Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট পোকায় খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৯:৩৮ পিএম, ৪ নভেম্বর, ২০১৭

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা : পোকায় পেটে কৃষকের স্বপ্ন। যে স্বপ্ন নিয়ে কৃষকেরা আমনের বাম্পার ফসলের আশায় স্বপ্ন বেধেছিলেন সে আশা বালুচরের মতো ভেঙে গেছে এখানকার কৃষকদের। তাদের চোখে মুখে এখন শুধুই হতাশা। নীলফামারী জেলায় আমন ধান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এখানকার কৃষক। পাতা মোড়ানো রোগসহ পোকার আক্রমণ শিকার হয়েছে এবারে মৌসুমী আমন ফসলের। স¤প্রতি সময় ঘটে যাওয়া নিম্নচাপে ফসলি জমির ধান নুইয়ে পড়ছে মাটিতে। অন্যদিকে বাদামী গাছ ফড়িং পোকা বা কারেন্ট পোকার আক্রমণের শিকার থেকেও রক্ষা পায়নি ফসলি জমির ধানগুলো। সব মিলিয়ে ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে এ রোগে। কয়েকদিনে বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এসব চিত্রই যেন চোখে পড়ে। উপজেলা কৃষি অধিদফতর ধর্ণা দিয়েও কোনো কুলকিনারা পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
তবে জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অবশ্য আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়া ঠিক হয়ে গেলে পাতা মোড়ানো রোগ থেকে রক্ষা পাবে ফসলি জমি। তিনি কৃষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, পাতা মোড়ানো রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে কয়েকটি ধানের গোছা একসঙ্গে নিয়ে বেঁধে রাখলে এ সমস্যা হবে না। অনেক কৃষক জমির ধান দ্রæত কেটে কিছু রোজগারের আশায় গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের আমন ধানের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে। আর ফসল অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৪০০ হেক্টর জমি পাতা মোড়ানো রোগে আক্রান্ত আর প্রায় একশত হেক্টর জমি বাদামী গাছফড়িং কারেন্ট পোকায় আক্রান্ত হয়েছে। সরকারিভাবে এমন হিসাব থাকলেও আমন ধানের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে বলে ধারণা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। ক্ষতির পরিমাণ দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক খায়রুল জানান, একদিকে পাতামোড়া রোগ, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধানগাছ নুইয়ে পড়ছে মাটিতে। কৈমারী ইউনিয়নের কৃষক রনজিৎ রায় ও আমিনুর রহমান জানান, অন্যের দুই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে এবং দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধার-দেনা করে এবারের আমন ধান চাষাবাদ করেছিলাম। এখন ধানের যে পরিস্থিতি, তাতে পথে বসার উপক্রম। এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহ্ মুহাম্মাদ মাহফুজুল হক জানান, সারাদেশে সা¤প্রতিক সময়ের নিম্নচাপে কিছু ধানক্ষেতের ধান গাছ নুইয়ে পড়েছে এবং কিছু কিছু ক্ষেতে পোকার আক্রমণে শিকার হয়েছে ফসলি জমি। তিনি আরো জানান, যে সমস্ত জমিতে ১০০ ভাগের মধ্যে ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে সে সমস্ত জমির ধান কৃষকদের কেটে ফেলার তাগিদ দিচ্ছি আমরা। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ