বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : এজলাস সঙ্কটের মধ্যেও অধিকহারে মামলার বিচার নিষ্পত্তিতে নজির স্থাপন করেছে কুমিল্লার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। অল্প সময়ের মধ্যে দায়েরকৃত বিচারাধীন মামলা শেষ করতে বাস্তব পদক্ষেপ এবং হয়রানির মামলা বন্ধে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। আর এর মধ্যদিয়ে এ আদালতের সার্বিক কার্যক্রমে একদিকে ন্যায়বিচার অন্যদিকে বিচারপ্রার্থী মানুষের বিশ্বাসের জায়গাটি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। গত ২১ মাসে কুমিল্লার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪২ হাজার ৮৩টি মামলার নিষ্পত্তি বিচারপ্রার্থী মানুষের কাঙ্খিত প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।
বিচারাধীন মামলা নিষ্পত্তির হার বাড়ছে কুমিল্লার আদালতে। মামলাজটের ভোগান্তি কমছে বিচারপ্রার্থীদের। জেলা, দায়রা, বিভিন্ন ট্রাইব্যুনাল ও ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলার দ্রæত নিষ্পত্তি হচ্ছে। তবে বিচার নিষ্পত্তিতে নজির স্থাপন করেছে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের মধ্যদিয়ে চীফ জুড়িয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালের নভেম্বরে। ওই সময়ে কুমিল্লায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব নিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন বেগম ফাতেমা নজীব। দিন, মাস, বছর গড়াতে গড়াতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালের ৩০ আগষ্ট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে মো. হেমায়েত উদ্দিন দায়িত্ব নেয়ার পর মামলাজট কমাতে উদ্যোগ নেন। মামলা দ্রæত নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে তিনি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মরত বিচারকবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। দ্রত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মামলার স্বাক্ষ্যপ্রদান প্রক্রিয়া তরান্বিত এবং বিভিন্ন মামলার শুনানীর জায়গাটি আরো সক্রিয় করে তুলেন। কেবল তাই নয়, পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্সের আলোকে থানায় মামলা রেকর্ডের ক্ষেত্রে এবং হয়রানীমূলক মামলা বন্ধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেমায়েত উদ্দিন ভূমিকা রাখছেন। এজলাস সঙ্কটের মাঝেও তিনি আদালতের বিচারিক কার্যক্রমকে ঢেলে সাজিয়েছেন। যার ফলশ্রæতিতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারাধীন মামলা অধিকহারে নিষ্পত্তিতে আসছে ব্যাপক সফলতা।
চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, অতিরিক্ত, সিনিয়র এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মোট ১১টি বিচারিক আদালত এজলাস সঙ্কটের মাঝেও দ্রæত মামলা নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেমায়েত উদ্দিন যোগদানের সময় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে পেন্ডিং মামলার সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ২৪৪টি। তারমধ্যে প্রতিমাসেই নতুন করে দেড়/দুই হাজার মামলা দায়ের হচ্ছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এসে পেন্ডিং মামলার সংখ্যা দাঁড়ায় ২১ হাজার ৮৮৫টিতে। গত দুই বছরের পরিসংখ্যানের আলোকে দায়েরকৃত মামলার চেয়ে নিষ্পত্তি বেশি হওয়ায় পেন্ডিং মামলার সংখ্যাও বাড়তে পারেনি। সংশ্লিষ্ট আদালতের রেকর্ডকিপার মো. জহিরুল ইসলাম মজুমদার জানান, কুমিল্লা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৮ হাজার ২৮৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। আর এই ২১ মাসে ৪২ হাজার ৮৩টি মামলার বিচার নিষ্পত্তি হয়েছে। যেখানে দায়েরর চেয়ে ৩ হাজার ৭৯৬টি বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। প্রতিমাসে নিষ্পত্তি রেকর্ড ও আলামত ধ্বংস করা হচ্ছে। এদিকে কুমিল্লার আদালতে কর্মরত আইনজীবী অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বর্তমানে দিনের পর দিন কোনও আবেদনের শুনানী এবং আদেশের জন্য পেন্ডিং থাকেনা। বিচারাধীন মামলার সাক্ষী উপস্থাপনের জন্য রয়েছে কড়া নির্দেশনা। দ্রæত সময়ের মধ্যে মামলার আদেশ বা রায়ের নকল সরবরাহের ব্যবস্থা আগের চেয়ে সহজতর হয়ে ওঠেছে।
জানতে চাইলে সরকারি আইন কর্মকর্তা জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন বলেন, সরকারি আইন কর্মকর্তারা দ্রæত মামলা নিষ্পত্তিতে সার্বোচ্চ সহযোগিতা ও ভূমিকা রাখতে বদ্ধপরিকর। জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়েছে। বিশেষ করে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার বিচার নিষ্পত্তির হার অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিজস্ব ভবন নেই। এজলাস সঙ্কটের কারণে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিজ্ঞ বিচারকগণ আদালতের অধিবেশনকালীন সময় পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছেন না। অথচ এজলাস সঙ্কটের মধ্যেও বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেমায়েত উদ্দিন মহোদয়ের নেতৃত্ব, উদ্যোগ, তদারকি একদিকে বিচারাধীন মামলার নিষ্পত্তির হার বাড়িয়েছে অন্যদিকে বিচারপ্রার্থী মানুষের হয়রানী দূর করে ন্যায়বিচারের পথ সুগম করেছে। আগামীদিনে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নির্মান কাজ দ্রæত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে তাতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করতে পারলে মামলা নিষ্পত্তির হার প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।