Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নিষিদ্ধ সময়ের পরও জেলেদের জালে মা-ইলিশ

প্রজনন মৌসুম একমাস করা না হলে ইলিশ সংরক্ষণ ও উৎপাদন ব্যাহতের আশঙ্কা

নরসিংদী থেকে সরকার আদম আলী | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

২২ দিন সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর বাজারে নতুন করে ইলিশ মাছ আমদানি শুরু হয়েছে। নতুন করে শিকার করা এসব ইলিশের মধ্যে বেশির ভাগ ইলিশের পেটেই ডিম রয়েছে। অনেক ইলিশের পেটে অর্ধেক ডিম রয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো ইলিশ ডিম ছাড়া অবস্থায়ই ধরা পড়েছে। ছোট ইলিশ বা ১১ ইঞ্চির ইলিশের পেটেও ডিম ভর্তি রয়েছে। ডিমওয়ালা ইলিশ সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিম দিয়ে শেষ করতে পারেনি। সচেতন জেলেরা বলেছেন, ডিম ছাড়ার জন্য ২২ দিন প্রজনন মৌসুম যথেষ্ট নয়। ডিমওয়ালা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময় আরো অন্তত আটদিন বাড়ানো প্রয়োজন। অর্থাৎ পুরো অক্টোবর মাসকে প্রজনন মৌসুম ঘোষণা করে ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হলে ইলিশ সংরক্ষণ তথা ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির সরকারি প্রচেষ্টা সফল হবে।
দেশে ইলিশ মাছের চাহিদা কত তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান খোঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বেসরকারি হিসাব মতে, জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত ইলিশ ধরার মৌসুম গণ্য করা হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার যদি বাঙালিদের ছয়মাস ইলিশ খাওয়াতে চায় এবং দৈনিক মাথাপিছু যদি ১০০ গ্রাম ইলিশের চাহিদা ধরা হয় তবে মোট ১৬ কোটি জনসংখ্যার এক বছর বয়সী শিশু বাদ দিয়ে ১৩ কোটি ৮২ লাখ মানুষের জন্য ছয় মাসে ইলিশের প্রয়োজন হবে ২৪ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। এ ক্ষেত্রে দেশে ইলিশ উৎপাদনে সর্বশেষ রেকর্ড রয়েছে তিন লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন। এই হিসাবে ইলিশের উৎপাদন ঘাটতি রয়েছে ২০ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন। বিপুল পরিমাণ এই ইলিশের ঘাটতি পূরণ করার ক্ষেত্র ও সম্ভাবনা রয়েছে দেশের জলসীমায়।
মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি ইলিশ সর্বনিম্ন দেড় লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা নিধন বন্ধ রাখলে বছরে দেশের নদ-নদীতে ২১ থেকে ২৪ হাজার কোটি নতুন ইলিশ উৎপাদিত হবে। এই হিসেবে ১৬ কোটি মানুষের প্রতি জনের মাথাপিছু ইলিশ প্রাপ্তির সংখ্যা দাঁড়াবে এক হাজার ৭৩৬টি। ডিমওয়ালা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়সীমা যদি এক মাস নির্ধারণ করা হয়, তাহলে ইলিশের উৎপাদন আরো অন্তত আট হাজার কোটি টন বেড়ে যাবে। জাটকা ধরার নিষিদ্ধ সময় যদি আরো দুই মাস বাড়িয়ে দেয়া হয়, তা হলে ইলিশের সংখ্যা মোট উৎপাদনের আরো এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পাবে। এ ক্ষেত্রে দেশে ইলিশের কোনো সঙ্কটই থাকবে না। সরকার যদি বছরে আট লাখ টন ইলিশ রফতানি করে তবুও ইলিশের কোনো ঘাটতি হবে না। উপরন্তু দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশের হার ১১ শতাংশ থেকে বেড়ে তা দ্বিগুন হয়ে যাবে। জিডিপিতেও ইলিশের অবদান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। ইলিশ উৎপাদন, পরিবহন, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং রফতানি কাজের সাথে জন সম্পৃক্ততা ২৫ লাখ থেকে বেড়ে কম-বেশি এক কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। ইলিশ রফতানির আয় ৩০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হাজার কোটি টাকায় গিয়ে পৌঁছবে।



 

Show all comments
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৭:৫২ পিএম says : 0
    এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেনami jantechai ilish dhora nishad koto tarik thaika
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ