Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩০০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া ব্যাহত : গাজনা প্রাইমারি স্কুলে পানি

স্কুলমাঠ ভরাটের অর্থ আত্মসাৎ : হাজার বিঘা জমির আমন বিনষ্ট

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) থেকে আব্দুল হামিদ | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাঠ ভরাটে বরাদ্দকৃত দুই লাখ টাকার বেশির ভাগ আত্মসাত এবং পানি নিষ্কাশন খালের মুখ বেঁধে মাছ চাষ করায় কলারোয়া গাজনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে ডুবে ৩০০ শিক্ষার্থীর লেখাপড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আর চলতি মৌসুমে চাষিদের প্রায় দুই কোটি টাকার হাজার বিঘা জমির ফসলহানী ঘটেছে।
জানা যায়, প্রতি বছর স্কুলমাঠ পানিতে ডুবে বিদ্যালয়ের ও লেখাপড়ার পরিবেশ মারাত্মক ব্যাহত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে কলারোয়া-তালার এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রথম পর্যায়ের কাবিটা প্রকল্পে গাজনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ করে। বর্ষা মৌসুমের অনেক আগে ৩১ মার্চ জেলা সমন্বয় সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। বিদ্যালয়ের মোট ৩৭ শতাংশ জমির মধ্যে প্রায় চার শতাংশ জমিতে বিদ্যালয় ভবন অবস্থিত। বিদ্যালয় ভবন বাদে বাকি একবিঘা জমিতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে মাত্র একফুট উঁচু করে মাটি দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয় বলে শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়। কিন্তু স্কুলমাঠে এলো মাটি দেয়ায় বর্ষার পানিতে এক ফুট উচ্চতার মাটি অর্ধ ফুটে নেমে আসে। মাঠে সঠিকভাবে মাটি না দেয়ায় স্কুলমাঠ বরাবরের মতো ডুবে যাওয়ার বিষয়টি প্রায় অবধারিত হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে কপোতাক্ষ নদ খননের পরে স্কুল সংলগ্ন বিল বা খাল ডুবে থাকার কথা নয়। কারণ গাজনা, ক্ষেত্রপাড়া ও বসন্তপুর বিলের চেয়ে কপোতাক্ষ নদের পানির স্তর সাত-আট ফুট নিচে বলে চাষিরা জানান। ফলে এ বছর বিলে প্রায় হাজার বিঘা জমিতে আমন চাষ হয়। কিন্তু গাজনা প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি স্থানীয় ইউপি, চেয়ারম্যানসহ কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি কপোতাক্ষের সঙ্গে এই বিলের সংযোগ খালের মুখে বাঁধ দিয়ে বরাবরের মতো এবারো মাছ চাষ করেছেন। ফলে পানি নিষ্কাশনে অভাবে অনেক আগেই গাজনা, ক্ষেত্রপাড়া ও বসন্তপুরের মধ্যবর্তী বিল ডুবে চাষিদের প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের হাজার বিঘা জমির ধান পচে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কিন্তু এসময় স্কুলমাঠে পানি প্রবেশ করলেও বিদ্যালয় ভবনে পানি প্রবেশ করতে পারেনি। কিন্তু অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি নিম্নচাপজনিত প্রবল বর্ষণে ভবনে পানি প্রবেশ করে। গত ২০ ও ২১ অক্টোবর নিম্নচাপজনিত দ্বিতীয় বর্ষণে অবস্থার আরো অবনতি ঘটে। ফলে সপ্তাহকাল রাস্তার উপর ক্লাস নেয়া হয়েছে। আর এ সময় সুযোগ পেলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মাঠের পানিতে ডুবসাঁতার খেলায় মেতে উঠেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকবর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এদিকে অভিযোগ পেয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন গত ১৯ অক্টোবর ২৩ অক্টোবর দুই দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘেরমালিক ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে পানি নিষ্কাশনের আদেশ দিলেও সংশ্লিষ্টরা গড়িমসি করে কালক্ষেপণ করছেন বলে গাজনা স্কুলশিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ