪ অক্টোবর তিনি একই বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
এছাড়াও আলোচনায় আছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন। আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আমলে ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর পর ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের আলোচনায় আছে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নামও। তিনি ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এবং ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ বিশ্লেষণে দেয়া যায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর দেশের ১৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসরে যান বিচারপতি এম এম রুহুল আমিন। এরপর আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিযর বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করীমকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলামকে দেশের ১৭তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম ৪৭ দিন দায়িত্ব পালন করার
পর ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অবসরে যান। এরপর ১৮তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করীমকে। তিনি অবসরে যাওয়ার পর আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি এম এ মতিন ও বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়।
সিনিয়র লংঘন করে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার ঘটনা বিগত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার এবং তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলেও ঘটেছে। ২০০৭ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলেও বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি এম এম রুহুল আমিনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছিল। তারও আগে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ও বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমকে ডিঙ্গিয়ে বিচারপতি কে এম হাসান ও বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেনকে পর্যায়ক্রমে দেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়।
এরপর আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. রুহুল আমিনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন অবসরে যাওয়ার পর বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানাকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার কথা উঠেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সিনিয়রদের ডিঙ্গিয়ে অপেক্ষাকৃত জুনিয়রকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।