Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ছে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন

আনোয়ারায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেরোমন ফাঁদ

জাহেদুল হক,আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিষমুক্ত শাকসবজিসহ ফসল চাষে সেক্স ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ফাঁদ ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন অর্থ ও সময় সাশ্রয় হচ্ছে অন্যদিকে বিষমুক্ত শাকসবজি ও বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বাড়ছে।
চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১ ইউনিয়নে জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্পের (এনএটিপি) আওতায় শাকসবজি ও বিভিন্ন ফসলে মাছি জাতীয় ক্ষতিকর পোকা দমনে এ ফাঁদ ব্যবহার বৃদ্ধি করতে কমন ইনট্র্যাষ্ট গ্রæপ (সিআইজি) কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। অনেক কৃষককে বিনামূল্যে সেক্স ফেরোমন ফাঁদের ট্র্যাপ দেয়া হয়েছে। নামেমাত্র ব্যয়ে তৈরি করা সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারে সুফল পাওয়ায় রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে এ ফাঁদে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
জানা যায়,স্ত্রী পোকার গায়ের গন্ধের অনুরূপ জৈবিক পদার্থ দিয়ে তৈরি এ ফাঁদে পুরুষ পোকা আকৃষ্ট হয়ে এসে সাবান বা কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে পড়ে মারা যায়। ফলে কৃষকের অর্থ ও সময় বেঁচে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে বিষমুক্ত শাকসবজি উৎপাদন বাড়ছে। উৎপাদন ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে ফসলি জমি। রক্ষা হচ্ছে পরিবেশ। ভোক্তারা পাচ্ছেন নিরাপদ শাকসবজি।
সরেজমিন উপজেলার জুঁইদন্ডী গ্রামের ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বেগুন, শিম, টমেটো, বরবটি, কুমড়া, লাউ, ঝিঙ্গাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ঝুলছে। দুয়েক বছর আগেও এসব ফসলের ক্ষেতে উচ্চমূল্যের কীটনাশক ব্যবহারে কৃষক অপেক্ষাকৃত কম লাভ পেতেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে বর্তমানে ওইসব ক্ষেতে ক্ষতিকর কীটনাশক ছেড়ে সেক্স ফেরোমন ব্যবহার করায় কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছেন।
এলাকার কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তারা দুই বছর ধরে ফসলে পোকা দমনে কীটনাশক ছেড়ে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করছেন। অনেক সময় বেশি দামের কীটনাশক কাজে আসতো না। কিন্তু ফেরোমন ফাঁদ সবজি চাষে ক্ষতিকর পোকা দমনে শতভাগ কাজে আসায় তারা লাভবান হয়েছেন। তাদের সুফল দেখে অন্যান্য কৃষকরাও ফেরোমন ফাঁদে ঝুকছেন। আবার অনেকেই নতুন করে এ ফাঁদ ব্যবহার শুরু করেছেন। জুঁইদন্ডী বেড়িবাঁধ এলাকার কৃষক আবছার উদ্দিন জানান, বেগুন ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারের ফলে বছরে অন্তত ১৫-২০ হাজার টাকা কীটনাশক খরচ কমেছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরাম উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, উপজেলার প্রতিটি গ্রামেই কমবেশি ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ফাঁদের ব্যবহার আরো বাড়ানোর জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাতে করে বিভিন্ন জাতের উন্নত ফসল ও প্রযুক্তির সঙ্গে কৃষকদের পরিচয় ঘটানো সম্ভব হচ্ছে। ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করে আধুনিক প্রযুক্তির দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে কৃষকরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ