Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলনবিলে অটিজম বিদ্যালয়

| প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাটোর জেলা সংবাদদাতা : চলনবিলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে পিপুলশন প্রতিবন্ধী ও অটিজম বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এলাকার প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েদের জীবনযাত্রার মান পাল্টে গেছে। তারা প্রমাণ করেছে প্রতিবন্ধী কোন রোগ নয়, এটা এক ধরনের অক্ষমতা, যা চিকিৎসা দিয়ে ভাল করা যায় না। তবে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও খেলাধুলার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনের ভূমিকা রাখা যায় বলে মনে করেন চলনবিলের দুর্গম পল্লীর অভিভাবকরা।
প্রতিবন্ধীদের সমাজের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে ২০১৫ সালে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠা লাভ করে পিপুলশন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিজম বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে চলনবিলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করতে মূল ভুমিকা রেখেছেন সমাজসেবক আবু বক্কর সিদ্দীক। আর্থিক অনুদানসহ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। এছাড়া সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন শেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবিব রুবেল, সমাজসেবক সিরাজুল ইসলাম মামুন ও আলহাজ¦ জালাল উদ্দিন। স্কুলটির জন্য ১৬ শতক জমি দান করেন প্রতিষ্ঠাতা আবু বক্কর সিদ্দীক ও জালাল উদ্দিন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ জানান, বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য কমিটি রয়েছে। বুুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস নেয়া হয়। এজন্য স্কুলভ্যান ও অটো রিকশা রয়েছে। বয়স অনুুযায়ী মা ও শিশু শ্রেণী, শিশু শ্রেণী, বিশেষ শিশু শ্রেণী ও বৃত্তিমূলক পৃথক ক্লাশ রয়েছে। শিক্ষকরা প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা, গান বাজনারও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, পিপুলশন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক স্কুলটি প্রতিবন্ধীদের মাঝে যে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে সেটা যেন গোটা উপজেলার প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে এটাই সবার কাম্য। আশ পাশের কয়েকটি ইউনিয়নের মধ্যে এই স্কুলটি ব্যাপক সারা ফেলেছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন’শ জন প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা নিচ্ছে। শারীরিক প্রতিবন্ধি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধি, বাক, শ্রবন, বুদ্ধি এবং অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধিরা দুর দুরান্ত থেকে এসে এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। শুধু শিশুরা নয় বয়স্ক প্রতিবন্ধিরাও শিক্ষা গ্রহণ করছেন । সরেজমিনে এই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের চাল ও বাঁশের বেড়ার একটি ঘর। তিন কক্ষে চলে ক্লাস আর একটি কক্ষ শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানায়, এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা নিতে পেরে তারা আনন্দিত। এর আগে সব সময় তাদেও মন খারাপ থাকতো।
সমাজের দশজনের মত তারাও বাঁচতে চায়। এ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবু বক্কর সিদ্দীক জানান, আশপাশের কোথাও প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় ছিলনা। এ এলাকার প্রতিবন্ধীরা দিনের পর দিন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল। ২০১৫ সালে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এই বিদ্যালয়টি স্থাপন করি। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে রয়েছে নানা সমস্যা। সরকার একটু দৃষ্টি দিলে বিদ্যালয়টি দ্রæত এগিয়ে যাবে। তিনি আরো জানান, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে প্রতিবন্ধীরা এই বিদ্যালয়ে এসে লেখাপড়া করছে। তাদেরকে অটোবাইকে করে অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে হয়। সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের আবাসিক ব্যবস্থা গড়ে উঠলে সুযোগ- সুবিধা বৃদ্ধি পেত।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ