Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বরিশাল কর অঞ্চলের ৩২২ কোটি টাকা আদায়

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গত অর্থ বছরে বরিশাল কর অঞ্চল ৩শ’ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৩২২ কোটি টাকার আয়কর আদায়ের মাধ্যমে আগের অর্থ বছরের চেয়ে ৫২.৬০ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। যা আগের অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১৫ কোটি টাকা এবং আদায়কৃত করের চেয়ে ১১১ কোটি টাকা বেশী। এর ফলে দেশের শীর্ষ প্রবৃদ্ধি সম্পন্ন অঞ্চলের মর্যাদা অর্জন করেছে বরিশাল কর অঞ্চল। গত অর্থ বছরে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার বরিশাল কর অঞ্চলে আয়কর রিটার্ন দাখিরকারীর সংখ্যাও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুন, ৫৩ হাজার ৯৩৬-এ উন্নীত হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল ২৭ হাজার ৩৯৮।
এরই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও দক্ষিণাঞ্চলে আয়কর আদায় সহ রিটার্ণ দাখিলকারীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন এনবিআর কতৃপক্ষ। আয়করকে জনবান্ধব করা সহ জনগনের কাছে নিয়ে যেতে আজ থেকে সারাদেশের মত বরিশাল বিভাগীয় সদরেও আয়কর মেলা শুরু হচ্ছে। আজ সকালে বরিশাল টাউন হলে বিভাগীয় পর্যায়ে সপ্তাহব্যাপী এ আয়কর মেলা শুরু হচ্ছে। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে এ মেলা উদ্বোধন করবেন।
২০০১-০২ অর্থ বছরে মাত্র ২৩ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের মাধ্যমে বরিশাল কর অঞ্চলের যাত্রা শুরু হলেও গত ১৩বছরে এ অঞ্চলের ৬টি জেলায় আয়কর আদায় ২৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময়কালে প্রতিটি বছরই আয়কর আদায় বাড়ছে। এমনকি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমও করছে বরিশাল কর অঞ্চল।
২০১৫-১৬ অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে ২০৭ কোটি টাকার আয়কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বরিশাল কর অঞ্চলে প্রকৃত কর আদায় আদায় হয়েছে ২১১ কোটি। গত অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা আগের বছরের চেয়ে ৯৩ কোটি বৃদ্ধি করে ৩শ’ কোটি টাকা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। কিন্তু বরিশাল কর অঞ্চলের ২৩টি সার্কেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলশ পরিশ্রমে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এযাবতকালের সর্বোচ্চ ৩২২ কোটি টাকার আয়কর আদায় সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল মহল।
তবে সারাদেশের মত বরিশাল কর অঞ্চলেও মঞ্জুরীকৃত জনবলের অর্ধেক সংখ্যক কর্মকর্তাÑকর্মচারী নিয়ে চলছে কর প্রশাসন। এখানের ২৩টি সার্কেল ও ৪টি রেঞ্জে মঞ্জুরীকৃত কর্মকর্তার অর্ধেক পদই এখন শূণ্য। ফলে কর আদায় সহ সার্বিক কার্যক্রমই ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি বরিশাল কর অঞ্চলের নিজস্ব ভবন নির্মাণের বিষয়টিও বিগত দীর্ঘদিন যাবত ঝুলে রয়েছে। ফলে ভাড়া বাড়ীতেই বরিশাল কর অঞ্চলের বেশীলভাগ সার্কেল অফিস রয়েছে। তবে অতি স¤প্রতি বরিশাল কর অঞ্চলের একটি বহুতল ভবন নির্মাণের প্রকল্পÑপ্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
তবে একাধীক করদাতা এখনো জনবান্ধব কর প্রশাসন সহ কর নীতিমালার অভাবের কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি করদাতাদের সামাজিক সুরক্ষা সহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অহেতুক হয়রানীরও অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধেও সরকারী নানা অনুষ্ঠানের অজুহাতে মাঝারি থেকে বড় করদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নানা ধরনের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণেরও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি কোন করদাতা সরকারী প্রশাসনযন্ত্রকে ‘কাঙ্খিত সহযোগীতা’ না করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকিরও অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে এনবিআর সহ আয়কর বিভাগও অনেক ক্ষেত্রে করদাতাদের প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করতে পারেন না বলে অভিযোগ রয়েছে ।
এসব কিছুর পরেও বরিশাল কর অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি যথেষ্ঠ সন্তোষজনক বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। তবে বরিশাল অঞ্চলের বেশ কিছু বৃহৎ করদাতা প্রতিষ্ঠান এখনো ঢাকাতেই কর প্রদান করছে। এসব প্রতিষ্ঠান বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে পণ্য উৎপাদন ও দেশব্যাপী বিপনন করলেও তারা আয়কর প্রদান করছে ঢাকার বিভিন্ন কর অঞ্চলে।
আজ থেকে বরিশাল কর মেলায় করদাতা সহ সেবা গ্রহীতাদের আয়কর সংক্রান্ত যেকোন ধরনের তথ্য প্রদান এবং রিটার্ণ গ্রহণ ছাড়াও এ সংক্রান্ত যেকোন সেবা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার জাহদ হাসান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ