Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উল্লাপাড়ায় ক্ষীরা চাষিদের মুখে হাসি

| প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) থেকে জয়নাল আবেদীন জয় : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চাষ উপযোগী আবহাওয়া থাকায় এবার খিরা চাষিদের মুখে হাসি ফোটেছে। বাজার উঠতি খিরার দাম ভালো থাকা এবং গাছে প্রচুর খিরা ধরায় উচ্চ লাভের আশায় বুক বেধেছে কয়েক হাজার চাষি। উল্লাপাড়া উপজেলায় প্রতি বছর দুইটি আড়ৎ এবং হাটবাজারে এ মৌসুমে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার খিরা বিক্রি করেন চাষিরা। তবে মাঠপর্যায়ে এ চাষাবাদে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কোনো সহায়তা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাষিরা।
উল্লাপাড়ায় এ বছর ৬০০ হেক্টর জমিতে খিরা চাষাবাদ করা হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়। উপজেলার মাঠে মাঠে কৃষকরা এখন খিরার জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত। পরিবারে পুরুষ থেকে নারী সবাই অবিরাম খিরার জমিতে নিড়ানি, সার কীটনাশক ছিটানো আর পানি দেয়া নিয়ে মহাব্যস্ত। উপজেলার মোহনপুর, বড়পাঙ্গাসী, কয়ড়া, দুর্গানগর, বড়হর, হাটিকুমরুল ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ খিরার চাষাবাদ করা হয়েছে। সবুজ ডগার খিরা গাছে ভরে গেছে কৃষকের ক্ষেত। ইতোমধ্যেই উল্লাপাড়ার বিভিন্ন হাটবাজারে আগাম জাতের কিছু খিরা উঠতে শুরু করেছে। দামও আকাশছোঁয়া।
সরেজমিন উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের চরবর্দ্ধনগাছা খিরার মাঠে গিয়ে কথা হলো চাকসা গ্রামের ক্ষিরা চাষি মো. নুর ইসলামের (৫৭) সাথে। এ সময় তিনি তার খিরার খেতে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে নিড়ানি দিচ্ছিলেন। কথা হলে তিনি জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষিরা চাষাবাদ করছেন। অন্যে ফসলের চেয়ে খিরা চাষে অধিক লাভ হওয়ায় এ চাষাবাদের প্রতি তার ঝোঁক। এ বছর তিনি ৭০ শতক জমিতে খিরা চাষাবাদ করেছেন। এতে তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকায় তার খিরার গাছগুলোর অন্যে বারের চেয়ে ভালো হয়েছে। তার ধমকানো সবুজ খিরা গাছে হলুদ ফুলের সাথে ঝাঁকে ঝাঁকে খিরার গুটি ধরেছে। আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে তার জমি থেকে খিরা তুলে বাজারে বিক্রি করা যাবে। তিনি আশা করছেন, আগাম খিরার দাম ভালো থাকায় তিনি তার আবাদকৃত জমি থেকে প্রায় দুই লাখ টাকার খিরা বিক্রি করে গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নেবেন। একই মাঠে কথা হলো আরেক খিরা চাষি আব্দুল হামিদের সাথে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বরেন, আমরা অশিক্ষিত মানুষ। কীটনাশকের দোকানির পরামর্শে খিরা জমিতে কীটনাশক ও সার দেই। এতে খিরা গাছ পুড়ে যাওয়া, পাতা কোকড়ানো, বাদামি আকার ধারণ করায় খিরার ফলন হয় না। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কৃষি বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের মাঠপর্যায়ে ডেকেও কোনো সহায়তা পাওয়া যায় না।
উল্লাপাড়ার কয়েক হাজার খিরা চাষির খিরা ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দুটি বৃহৎ খিরার আড়ত। এ আড়ত এ চাষিদের নিয়ে আসা খিরা ক্রয় করে ব্যাপারীরা ট্রাকযোগে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছে। উল্লাপাড়ায় আগাম শীতকালীন ফসল হিসেবে খিরা চাষাবাদ করে কয়েক হাজার কৃষক এখন সচ্ছল স্বাবলম্বী। এ চাষাবাদে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া হলে আরো বিপুল সংখ্যক কৃষক এ চাষাবাদে আগ্রহী ও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ