Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খুলনা-কলকাতা রেলপথে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’

৯ নভেম্বর উদ্বোধন : ১৬ নভেম্বর থেকে যাত্রী পরিবহন

নূরুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৭, ৮:২৫ পিএম

মৈত্রী নয়, খুলনা-কলকাতা রেলপথে চালু হচ্ছে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ট্রেন ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’। আগামী ৯ নভেম্বর ট্রেনটি উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। ওই দিন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’-এর উদ্বোধন করবেন। ১৬ নভেম্বর থেকে ট্রেনটিতে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে। রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের একজন কর্মকর্তা জানান, ৯ নভেম্বর খুলনা-কলকাতার মধ্যে বন্ধন এক্সপ্রেসটি শুভেচ্ছা যাত্রা হিসেবে চলবে। এসময় ট্রেনটিতে দু’দেশের সরকারি উচ্চ পর্যায়ের, রেলের ও টেকনিক্যাল কমিটির কর্মকর্তারা থাকবেন। খুলনা-কলকাতা রেলপথে নতুন এই ট্রেন চালুর মাধ্যমে অর্ধশত বছর পর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। তবে ঢাকা-কলকাতা রেলপথে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রাপথে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের নামে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। নতুন ট্রেন বন্ধনে যাতে সেরকম ঝামেলা না হয় সে দাবি দক্ষিণাঞ্চলবাসীর। গতকাল টেলিফোনে বরিশাল থেকে একজন ভুক্তভোগী বলেন, খুলনা থেকে কলকাতা যেতে মাত্র ৪ ঘণ্টা সময় লাগার কথা। ইমিগ্রেশনের নামে সেটা যাতে ১০ ঘণ্টা না হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন খুলনা-কলকাতা রেলপথে সরাসরি ট্রেন সার্ভিস। খুলনা থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ১৮০ কিলোমিটার। ট্রেনে এ দূরত্ব ভ্রমণে খুব বেশি সময় লাগবে না। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে একাধিকবার ট্রেনটি চলাচলের সময় নির্ধারণ করা হলেও খুলনা আধুনিক রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান মঙ্গলবার ইনকিলাবকে বলেন, মৈত্রী নয়- নতুন ট্রেনের নাম ঠিক করা হয়েছে বন্ধন এক্সপ্রেস। এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতিও শেষ। এখন শুধু উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষা। রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বন্ধন এক্সপ্রেস ভারতের ইস্টার্ন রেলওয়ের ট্রেন। বাংলাদেশের কোনও ট্রেন আপাতত এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে না। এ বিষয়ে পরবর্তীতে দু’দেশের রেলওয়ের কর্মকর্তারা বসে ঠিক করবেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহে একদিন শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার চলাচল করবে। ওইদিন শিয়ালদহ রেল স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে রওনা দিয়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে বাংলাদেশের বেনাপোল রেলস্টেশনে পৌঁছাবে। সেখান থেকে যাত্রা করে দুপুর ১২টায় ট্রেনটি খুলনা রেলস্টেশনে আসবে। পরে বেলা ২টায় আবার কলকাতার উদ্দেশে খুলনা ছেড়ে যাবে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-কলকাতা রেলপথের মৈত্রীর মতো বন্ধনেও কোচ থাকবে ১০টি। এর মধ্যে চারটি এসি চেয়ার কোচ ও চারটি এসি বার্থ কোচ। সব মিলে বন্ধনের মোট আসন সংখ্যা ৪৫৬। বাকী দুটি পাওয়ার কার। যাত্রীবাহী কোচের সবগুলোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এসি চেয়ারে আসন ৩১২টি আর এসি কেবিনে ১৪৪টি। ঢাকা-কলকাতা ৫৮০ কিলোমিটার রেলপথে চলাচলকারী মৈত্রীর ভাড়া অনুযায়ী বন্ধনের ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। তবে ভাড়ার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মে কলকাতার ফেয়ারলি হাউজে বাংলাদেশ ও ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের তিনদিনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি ছিলেন। ভারতের পক্ষে ছিলেন ইন্ডিয়ান রেলওয়ের ১৫ সদস্য। ওই বৈঠকেই খুলনা-কলকাতা রেলপথে নতুন একটি ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেলপথ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ