রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে টি এম কামাল : মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। লকলকিয়ে বাড়ছে ধানের গাছ। কোথাও ধানের গাছে থোড় ধরছে। অনেক ক্ষেতে দুধ ধান। আবার কোনো কোনো ক্ষেতের ধানে শীষ বের হয়েছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে ক্ষেতে বেড়ে ওঠা ধান গাছের ডগা। আর কদিন পরেই কৃষকের গোলায় ওঠবে সোনালী ফসল। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাম্পার ফলনেরও স্বপ্ন বুনছেন কৃষক। তবে আশানুরুপ ফলনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কীটপতঙ্গ ও ইঁদুর। কীটপতঙ্গ দমনে কীটনাশক ব্যবহার করে কিছুটা সুফল পাচ্ছেন। কিন্ত ইঁদুর দমনে কীটনাশক কোনো কাজে আসছে না। তাই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কৃষকের নিজস্ব উদ্ভাবিত পলিথিনের ঝান্ডা উড়িয়ে ইঁদুর দমনের চেষ্টা। চলতি মৌসুমে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় রোপা আমন ধান ক্ষেতের ইদুর দমনে কৃষকের এই অভিনব পদ্ধতি নজর কেড়েছে।
জানা যায়, অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও আমন মৌসুমে ধানক্ষেতে ইঁদুরের উপদ্রবে কৃষককুল দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ইঁদুর আকারে ছোট হলেও বছরে অনেক শষ্যের ক্ষতি করে। মাঠের ফসল উৎপাদন ও গুদামজাত শস্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ইঁদুর প্রধান সমস্যা। বর্তমানে আমনের ধান ক্ষেতগুলো ধানের থোড়ে ভরে উঠেছে। দিন শেষে সন্ধ্যা নামলেই ইঁদুরের উপদ্রবও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
ফলে ইঁদুরের দল ধান গাছের গোড়া কেটে গাছ ফেলে ধানের থোড় নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু করে দিনের আলো না ফোটা পর্যন্ত ধানক্ষেতে ইঁদুরের অত্যাচার চলতে থাকে। ইঁদুর তাড়াতে কাজ করে না কোনো কীটনাশক। তাই ইঁদুর তাড়ানোর নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন কৃষকেরা। তারা আমনের ক্ষেতে পলিথিন ঝান্ডা উড়ানোর ব্যবস্থা করেন। কয়েক বছর ধরে এই পদ্ধতিতে ইঁদুর তাড়ানো সুফল পাচ্ছেন কৃষক। তাই কৃষি বিভাগও এই পদ্ধতির পরামর্শ দেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার অধিক পরিমাণ ক্ষেতে আমন ক্ষেতে পলিথিনের ঝান্ডা উড়িয়েছেন কৃষকরা। ধান ক্ষেতের ভেতর কঞ্চি কিংবা ছোট আকরের খুঁটি পুঁতে তার মাথায় পলিথিন বেঁধে দেয়া হয়েছে। বাতাসের কারণে পলিথিন পতপত শব্দ করে ওড়তে থাকে। এই শব্দ পেয়ে ইঁদুর মনে করে কেউ আসছে, তাই ভয়ে পালিয়ে যায়।
এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কাজিপুর উপজেলার পাঁচগাছি আব্দুল সালাম বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছে। ধানে এখন থোড় বের হচ্ছে। এ অবস্থায় ধান খেতে ইঁদুর আক্রমণ করেছে। ধান গাছ কেটে সাবার করছে। কোনো কীটনাশক প্রয়োগে কাজ হচ্ছে না। ল্যানিরেট নামে এক ধরনের ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়। কিন্ত দাম অনেক বেশি। তারপরও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। তাই ধান খেতে খুঁটি পুঁতে পরিত্যক্ত পলিথিন উড়িয়ে ইঁদুর তাড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। এতে ইঁদুরের উপদ্রুপ অনেকটাই কমে গেছে।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনুর রহমান বলেন, কৃষকের উদ্ভাবিত ইঁদুর দমনের এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেকেই সুফল পেয়েছে। এ কারণে প্রতি বছরই কৃষকের মাঝে এই পদ্ধতি ব্যবহারের সংখ্যা বাড়ছে। বিনা খরচে অধিক সুফল পাওয়ায় ধান ক্ষেতে পলিথিনের নিশান উড়িয়ে ইঁদুর তাড়ানোর পদ্ধতি কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।