Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ

মঠবাড়িয়ায় পিতার হাতে জিম্মি শিশুকে উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : মঠবাড়িয়ার বকসির ঘটিচোরা গ্রামে যৌতুকের দাবিতে পাষন্ড পিতা শহিদুল ইসলামের হাতে জিম্মি অবস্থা থেকে দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ। গত বুধবার বিকালে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলামের বাড়ি থেকে ৯ দিন পর শিশু রাবেয়াকে উদ্ধার করে তার মা লিমা বেগমের (২০) কোলে ফিরিয়ে দিলে এক আবেঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার খায়ের ঘটিচোরা গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রশিদের মেয়ে লিমা বেগমের সাথে উপজেলার বকসির ঘটিচোরা গ্রামের নয়া মিয়ার ছেলে মো. শহীদুল ইসলামের পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় শহীদুলকে ৭৬ হাজার টাকাসহ অন্যন্য মালামাল প্রদান করে লিমার পরিবার। গত সাত মাস আগে লিমার কোল আলো করে রাবেয়া নামে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। স¤প্রতি তার স্বামী শহীদুল ব্যবসার কথা বলে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শশুড় বাড়ির কাছে। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শহিদুল স্ত্রীর ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। গত ৩০ অক্টোবর শহীদুল ও লিমার যৌতুকের টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায় শহীদুল দুগ্ধপোষ্য শিশু কন্যাকে আটকে রেখে স্ত্রী লিমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। শিশু সন্তানকে উদ্ধারের জন্য বহু চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে আদালতে প্রতিকার চেয়ে শিশুটির মা বাদি হয়ে অভিযুক্ত স্বামী শহিদুল ও শ্বশুড় নয়া মিয়াকে আসামী করে গত ৭ নভেম্বর মঠবাড়িয়া আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত শিশুটিকে উদ্ধার করে আদালতে হাজিরের জন্য মঠবাড়িয়া থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়। গত বুধবার বিকালে আদালতের নির্দেশ পেয়ে মঠবাড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক শাহনাজ পারভীনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযুক্ত শহিদুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এসময় শহিদুল ও তার বাবা নয়া মিয়া পালিয়ে যায়।
নির্যাতিত গৃহবধূর দিনমজুর বাবা আব্দুর রশিদ জানান, বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য ৭৬ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছি। পরে জামাই শহিদুল গরুর ব্যবসার কথা বলে আরও এক লাখ টাকা দাবি করে। দিতে না পারায় মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে। আমার দুগ্ধপোষ্য নাতনীকে আটকে রেখে আমার মেয়েকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম তারিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত শিশুটিকে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করার পর আদালতের বিচারক জি.এম. সরফরাজ শিশুটিকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন। পরে শিশুটিকে মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শহিদুল ও তার বাবাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। এ বিষেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিএম সরফরাজ সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে ৭ মাসের শিশু রাবেয়াকে দ্রæত উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়ায় থানার উপ-পরিদর্শক শাহনাজ পারভীনের প্রশংসা করেছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ