পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সউদী আরবে ৪ নভেম্বর ও তার পরবর্তীতে সউদী শাহজাদাগণ, উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার দেশটি প্রতিষ্ঠার ৮৫ বছরের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তনকে তুলে ধরেছে। কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এ সব ঘটনার প্রেক্ষিতে রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নতুন গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, দুর্নীতি দমন অভিযানে শাহজাদাগণসহ বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের ঘটনা দেশটিতে অভ্যন্তরীণ বিরোধের আশংকা আরো বৃদ্ধি করতে পারে। কারণ এ গ্রেফতারকে রাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের নেপথ্য কারিগর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষমতা সংহত করার পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাপকভাবে দেখা হচ্ছে।
এমবিএস নামে পরিচিত ৩২ বছর বয়স্ক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও সিনিয়র উপদেষ্টা জেয়ার্ড কুশনারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প নিজে বাদশাহ সালমানের সাথে সম্পর্কের পাশাপাশি তার প্রশংসা করেছিলেন এবং তার প্রথম রাষ্ট্রীয় বিদেশ সফর শুরু করেছিলেন সউদি আরব দিয়ে।
কাতার ঘটনা ও ইয়েমেনে সউদী নেতৃত্বাধীন হামলার ফলে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়সহ সউদী আরবের কিছু নীতি সত্তে¡ও ট্রাম্প প্রশাসন দেশটির সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছে যা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সাবেক সিআইএ বিশ্লেষক ও এখন আরব উপসাগর রাজনীতিতে বিশেষজ্ঞ ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট -এ ফেলো লোরি প্লটকিন বোগহার্ড বলেন, আমি বলব যে এমবিএসের কিছু কর্মকান্ড আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রতি যে হুমকি সৃষ্টি করেছে সে বিষয়ে মার্কিন সরকারের অন্যান্যরা উল্লেখযোগ্য ভাবে উদ্বিগ্ন।
এ সব কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ সউদী আরবের সাথে যুক্তরাষ্ট্র্রের আরো ঘনিষ্ঠতার মধ্যে বিপদ দেখে থাকতে পারেন, কিন্তু তারা সউদী আরবের প্রতি হোয়াইট হাউসের প্রধান সমর্থকদের সমর্থন বন্ধ করতে সক্ষম নন।
বিশ্লেষকরা ইয়েমেন যুদ্ধে ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেন, বিশেষ করে যদি তা ওয়াশিংটনকে অপকর্মের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করে , তাহলে এ যুদ্ধ সন্ত্রাসী নিয়োগের ক্ষেত্র হয়ে ওঠার জোর সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। এদিকে সউদী আরব ক্রমাগত ইরান বিরোধী কথাবার্তা জোরদার করে চলেছে। তারা ৪ নভেম্বর রিয়াদ বিমান বন্দরের কাছে ইরান সমর্থিত হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপকে যুদ্ধের কাজ বলে আখ্যায়িত করতে চলেছে।
কাতারের সাথে বিরোধ ইরানের জন্য উপসাগরে বিরোধের বীজ বপনের সুযোগ সৃষ্টি করছে , পৃথকভাবে তা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জন্য সমস্যামূলক হবে। আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় সামরিক হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কাতারে তার সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, সউদী আরবের এ সব পদক্ষেপ দেশটির সাথে ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠতা হ্রাস বা জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্বেগ কমাতে পারবে বলে মনে হয় না।
বোগহার্ড বলেন, সউদী আরবের এ সব অসচরাচর কর্মকান্ড , নতুন ধরনের নীতির ফলে যে ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে সে ব্যাপারে হোয়াইট হাউস আসলে অখুশি নয়।
ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট-এ উপসাগর ও জ¦ালানি নীতি কর্মসূচির পরিচালক সাইমন হেন্ডারসন বলেন, আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমবিএসের উপর তার চিপগুলো রাখছেন, তবে তা আনুষ্ঠানিকভাবে নয় যা পেন্টাগণ বা পররাষ্ট্র দফতর করে।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই এ উদ্বেগ নেই্। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সংবাদপত্রে ফাঁস হওয়া জার্মান গোয়েন্দা রিপোর্টে মোহাম্মদ বিন সালমানকে, যিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও অর্থনৈতিক সংস্কারের নেতৃত্বদানকারী, তার তারুণ্য, অনভিজ্ঞতা ও উচ্চাকাক্সক্ষার প্রেক্ষিতে তাকে মধ্যপ্রাচ্যে একটি সম্ভাব্য অস্থিতিশীল শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেন।
মূলত ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তার পিতা ক্ষমতায় আসার পর বিন সালমান অধিকতর আগ্রাসী কিছু পদক্ষেপে সংশ্লিষ্ট হন। ইয়েমেনে সউদী নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ, কাতারকে বিচ্ছিন্ন করা , সউদী অর্থনীতির সংস্কার , সউদী নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমোদন এবং সর্বশেষ দুর্নীতি দমন অভিযানে বহু গ্রেফতারের পিছনে আছেন তিনিই।
শাহজাদা ও তার পিতা হোয়াইট হাউসের নতুন টিমের সম্পর্কের জন্য বিপুল বিনিয়োগ করেছেন । বাদশাহ সালমান তার তরুণ পুত্রদের একজনকে ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেছেন। অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান কুশনারের সাথে তার সম্পর্ক শান দিচ্ছেন।
মে মাসে ট্রাম্পের সউদী আরব সফরের ব্যাপারে কুশনার যুবরাজের সাথে কাজ করেন, ১১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তি স্বাক্ষরে সহায়তা করেন। তিনি আগস্ট ও অক্টোবরে সউদী আরব সফর করেন।
বোগহার্ড বলেন, এ ধরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে সে চেষ্টা যাতে ট্রাম্প দেখেন যে এ অঞ্চলে কারা ভালো লোক, কারা খারাপ লোক , কাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক রাখা উচিত, কারা গোলযোগ সৃষ্টিকারী। তিনি বলেন, তারা অত্যন্ত সফল হয়েছে।
এর অর্থ ইয়েমেনে সউদী নেতৃত্বাধীন যুদ্ধের প্রতি অব্যাহত সমর্থন।
বোগহার্ড বলেন, কোনো সমাধান ছাড়া যুদ্ধ যতদিন চলতে থাকবে সেখানে মানবিক ট্রাজেডির জন্য তাকে আরো তত জোরালোভাবে তাদের অপকর্মের সহযোগী হিসেবে দেখা হবে, দেখা হবে যে বেসামরিক লোকদের জীবন রক্ষায় যথেষ্ট কিছু করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা বেসরকারী ভাবে যে উদ্বেগের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেন যে সউদী আরবের সাথে কাতারের বিরোধকে ইরান উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) ও এ অঞ্চলে মার্কিন নিরাপত্তা বিঘিœত করতে ব্যবহার করতে পারে।
হেন্ডারসন বলেন, এটা স্পষ্ট যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের হতাশা প্রকাশ সত্তে¡ও ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস এমবিএস এবং উপসাগরীয় মিত্রদের অবস্থানকে সমর্থন করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।