Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগ নেতারা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন- মির্জা ফখরুল

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগ নেতারা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন অভিযোগ করে এ পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সন্ত্রাস করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবেনা। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গাড়ি বহর ন্যাক্কারজনক হামলার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দুঃখজনক। আমরা আশা করেছিলাম তিনি ওই হামলার নিন্দা জানাবেন, যারা ঘটনায় জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনবেন। কিন্তু তিনি না করে বরং ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তবে জনগণ এখন অনেক সচেতন, তারা প্রকৃত ঘটনা জানে। হামলাকারী কারা তাদের নাম ছবি মিডিয়ায় এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি দলের ক্যাডারাই এ হামলা করেছে। তবে এতে আমরা ভীত নই, সন্ত্রাসীদের কাজ সন্ত্রাস করা। আগামী দিনে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।
তিনি বলেন, ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীরাও আহত হয়েছেন। আহতদের অনেকেই এখন ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিএনপি ও অঙ্গদলের নেতাকর্মীদের গাড়ির পাশাপাশি গণমাধ্যমের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের এ বহরে নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে সরকার আশ্বস্ত করেছিল। কিন্তু তারা হামলাকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথাবার্তায় প্রতীয়মান হয় তারা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। রাজনীতিকে ধ্বংসের আরেকটি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতিকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু প্রমাণিত হয়েছে তিনি এসব জড়িত ছিলেন না। মিথ্যা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। জনগণ বুঝে গেছে, আওয়ামী লীগ সত্যকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। ক্ষমতাসীন দল রাজনীতির প্রচলিত নিয়ম, গণতন্ত্রের নর্মস ধ্বংস করে দিয়েছে।
হামলা, বাধা আর প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নির্যাতিন রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিরতণ কর্মসূচি সফল করেছেন জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা এখন যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা থেকে উখিয়া যাওয়ার পথে কোথাও কোন বক্তব্য দেননি। আমাদের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিও ছিল না। তার পরও গত চারদিনে তার গাড়ি বহরকে ঘিরে লাখে জনতার ঢল নামে। তিনি যে পথে গেছেন সে পথে জনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আবারও প্রমাণ হয়েছে এদেশে বিএনপিই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় দল এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের জনপ্রিয় নেত্রী। এত জুলুম নির্যাতন, হামলা, হামলা গুম খুনের পরও জনগণের হৃদয় থেকে বিএনপি এবং খালেদা জিয়াকে মুছে ফেলা যায়নি। বরং দেশে গণতন্ত্রহীনতার কারণে গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। জনগণ বেগম জিয়াকে তাদের আস্থার প্রতীক মনে করেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, পথের সব প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে বিএনপি চেয়ারপার্সন গতকাল উখিয়াতে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্ব ও বৈশ্বিক সংস্থাগুলোকে মিয়ানমারের উপর আরও জোরালো কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে রোহিঙ্গারা দ্রæত নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে। মানবিক কারণে খালেদা জিয়াই প্রথমে রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার তা নাকচ করে দিয়েছে। তারপরও দেশনেত্রী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সংকট মোকাবিলায় কাজ করতে বলেছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সরকারের যা করা উচিত ছিল সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে পারেনি। তিনি বলেন, বিএনপি বারবারই বলেছে- খালেদা জিয়ার এ সফরের উদ্দেশ্য মানবিক। পথে কোন সভা-সমাবেশ না করে তিনি সেটা প্রমাণও করেছেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, আপনারা দেখেছেন- পথের দুইপাশে লাখ লাখ জনতার ঢল নেমেছে। তারা শ্লোগান দিয়ে, ফুল ছিটিয়ে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, স্বাগত জানিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয়েছে তিনি এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে ক্যারিশম্যাটিক লিডার। এত অত্যাচার, নির্যাতন, বাধার পরও জনগণের পাশে দাঁড়ানো থেকে তাকে বিরত রাখা যায়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন এবং এখান থেকেও তাকে বিরত রাখা যাবে না। এসময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদসহ চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ