Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান লেবার পার্টির

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিন

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বেলফোর ঘোষণার জন্য ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত নাগরিকরা। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। আনাদোলু এজেন্সি’র সঙ্গে আলাপকালে দলটির নেতা ও যুক্তরাজ্যের ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিলি থর্নব্যারি গতকাল এ আহ্বান জানিয়েছেন। থেরেসা মে-এর সরকার যখন কুখ্যাত বেলফোর ঘোষণার শতবর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তার প্রাক্কালে এ তিনি এ আহ্বান জানালেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।
১৯১৬ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ইহুদি নেতা ব্যারন রথচাইল্ডকে চিঠি পাঠিয়ে ফিলিস্তিনের মাটিতে ইহুদিদের জন্য কথিত আবাসভূমি বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা বেলফোর ঘোষণা নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের নিজ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদিবাদী ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৭ সালে ২ নভেম্বর যুক্তরাজ্য ‘বেলফোর ঘোষণা’র শতবর্ষ উদযাপন করছে।
তবে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন জানিয়েছেন, তিনি এতে অংশ নেবেন না। বেলফোর ঘোষণা স্মরণে আয়োজিত ডিনার অনুষ্ঠানে থেরেসা মে ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’র সঙ্গে এক টেবিলে তিনি খেতে বসবেন না। সেখানে করবিনের প্রতিনিধিত্ব করবেন এমিলি থর্নব্যারি।
এমিলি থর্নব্যারি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকার করে নিতে এই শতবর্ষ একটি ভালো সময়। সরকারকে উভয় পক্ষেরই যৌক্তিক উদ্বেগের বিষয়টি স্বীকার করতে হবে। কারণ ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর জন্য আমাদের যৌথ দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের এখন সামনের দিকে তাকাতে হবে। এর জন্য যেমন একটি টেকসই ও নিরাপদ ইসরায়েলের প্রয়োজন রয়েছে; তেমনি একটি টেকসই ও নিরাপদ ফিলিস্তিনেরও প্রয়োজন রয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টির সরকার বলছে, তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। তবে কবে নাগাদ সেটা দেওয়া হবে সে ব্যাপারে কিছু বলা হচ্ছে না। আমরা মনে করি, বেলফোর ঘোষণার শতবর্ষ পালনের আয়োজনেই এই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। ফিলিস্তিনকে আমাদের স্বীকার করতে হবে। এই সরকারের যদি সেই প্রস্তুতি না থাকে তাহলে পরবর্তী লেবার পার্টির সরকার এর বাস্তবায়ন করবে।
যুক্তরাজ্যের গত নির্বাচনে লেবার পার্টির মেনিফেস্টোতেও ফিলিস্তিন ইস্যু স্থান পায়। এতে বলা হয়, দল ক্ষমতায় গেলে কম সময়ের মধ্যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এতে ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো এবং গাজা উপত্যকার ওপর ইসরায়েলি অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে লেবার পার্টি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে। দলটি মনে করে, সামরিক উপায়ে ফিলিস্তিন সঙ্কটের কোনও সমাধান নেই।
বর্তমান ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রী থেরেসা মে বেলফোর ঘোষণার শতবর্ষ উদযাপন নিয়ে বেশ উৎসাহী হলেও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন এর ঘোর বিরোধী। তিনি মনে করেন, এতে গর্ববোধ করার কিছু নেই। বরং এটা যুক্তরাজ্যের জন্য লজ্জাজনক। কারণ বেলফোর ঘোষণার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি জাতিকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এটা ঔপনিবেশিক কারসাজি ছাড়া আর কিছুই না।
যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামাল হাওয়াশ বলেন, উদযাপন নয়, বেলফোর ঘোষণার জন্য ব্রিটেনের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এ অধ্যাপক প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন এবং ব্রিটিশ প্যালেস্টাইন পলিসি কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অধ্যাপক কামাল হাওয়াশ বলেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে ব্রিটেনের দ্বিমুখী আচরণ প্রকাশ পেয়েছে। একটি মরুভূমিতে ইসরায়েলকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে- বিষয়টি এমন নয়; বরং ফিলিস্তিনি জনগণের আদি আবাসস্থলে একটি ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা, মিডল ইস্ট মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিটিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ