বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে : ইচ্ছার বিরুদ্ধে মা বিয়ে ঠিক করেছেন এসএসসি পরীক্ষার্থীর। বিয়ের কথাবার্তাও পাকাপাকি। শুধু বিয়ের আনুষ্ঠানিকতাই বাকি ছিল। কিন্তু এটা যে বাল্যবিয়ে, সেটি বুঝতে পেরেছে ছাত্রীটি। উপায়ন্ত না দেখে বাল্যবিয়ে ঠেকাতে নিজেই উদ্যোগী হলো সে। নিজের বিয়ে ঠেকাতে অভিযোগ নিয়ে একের পর এক ছুটে গেলেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে। শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকালেন ওই শিশুটি। এ ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়। প্রতিবাদী এই ছাত্রীর নাম উম্মে হাবিবা। বয়স মাত্র ১৬। সে উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের দলইনগর গ্রামের প্রবাসী আবুল বশর বাবুলের মেয়ে। সে দলইনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবি ছাত্রী। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় তার অংশগ্রহণের কথা ছিল।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক পিন্টু নন্দী বিষয়টি স্বীকার করে বলেন ‘শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবার মা রাশেদা আকতার মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর পাত্রের সাথে বিয়ের কথা চূড়ান্ত করেন। বিয়েটি ঠেকাতে স্কুলছাত্রী বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে স্কুলে এসে আমাকে জানান। আমি বিষয়টি স্কুলের কো-অপ্ট সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাশিকে অবহিত করি। তিনি স্কুলে আসলে ছাত্রীটি তাকেও সেটি জানান। এরপর বিকেল ৩টার দিকে চেয়ারম্যান ও স্কুলের এক শিক্ষকের সঙ্গে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হোসেন রেজার কাছে নালিশ দেন ছাত্রী উম্মে হাবিবা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেয়ের মাকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে ওই বিয়ে বন্ধ করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাশি ওই প্রসঙ্গে বলেন, মেয়ের বাবা বিদেশ থাকেন। ওই সুযোগে মা রাশেদা আকতার তার স্কুল পড়–য়া মেয়ের সঙ্গে রাউজান পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মোবারকখীল এলাকার তাজুল ইসলামের দুবাইপ্রবাসী ছেলে মো. ফখরুলের বিয়ের কথা পাকাপাকি করেন ইতিমধ্যে। ওই পাত্রের সঙ্গে গতকাল শুক্রবার গোপণে আকদ হওয়ার কথা ছিল মেয়েটির। কিন্তু বিয়েতে অমত ছিল মেয়ের। একারণে স্কুল শিক্ষার্থী নিজেই আমাদের সহায়তা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এসে বিয়ে ঠেকাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রেজার কাছে স্বহস্তে লিখিত আবেদন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রেজা বৃহস্পতিবার রাত সোয়া আটটার দিকে বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে ঠিক করার অভিযোগ পেয়ে তার মাকে সন্ধ্যায় আমার দপ্তরে ডেকে আনি। বিয়ে যাতে না হয়, সেজন্য তার কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। স্কুল শিক্ষার্থী তার লেখাপড়া চালিয়ে যাবে। এসএসসি পরীক্ষা দিবে।
প্রসঙ্গত, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধকারী স্কুল শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লেখা বিয়ে বন্ধের আবেদনে লিখেন, আমি বাল্য বিবাহের শিকার। তাই আমাকে এই বাল্য বিবাহের হাত থেকে রক্ষা করে পড়ালেখা করার সুযোগ দিলে আমি আপনার নিকট কৃতজ্ঞ থাকিব। আমি পড়ালেখা করে দেশের সেবা করতে চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।