Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এসুরেন্স সেল

ড. সিরাজুল করিম | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন হৈ হৈ রৈ রৈ ভাব। শিক্ষার মান বাড়াতে হবে তথা মানসম্মত শিক্ষা-সংস্কৃতি চালু করতে হবে। এজন্য এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ‘ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এসুরেন্স সেল’ (Institutional Quality Assurance Cell) গঠিত হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে ৩৮টি পাবলিক ও ৯৬টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাবলিক-প্রাইভেট নির্বিশেষে ৪ রাউন্ডে ৬৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এসুরেন্স সেল’ বা আইকিউএসি গঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংখ্যা ও শিক্ষক সংখ্যার উপর নির্ভর করে রাউন্ডগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যেমন প্রতিটি রাউন্ডের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বনিম্ন ছাত্র সংখ্যা হবে এক হাজার। তবে শিক্ষক সংখ্যা দুই শতের বেশি হলে বিশ্ব^বিদ্যালয় ‘এ’ রাউন্ড, এক শত থেকে দুই শত হলে ‘বি’ রাউন্ড এবং এক শতের কম হলে ‘সি’ রাউন্ডভুক্ত হবে। চতুর্থ রাউন্ড হচ্ছে আসলে এ, বি ও সি এর একটি সংমিশ্রিত রাউন্ড।
উক্ত কোয়ালিটি এসুরেন্স সেলের নেতৃত্বে থাকবেন একজন পরিচালক এবং এক বা একাধিক অতিরিক্ত পরিচালক। আইকিউএসি’র পরিচালকের অফিস থাকবে। অফিসে থাকবেন একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, একজন হিসাব রক্ষণকারী কর্মকর্তা ও একজন কম্পিউটার অপারেটর। তাছাড়া থাকবেন একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। উল্লেখ্য, আইকিউএসি বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত উচ্চ শিক্ষার গুণগত সম্প্রসারণ প্রকল্পের ‘কোয়ালিটি এসুরেন্স ইউনিট’ কর্তৃক পরিচালিত একটি উপ-প্রকল্প।
শিক্ষার মান উন্নয়নকল্পে এক্রিডিটেশন (Accreditation) কাউন্সিল নামক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে। আজ থেকে শত বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য এ ধরনের কাউন্সিল সর্বপ্রথম গঠিত হয়। এশিয়া মহাদেশে ফিলিপাইন এক্ষেত্রে অগ্রগামী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের পর এ নিয়ে জাপান এগিয়ে আছে। অগ্রগামীর তালিকায় আরও আছে ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তান। কেউ যদি ফিলিপাইন যান তাহলে দেখবেন সে দেশের শুধু বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে নয়, শিক্ষার নিম্নতম স্তর বিদ্যালয়েও রয়েছে এ কাউন্সিলের অস্তিত্ব ও আধিপত্য।
আইকিউএসি’র পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকদের জন্য রয়েছে দেশ বিদেশে গুণগত শিক্ষা গ্রহণ ও প্রয়োগের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এজন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। বাংলাদেশে গুণগত শিক্ষার উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কোথাও কোন প্রতিষ্ঠান নেই। তবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে গ্রেজুয়েট ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট নামে একটা প্রতিষ্ঠান আছে যা মূলত গ্রেজুয়েটদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠিত। যদিও এখানে এখন কোয়ালিটি এসুরেন্সের উপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সপ্তাহব্যাপী ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তদুপরি সেলের পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকদের দু’সপ্তাহের স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয় নিকটতম প্রতিবেশী দেশ ভারত অথবা পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন বা মালয়েশিয়ায়। অর্থাভাবে তাদের ইউরোপ বা আমেরিকার মতো দূর দেশে পাঠানো সম্ভব হয় না। আমি নিজেও ময়মনসিংহে গ্রেজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে ও কুয়ালালামপুরের একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। মালয়েশিয়া তথা বিদেশের প্রশিক্ষণ আমাদের জন্য যতটা ফলপ্রসূ এর চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ আমার কাছে মনে হয়েছে ময়মনসিংহে প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং তা হচ্ছে আমাদের দেশ উপযোগী এবং অধিকতর ব্যবহার উপযোগী ও কার্যকর।
এখানে একটি কথা উল্লেখ না করলেই নয়। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ‘কোয়ালিটি এসুরেন্স কমিটি’ (Quality Assurance Committee) যার নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। উপাচার্যের নজরদারতিে থাকবে আইকিউএসি। আবার আইকিউএসি’র নজরদারতিে থাকবে বিভাগীয় সেলফ এসেসম্যান্ট কমিটি (Self Assessment Committee) বা ইংরেজিতে সংক্ষেপে SAC (সেক)। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে আছে কোয়ালিটি এসুরেন্স ইউনিট (Quality Assurance Unit) নামে আরও একটি সংস্থা। এটার অবস্থান সবচেয়ে উপরে আর সবচেয়ে নিচে অবস্থান এসএসি বা সেক (SAC) এর। আর এ দু’য়ের মাঝখানে অন্তর্বর্তী বা মধ্যবর্তী অবস্থান আইকিউএসি’র। প্রয়োজনে আইকিউএসি কোয়ালিটি এসুরেন্স ইউনিটের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে।
আইকিউএসি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিকারী প্রথম পক্ষ হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। দ্বিতীয় পক্ষ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি। আসলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চুক্তিপত্রটি সেল প্রতিষ্ঠার জন্য কোয়ালিটি এসুরেন্স ইউনিট কর্তৃক আহুত ও প্রস্তাবের একটি অংশ মাত্র। চুক্তিপত্রে সেল পরিচালনার জন্য বাজেট বরাদ্দ থাকে। তিন বছর মেয়াদি চুক্তিতে বিশ্বব্যাংক প্রথম বছরে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে ১০০ ভাগ অর্থায়ন করবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছর থেকে বিশ্বব্যাংকের বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ কমতে থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। অতএব অর্থায়নের ক্ষেত্রে এক দিকে আছে বিশ্বব্যাংক আর অপর দিকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়। সহজভাবে বলতে গেলে বাজেটে মোট বরাদ্দের ৫০ ভাগ দেবে বিশ্বব্যাংক ও অবশিষ্ট ৫০ ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়। এর বাইরে বিশ্বব্যাংক আবদ্ধ অর্থ বা ব্লক মানির (Block Money) আকারে দেবে ডিগ্রি প্রদানকারী বিভাগের সেল্ফ এসেসম্যান্ট কমিটির সভাপতি ও অপর ২ জন সদস্যদের সম্মানীসহ যাবতীয় খরচ। তাছাড়া পিয়ার রিভিউয়ারদের প্রয়োজনীয় সম্মানীও ব্লক মানি থেকে পাওয়া যাবে। ৩ বছর পর আইকিউএসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হবে। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তখন থেকে বহন করবে সেলের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার। আর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সরকার বা ইউজিসি এর ব্যয়ভার বহন করবে।
মানসম্মত শিক্ষা-সংস্কৃতি গড়ে তোলাই হচ্ছে আইকিউএসি’র মূলমন্ত্র। কোয়ালিটি সেল-এর কেন্দ্রবিন্দু হলেও এর পরিধি ডিগ্রি প্রদানকারী বিভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ গ্রেজুয়েটগণ সমাজ, দেশ এমনকি আন্তর্জাতিক চাহিদা পূরণ করবেন, নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হবেন ও সমাধান করবেন, এ হচ্ছে আইকিউএসি প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য। এজন্য শিক্ষকগণ শিক্ষা ব্যাবস্থাকে পুনর্বিন্যাস করে একে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে অনুুকূল পরিবেশে ফিরিয়ে এনে শিক্ষার যাবতীয় সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াবেন, এটাই এখন শিক্ষকদের নিকট জাতির প্রত্যাশা।
কথা হচ্ছে কাজটি কীভাবে সম্ভব? কাজ মানে শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত মান অর্জন এবং শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশ সাধন ও দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধীরে ধীরে এর সম্প্রসারণ। এটা করার সহজ উপায় হচ্ছে নিজেকে নিজে মূল্যায়ন বা যাচাই করার মাধ্যমে। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে এর শিক্ষকগণ মূল্যায়ন বা যাচাই করবেন। নিজেকে নিজে মূল্যায়ন করাকে ইংরেজিতে বলে সেলফ এসেসম্যান্ট (self assessment)। এখানে মূল্যায়ন বা যাচাই করার জন্য ৯টি এরিয়া বা ক্ষেত্র রয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পাঠ্যসূচী প্রণয়ন, পর্যালোচনা ও উন্নয়ন, ছাত্র ভর্তি ও অগ্রগতি অর্জন, শিক্ষাদান-শিক্ষাগ্রহণ পদ্ধতি অবলম্বন ও মূল্যায়ন, শিক্ষার্থীদের সেবাদান কর্মকান্ডের নিবিড় পর্যবেক্ষণ, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের যথাযথ সুযোগ সুবিধা প্রদান, গবেষণা কার্যক্রম ও সম্প্রসারণ এবং বিবিধ প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনা অবলম্বন করে শিক্ষার মান উন্নয়ন অন্যতম। বস্তুত এসব ক্ষেত্রে বছরের পর বছর অনুরূপ চর্চা অব্যাহত রেখে মানসম্মত শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রচলনই হচ্ছে আইকিউএসি’র প্রকৃত উদ্দেশ্য।
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলফ এসেসম্যান্ট কার্যক্রমের জন্য প্রথম বছর কয়েকটি, দ্বিতীয় বছর আরও কয়েকটি এবং তৃতীয় বা শেষ বছরে অবশিষ্ট বিভাগগুলো অর্ন্তভুক্ত হবে। এজন্য প্রতিটি ডিগ্রি প্রদানকারী বিভাগে কর্মশালা-১, কর্মশালা-২ এবং কর্মশালা-৩ নামে মোট ৩টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। ১ম কর্মশালায় ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, প্রাক্তন ছাত্র ও নিয়োগকর্তাদের জরিপের আকারে প্রশ্নপত্র (Questioner) এর মাধ্যমে মতামত গ্রহণের জন্য টিম গঠন করা হবে। ২য় কর্মশালায় বিভাগীয় শিক্ষকগণ উক্ত মতামত প্রাপ্ত হয়ে জরিপের ফলাফলের উপর বিস্তৃত আলোচনা করবেন এবং ৩য় কর্মশালায় ২(দুই) জন দেশি এবং ১(এক) জন বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত পিয়ার রিভিউ (Peer Review) কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার উপর মূল্যবান মতামত দেবেন। এভাবে প্রথম বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রে কয়েকটি বিভাগে, দ্বিতীয় বছরে একইভাবে নির্ধারিত আরও কয়েকটি এবং তৃতীয় বছরে অবশিষ্ট বিভাগগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক অবস্থান নির্ণীত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক’টি বিভাগের এসেসম্যান্ট কাজ শেষ হলে বিভাগগুলোর ক্ষেত্র বিশেষে দুর্বলতা চিহ্নিত হবে ও দুর্বলতা অপসারণ করে সবলতা অর্জনের জন্য পিয়ার রিভিউয়ারগণ একত্রিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য যে মূল্যবান সুপারিশ সম্মত মতামত প্রদান করবেন, আইকিউএসি উক্ত সুপারিশ কোয়ালিটি এসুরেন্স কমিটি’র কাছে তুলে ধরবে। অবশেষে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট বা ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হবে। অনুমোদনের এ অনুলিপি অবিলম্বে কোয়ালিটি এসুরেন্স ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
প্রতি ৩ বছর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে এ মূল্যায়ন কাজের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে আছে, সেখানে গতিহারা হয়ে থমকে দাঁড়াবে না, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিটি কাজে কর্মে আরও গতি প্রাপ্ত হয়ে অগ্রগতি লাভ করবে, প্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জন করবে। সময়ের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে অগ্রগতির একটা ঊর্ধ্বগামী সরলরৈখিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে।
ইতোমধ্যে প্রস্তাবিত জাতীয় এক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন করার জন্য সংসদে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এ কাউন্সিলে একজন চেয়ারম্যান, ৪ জন পূর্ণকালীন সদস্য ও ৮ জন খন্ডকালীন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষা-সংস্কৃতিকে অবশেষে উক্ত কাউন্সিলের সম্মুখীন হতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্বের জন্য এর সনদ বা স্বীকৃতি লাভ করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে আইকিউএসি’কে বলা যায় একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। হয়তো বা এজন্য এর নামকরণ শুরু হয়েছে ইনস্টিটিউশন শব্দটির বিশেষণ ইনস্টিটিউশনাল (Institutional) দিয়ে। বাধা দিয়ে এর স্বশাসন হরণ করা উচিত নয়। একে এর নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে কাজ করতে দিতে হবে। তাহলে সাফল্য লাভ করে শিক্ষার কাঙ্খিত গুণগত মান অর্জন সম্ভব হবে। ধীর বা দ্রুত গতিতে হোক মানসম্পন্ন শিক্ষা-সংস্কৃতি অর্জন ও বিকাশের ক্ষেত্রে এক দিন স্বপ্ন হবে বাস্তব বা বাস্তবের সন্নিকট। বাধাপ্রাপ্ত হলে স্বপ্ন কোনো দিন পূরণ হবে না বরং স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
গুণগত কোয়ালিটি এসুরেন্স সেল এর নয়টি ক্ষেত্রে কাজের শুরু আছে, শেষ নেই। দিক আছে, দিগন্ত নেই। কাজে বাধা আছে বিস্তৃত, পিছুটান আছে অগণ্য ও সমস্যা আছে অসংখ্য। এক কথায় বলা যায়, এখানে কাজের পাহাড় আছে, পাহাড় উঁচু কাজ আছে। আগেই বলেছি, কাজের মাঝে বাধাও আছে। কাজ করতে করতে আমাদের বাধার পাহাড় অতিক্রম করতে হবে। তবেই আসবে সাফল্য। কাজটি কষ্টকর ও দুঃসাধ্য। তবে আশার কথা, কাজটি অসাধ্য নয়।
লেখক : সাবেক প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, আইকিউএসি ও প্রফেসর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ