বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
শেখ হাসিনার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবো না। তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।’ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে চতুর্থ দিনের বক্তব্য দিতে গিয়ে আদালতে এ কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের কথা স্মরণ করে বেগম জিয়া বলেন, ‘ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সঙ্গে কোনও সমঝোতা করিনি। তারা আমার সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছিল। নানা রকম প্রস্তাব আমার কাছে এসেছিল। আমি তাতে রাজি হইনি।
জানিয়েছিল জরুরি অবস্থা তুলে দিয়ে তারা নির্বাচনে যেতে চায়। আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে গোপন আঁতাত করে ক্ষমতায় গিয়েছিল। সংবিধান ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ফলাফল মেনে নিয়েছিলাম। সরকারকে সহযোগিতার কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের সহযোগিতার আচরণের বিনিময়ে তারা কি আচরণ করেছে তা সবারই জানা।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন আরো বলেন, ‘প্রতিহিংসার বিপরীতে সংযম ও সহিষ্ণুতার পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা আমরা বারবার করে এসেছি। কিছুদিন আগেও আমি সংবাদ সম্মেলনে অতীতের তিক্ততার কথা তুলে ধরেছি। আমার ও শহীদ জিয়ার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ক্রমাগত অশোভন উক্তি, প্রতিহিংসামূলক বৈরী আচরণ সত্ত্বেও আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। আমি তার প্রতি কোনও প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবো না।’
আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, রাজনীতিতে সহিষ্ণু, সুন্দর সংস্কৃতি গড়ে তুলি। যা গণতন্ত্রের জন্য খুবই প্রয়োজন। যাতে আমাদের কাছ থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো কিছু শিখতে পারে। প্রতিহিংসামূলক বৈরী আচরণের পরও আমি তাকে (শেখ হাসিনা) ক্ষমা করে দিয়েছি।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় চতুর্থ দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে প্রায় দেড় ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন খালেদা। এর আগে আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আবারও স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদন করেন তিনি। আদালত সে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী বৃহস্পতিবার, ১৬ই নভেম্বর।
আজ বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়া রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে পৌঁছান। শুনানি শুরু হওয়ার পর খালেদা জিয়ার পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ স্থায়ী জামিনের আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আদালতকে বলেন, ‘আমি এই পেশায় ৫০ বছর ধরে আছি। কোনোদিন শুনিনি কাউকে সপ্তাহে সপ্তাহে জামিন নিতে হয়। প্রতি সপ্তাহে এসে আদালতে হাজিরা দিতে হয়। এক সপ্তাহের জন্য তিনি জামিন পেয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে ছিলেন। সে সময় তিনি জামিনের অপব্যবহার করেননি। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আমি মনে করি, তিনি স্থায়ী জামিন পেতে পারেন, তাঁকে স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করা হোক।’
আত্মপক্ষ সমর্থন করে চতুর্থ দিনের মতো নিজের বক্তব্যের শুরুতে খালেদা বলেন, ‘মাননীয় আদালত আমি বিশ্বাস করতে চাই যে, আপনি সাহস ও সততার সঙ্গে সরকারের প্রভাবমুক্ত থেকে আইন অনুযায়ী ন্যায় বিচার করবেন। আমাদের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন করা হলেও সাম্প্রতিক বিভিন্ন উদাহরণ সেই দাবীকে প্রতিনিয়ত প্রতারিত করছে।’
বেগম জিয়া আদালতে আরো বলেন, ‘বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করে সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছি। সমঝোতার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা ও জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়াসহ ভালো প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ভিশন টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ঘোষণা করেছি। এসব উদারতার জবাব আমাদের কোন ভাষায় দেওয়া হচ্ছে তা সবাই জানে, আপনিও জানেন। এদেশে গণতন্ত্র নেই, কার্যকর সংসদ নেই, প্রহসনের প্রশাসন চলছে। গুম, খুন, অপহরণ, নির্যাতন ও বিচারহীনতার রাজত্ব চলছে। ক্ষমতার অপব্যবহার চলছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।