Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্যের সনদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দুই বোন প্রাইমারি শিক্ষক!

| প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দিদারুল আলম রাজু, খাগড়াছড়ি থেকে : অন্যের সনদ ব্যবহার করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছে আপন দুই বোন। এমনটাই অভিযোগ করেছেন আব্দুর রহমান নামে প্রয়াত এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী।
সম্প্রীতি রাজস্ব খাতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ২৯৪ জনকে নিয়োগ দিয়েছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ। এর মধ্যে ২৫১ জনকে বিভিন্ন কোটায় এবং ৪৩ জনকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়। তাতে জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার ফুল বানু (রোল নং ৮৬৩) ও পারুল আক্তার শ্রাবন্তী (রোল নং ৯২৮) নামে আপন দুই বোন নিয়োগ পান মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। এরা উভয়েই আব্দুর রহমান নামে এক মৃত মুক্তিযোদ্ধার কন্যার ঘরের নাতনী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিয়োগ নিয়েছেন নানার সনদে, অথচ ওই দুই নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের পিতা দাবী করেন আব্দুর রহমান তাদের দাদার নাম!
প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের স্ত্রী আম্বিয়া বেগম জানান, তাঁর স্বামীর সনদ ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছেন ওই দুই বোন। অথচ তারা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের কোন আত্মীয় নন, তাদের সাথে এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কোন ধরনের সম্পর্কই নেই। আম্বিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত ফুল বানু ও পারুলের পিতা তবলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য জয়নাল আবেদীন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা সনদটি নেয়ার জন্য তাকে ১০ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু এতে তিনি রাজী হননি। তবে আম্বিয়া বেগমের সতীনের ছেলেকে দিয়ে সনদটি চুরি করার পর তা ব্যবহার করেছে বলে ধারণা তার। অভিযোগ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন বলেন, এ বিষয়ে ‘সম্পর্ক সনদ’ দেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। নিয়োগ কমিটির সদস্যরা সেই সনদের উপর ভিত্তি করেই যাচাই-বাছাই করেছেন। যদি অভিযোগটি সত্য হয় তবে তার দায়ভার ‘সম্পর্ক সনদ’ প্রত্যয়নকারী চেয়ারম্যানের। এছাড়া এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত কোন অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে ওই দুই বোনের ‘সম্পর্ক সনদ’ ঘেটে দেখা যায় ২০১২ সালের ২৪ অক্টোবর সনদটি প্রত্যয়ন করা হয়। আর সেই সনদের প্রত্যয়নকারী ছিলেন মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতী ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. মনছুর আলী। তাতে প্রত্যয়ন করা হয় যে, ওই দুই বোনের সাথে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানের সাথে নানা-নাতনীর সম্পর্ক। তবে নিয়োগপ্রাপ্ত ফুল বানু ও পারুলের পিতা জয়নাল আবেদীন জানান আব্দুর রহমান নিয়োগপ্রাপ্তদের দাদার নাম। তিনি বলেন, ‘আমার বাবার আসল নাম আব্দুর রহমান, এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তবে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন।’ এছাড়া নিজের দাদার নাম অর্থাৎ আব্দুর রহমানের পিতার নাম জানতে চাইলে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমার দাদার নামটা এ মুহূর্তে মনে আসছেনা।এদিকে স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, পিতা জয়নাল আবেদীনের পিতার নাম রুস্তম আলী ওরফে লুতু মিয়া। এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ