Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রায়পুরা সমবায় সমিতির পুকুর ভরাট করে জমি বিক্রির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : পরিবেশ আইন ভঙ্গ করে জলাশয় (পুকুর) ভরাট করে জনগণের কষ্টার্জিত ভূ-সম্পত্তি অবাধে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ভূ-সম্পত্তির মালিক হচ্ছে রায়পুরা কেন্দ্রীয় বহুমুখী সমবায় সমিতি লি:’র সাধারণ সদস্যরা। বিক্রি করে দিচ্ছে সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা। জমি বিক্রি করা হচ্ছে এক দামে। আর হিসেব দেখানো হচ্ছে ভিন্ন দামে। জমি বিক্রির বেশীরভাগ টাকাই যাচ্ছে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পকেটে। অভিযোগে জানা গেছে, রায়পুরা উপজেলার রায়পুরা মৌজার শ্রীরামপুর বাজার এলাকার থানা সংলগ্ন স্থানে ৭৩ শতাংশের একটি গভীর পুকুর ছিল। যা আরএস দাগ নম্বার ১৮০২। পাকিস্তান শাসনামলে এই পুকুরটি ক্রয় করেছিলেন তৎকালীন রায়পুরা সেন্টাল কো-অপারেটিভের সেক্রেটারী মৌলভী মজিবুর রহমান। সমিতির আয় বৃদ্ধির জন্য এ পুকুরে বহুবার মাছ চাষ করা হয়েছে। কিন্তু সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০ ভঙ্গ করে পুকুরটিতে বালু ভরাট করে ২১ শতাংশ জমি বিক্রি করে দিয়েছে। জমি বিক্রি করা হয়েছে ৭ লাখ টাকা শতাংশ দরে। আর হিসেব দেখানো হয়েছে ২ লাখ টাকা দরে। এ ক্ষেত্রে এক কোটি ৫ লাখ টাকা চলে গেছে অসাধু কর্মকর্তাদের পকেটে। এ জমি বিক্রির জন্য সমবায় বিভাগের কোন অনুমতি নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে সাধারণ সদস্যরা। এর আগে একই দাগের ৫২ শতাংশ পুকুর মাটি ভরাট করে বিক্রি করে দেয় সমিতির কর্মকর্তারা। তখন জমি বিক্রি করা হয়েছে ৯০ হাজার টাকা দরে। কিন্তু হিসেব দেখানো হয়েছে ৩০ হাজার টাকা শতাংশ দরে। এ ক্ষেত্রে ৩১ লক্ষাধিক টাকা অসাধু কর্মকর্তাদের পকেটে চলে যায়। সমিতির সদস্যরা জানায়, তৎকালে জমি বিক্রি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় যে, সমিতির মালিকানাধীন ঘোড়াদিয়া গ্রামে কোল্ডস্টোরেজে বকেয়া টাকা পরিশোধ করার জন্য জমি বিক্রি করা হচ্ছে। সে সময় জমি বিক্রি করার পরও পূনরায় সমবায় বিভাগের কোন অনুমতি ছাড়া পূনরায় ২১ শতাংশ জমি বিক্রি করার কোন কারণ নেই। শুধু মাত্র সমিতির অসাধু ব্যক্তিরা নিজেদের লাভের জন্য সমিতির সাধারণ সদস্যদের কস্টার্জিত ভূ-সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে। তারা আরো জানিয়েছে, ৫২ শতাংশ জমি বিক্রি করা হয়েছিল জনৈকা সামসুন্নাহারের নিকট। তিনি কিছুদিন পূর্বে সেই জায়গা বিক্রি করেছেন ৮ লাখ টাকা শতাংশ দরে। পাশাপাশি একই দাগের জায়গা সমিতির কর্মকর্তারা বিক্রি দেখিয়েছে মাত্র ২ লাখ টাকা দরে। অর্থাৎ পার্শবতী জমি বিক্রি হয়েছে ৮ লাখ টাকা দরে, আর সমিতির জমি বিক্রি হয়েছে ২ লাখ টাকা দরে। এসব ঘটনা নিয়ে রায়পুরা কেন্দ্রীয় সমবায় শিল্প সমিতির সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা এই দুর্নীতির জরুরী তদন্ত দাবী করেছেন।
এছাড়া সমিতির আভ্যন্তরে বহুমুখী দুর্নীতি দানা বেধেছে বলে অভিযোগ করেছেন সমিতির সাধারণ সদস্যরা। তারা সমবায় বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদেরকে এসব দুর্নীতির তদন্ত করে দোষী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন। এব্যাপারে সমিতির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ইরানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি বিক্রির ঘটনা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, জমি বিক্রি করা হয়েছে, তবে আমি এর কোন দায়দায়িত্বে নেই। আমি জমি বিক্রির সাথে একমত ছিলাম না। কি কারণে বিক্রি করা হয়েছে তাও জানিনা। তবে অন্যান্য কর্মকর্তারা জানিয়েছে জমির দখল তাদের হাতে না থাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

 



 

Show all comments

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ