Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাধাগ্রস্ত সম্ভাবনাময় টাইলস রফতানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আমদানি-রফতানিতে নীতিমালার দাবি জানালেন ব্যবসায়ীরা
সরকারের নীতি-সহায়তা পেলে তৈরি পোশাকের মতো বিদেশে বিপুল পরিমাণ টাইলস রফতানি সম্ভব। এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন কাঁচামাল আমদানি ও রফতানি সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন। কারণ ১১ প্রকারের টাইলসের মধ্যে বাংলাদেশে শুধু ৩ ধরনের টাইলস উৎপাদন হয়। বাকিগুলো আমদানি নির্ভর। এ প্রেক্ষিতে সরকার নীতিমালার মাধ্যমে উন্নতমানের টাইলসের বিস্কুট আমদানিতে শুল্ক হ্রাসের সুযোগ দেয় তাহলে দেশে অনেক পলিশিং ফ্যাক্টরি গড়ে উঠবে। এসব ফ্যাক্টরি থেকে বিদেশে ফিনিশড টাইলস রফতানি সম্ভব।
গতকাল বুধবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে টাইলস রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-তাইওয়ান সিরামিক ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড। টাইলস ডিলার্স এন্ড ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের বিজ্ঞাপনের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান শরীফ বলেন, বাংলাদেশ-তাইওয়ান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেটি আনগ্লেজড/আনফিনিশড টাইলস আমদানির পর পলিশিং করে বিদেশে টাইলস রফতানি করছে। কিন্তু একটি অসাধু চক্র কাস্টমসকে ভুল বুঝিয়ে রফতানিতে বাধার সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা চট্টগ্রাম কাস্টমসে ৪০ কন্টেইনার আনগ্লেজড/আনফিনিশড টাইলস আটক করেছে। তাদের দাবি, এগুলো ফিনিশড প্রোডাক্ট। অথচ বুয়েট টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে, এগুলো আনগ্লেজড টাইলস। এ অবস্থায় একদিকে বিদেশি ক্রেতারা তাদের অর্ডার ফিরিয়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে বন্দরের মাশুল গুনতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এনবিআর থেকে শুল্ক গোয়েন্দা, বন্ড কমিশনারেট, কাস্টমস হাউজের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করলে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। তার আগে বন্দর থেকে টাইলসগুলো অঙ্গীকারনামা অথবা বন্ডের মাধ্যমে খালাস জরুরি। কারণ ব্যাংক ঋণের সুদ দিন দিন বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে রফতানি বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। এতে একটি সম্ভাবনাময় খাতের অপমৃত্যু ঘটবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জিয়াউদ্দিন বলেন, বিদেশে টাইলস রফতানিকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের ধারণা, বন্ড সুবিধার আওতায় আনগ্লেজড/আনপলিশড টাইলস আমদানির পর সেটি পলিশ করে খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ-তাইওয়ান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ সব টাইলস বিদেশে রফতানি করেছে, যার সব প্রমাণ আছে। কাস্টমসের ভুল সিদ্ধান্ত ও টাইলস ডিলার্স এন্ড ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের অপপ্রচারের কারণে বর্তমানে রফতানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, টাইলস আমদানি-রফতানির নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। কারণ ১১ প্রকারের টাইলসের মধ্যে ৩ প্রকারের টাইলস দেশে উৎপাদন হচ্ছে। বাকিগুলো আমদানি নির্ভর। এসব টাইলসের বডি কাঁচামাল হিসেবে শুল্ক ছাড়ের মাধ্যমে আমদানির সুযোগ দিলে দেশে আরো পলিশিং কারখানা গড়ে উঠবে। তৈরি পোশাকের পর টাইলস রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। বর্তমানে ভারতে ৪শ বেশি পলিশিং ফ্যাক্টরি আছে। এসব ফ্যাক্টরির ফিনিশড টাইলস রফতানি করে ভারত দ্বিতীয় বৃহৎ রফতানিকারক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। টাইলসের প্রধান রফতানিকারক দেশ চীনে ৭ হাজারের বেশি পলিশিং ফ্যাক্টরি আছে। শ্রমের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখান থেকে কারখানা স্থানান্তরের কথা ভাবছে উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারে।
তিনি আরো বলেন, বিদেশি টাইলস রফতানির পর দেশীয় বাজারে উন্নতমানের টাইলস সরবরাহের জন্য মধুপুরে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এ কারখানায় বডি তৈরির পর তা পলিশ করে বাজারে সরবরাহ করা হবে। তখন চীন থেকে ফিনিশড টাইলস আমদানির প্রয়োজন হবে না। এতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। মূলত আমদানির পথ সংকুচিত এবং অবৈধ মুনাফার পথ বন্ধ হওয়ায় টাইলস ডিলার্স এন্ড ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশনের অপপ্রচার শুরু করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টাইলস
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ