২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের এক মামলায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট অ্যালায়েন্সের (বিএনএ) সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিচারিক আদালতের দেয়া ৭ বছরের কারাদণ্ড কমিয়ে ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার স্ত্রী সিগমা হুদা ইতোমধ্যে যে পরিমাণ সাজা খেটেছেন, তাই শাস্তি হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের বেঞ্চ এই রায় দেয়। এ মামলায় ব্যারিস্টার নাজমুল হুলাকে ৭ বছর ও তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের দণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত। তার মধ্যে যে পরিমাণ সাজা তিনি খেটেছেন, তাই শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হবে বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত।
এর আগে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ নাজমুল ও সিগমাকে খালাস দিলেও আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুনঃশুনানিতে পাঠায়।এই রায়ের অনুলিপি যেদিন বিচারিক আদালতে পৌঁছাবে সেদিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
আদালত বলেছে, এই রায় হাতে পাওয়ার দিন থেকে সাবেক এই মন্ত্রীর সাজা গণনা শুরু হবে। জজ আদালত এ মামলায় নাজমুল হুদাকে আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করেছিল। হাইকোর্টের রায়ে সে বিষয়ে কিছু বলা না থাকায় সেই জরিমানা বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
আদালতে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা নিজেই শুনানি করেছিলেন। সিগমা হুদার পক্ষে ছিলেন আজমালুল হোসেন কিউ সি। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির আহমেদ।
২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক শরিফুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাপ্তাহিক পত্রিকা 'খবরের অন্তরালে'র জন্য মীর জাহের হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা। ২০০৭ সালের ২৭ অগাস্ট বিশেষ জজ আদালতে এই মামলায় নাজমুল হুদাকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করে। পাশাপাশি তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের দণ্ড দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাইকোর্ট তাদের খালাস দেয়। রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে উভয় আবেদনের শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালত ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয়।